বৈঠক ডেকেছিলেন রাজ্যপাল তথা রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য সিভি আনন্দ বোস। ডাকা হয়েছিল রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে। কিন্তু ৩৬ জন উপাচার্যের মধ্যে বৈঠকে হাজির থাকলেন স্রেফ ন’জন। গরহাজির ২৭। ঘটনাচক্রে, তাঁদের অধিকাংশকে রাজ্যপাল বোসই নিয়োগ করেছিলেন।
রাজভবন সূত্রে খবর, বোসের বৈঠকে যে ন’জন ছিলেন, তাঁদের মধ্যে দু’জন স্থায়ী উপাচার্য। বাকি সাত জন অস্থায়ী উপাচার্য। অর্থাৎ, যাঁদের বোস নিয়োগ করেছিলেন। স্থায়ী উপাচার্যদের মধ্যে ছিলেন বারাসত বিশ্ববিদ্যালয়ের সোনালী চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যায়ের দীপক কর। ন’জন অস্থায়ী উপাচার্যের মধ্যে ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তা দত্ত দে।
রাজভবন সূত্রে খবর, আচার্য বৈঠক ডাকা সত্ত্বেও যে সকল উপাচার্য বৈঠকে এলেন না, তাঁদের কাছে ব্যাখ্যা চাওয়া হবে। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে তাঁদের রাজভবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হবে বলেই জানিয়েছে রাজভবনের সূত্র। ওই সূত্র আরও জানিয়েছে, বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টেও জানানো হবে। উপাচার্যেরা কার কথা শুনে চলবেন, রাজ্যপাল না রাজ্য সরকার— তা স্পষ্ট করতে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন আচার্য।
এ বিষয়ে অনুপস্থিত উপাচার্যদের অনেকেই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। বৈঠকে ছিলেন না বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শঙ্কর নাথ। তিনি বলেন, ‘‘শুক্রবার থেকে ছাত্রছাত্রীরা আমায় ঘেরাও করে রেখেছে। তাই বৈঠকে থাকতে পারিনি আমি।’’ বাকিদের তরফে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা না মিললেও, একটি অসমর্থিত সূত্রের বক্তব্য, তাঁরা রাজ্যের উচ্চ শিক্ষা দফতরের অনুমতি পাননি। আচার্যের ক্ষমতা খর্ব করে বিধানসভায় ২০১৯ সালে একটি বিল পাশ হয়েছিল। সেই বিল অনুযায়ী, উপাচার্যদের সরাসরি বার্তা পাঠাতে পারবেন না আচার্য। বার্তা পাঠাতে হলে উচ্চ শিক্ষা দফতর মারফতই পাঠাতে হবে। এ ক্ষেত্রে তেমনটা ঘটেনি। বৈঠক নিয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতরকে কিছু জানানো হয়নি। সেই কারণেই অনেকেই যাননি বৈঠকে। যদিও এই দাবির আনুষ্ঠানিক সমর্থন মেলেনি কোনও পক্ষের থেকে।
রাজভবন সূত্রে খবর, বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের পদোন্নতি আটকে রাখা যাবে না। রাজ্য সরকারের ‘অনুমতি’র অপেক্ষা না করে নিয়ম মেনেই তাঁদের পদোন্নতি করতে হবে বলে উপাচার্যদের জানিয়ে দিয়েছেন আচার্য। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী পদে দ্রুত নিয়োগ করার কথাও বলেছেন বোস। আচার্যের নির্দেশ, ভর্তির প্রক্রিয়াও যেন নিয়মমাফিক, সুষ্ঠু ভাবে হয়।