বিরাট মন্দির। এবং তা দেখতে প্রতি দিন উপচে পড়ছে ভিড়। কিন্তু মূল বিগ্রহের সামনে একটিই মাত্র প্রণামীবাক্স। ভিড়ের ঠেলায় অনেকেই পৌঁছোতে পারছেন না সেই পর্যন্ত। এক পক্ষকালের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের জন্য আরও ১০টি প্রণামীবাক্স তৈরি করার বরাত দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। আনন্দবাজার ডট কম-কে সে খবর দিয়েছেন দিঘার জগন্নাথধাম ট্রাস্টের অন্যতম সদস্য তথা ইস্কন কলকাতার ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস।
আরও পড়ুন:
গত ৩০ এপ্রিল অক্ষয়তৃতীয়ার দিন দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই দিন বিকাল থেকেই জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছিল মন্দিরের দ্বার। তার পর থেকে প্রতি দিনই বিপুল ভিড় হচ্ছে মন্দিরে। প্রথম চার দিনেই দর্শনার্থীর সংখ্যা ১০ লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছিল। ১৫ দিনে প্রণামীর পরিমাণ ছাড়াল ৯ লক্ষ টাকা।
রাধারমণ বলেন, ‘‘প্রতি মঙ্গলবার প্রণামীর বাক্সের অর্থ গোনা হচ্ছে। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ওই অর্থের পরিমাণ হয়েছে ৯ লক্ষ টাকার কিছু বেশি।’’ মন্দির দর্শনে গিয়ে দর্শনার্থীরা বাক্সে যে পরিমাণ প্রণামী দিচ্ছেন, তা গুনতে বিপুল সময় যাচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে। সূত্রের খবর, গত মঙ্গলবার দুপুর ১টার সময়ে প্রণামী গণনা শুরু হয়েছিল। শেষ হয় রাত্রি ৮টায়। টানা ৭ ঘণ্টা ধরে চলে ওই প্রক্রিয়া। রাধারমণ জানিয়েছেন, বিপুল পরিমাণ কয়েন পড়ছে প্রণামীর বাক্সে। গত মঙ্গলবার গণনা করতে গিয়ে দেখা যায়, ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা শুধু মুদ্রাতেই উঠেছে। তা ছাড়াও প্রণামীর বাক্সে পড়ছে বিপুল পরিমাণ ১০টাকা এবং ২০ টাকার নোট। সাধারণ কার্যপ্রণালী (এসওপি) মেনেই প্রণামীবাক্সের অর্থ গোনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাধারমণ। টাকা গোনার সমগ্র প্রক্রিয়া হচ্ছে সিসিটিভি-র নজরদারিতে। উপস্থিত থাকছেন প্রশাসনিক আধিকারিক, ব্যাঙ্কের কর্মচারী, ইস্কনের তরফে কোনও সন্ন্যাসী এবং নির্দিষ্ট সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক। মন্দির কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ‘‘ভিড়ের জন্য হাজার হাজার মানুষ প্রণামীবাক্সের সামনে পৌঁছোতেই পারছেন না। সে কারণেই আরও ১০টি বাক্স তৈরি করতে দেওয়া হয়েছে।’’ স্টেনলেস স্টিল দিয়ে তৈরি হবে ওই বাক্সগুলি। প্রতিটি বাক্সে থাকবে দু’টি করে তালা। সেই বাক্সগুলি রাখা হবে মন্দিরের বিভিন্ন অংশে। যাতে সকলেই প্রণামী দিতে পারেন। তার চাবি যাঁদের কাছে থাকবে, তাঁদেরও ডিউটি থাকবে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য।
আরও পড়ুন:
দিঘার মন্দিরে ভিড় সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ এবং সিভিক ভলান্টিয়ারদের। ইতিমধ্যেই রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তক্রমে জেলা পুলিশ শুধু দিঘার মন্দিরের জন্য ১০০ জন ভলান্টিয়ার নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। বাইরের কেউ নন, রামনগর বা দিঘা কোস্টাল থানা এলাকার বাসিন্দারাই ওই কাজের জন্য আবেদন করতে পারবেন।