অসহায়: রিনা দত্ত। নিজস্ব চিত্র
বেসরকারি হাসপাতালের গাফিলতি আর আকাশছোঁয়া ফি হাঁকার প্রবণতা রুখতে মুখ্যমন্ত্রী নতুন বিল পাশ করিয়েছেন। কিন্তু গাফিলতির অভিযোগ কী ভাবে ধামাচাপা পড়ে, সেই নজিরও এ বার সামনে আসছে।
গত শুক্রবার যখন বিধানসভায় নতুন ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট বিল পেশ হচ্ছে, তখন স্বাস্থ্যভবনে ডেপুটি ডিরেক্টর (মেডিক্যাল এডুকেশন) সর্বাণী চট্টোপাধ্যায়ের কাছে হাজির হয়েছিলেন সন্তানহারা এক মা, লেক গার্ডেন্সের বাসিন্দা রিনা দত্ত।
বাইপাস সংলগ্ন এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে তদন্তের কী হল, জানতে চেয়েছিলেন রিনাদেবী। দেড় বছর আগে ছেলের মৃত্যুর তদন্ত শুরু হলেও রিনাদেবী শুনে এসেছেন তদন্ত রিপোর্টের কোনও হদিস নেই।
২০১৫ সালে অস্ত্রোপচারের পরে রিনাদেবীর ছেলে অর্ণবের মাথার খুলির একটি অংশ হাসপাতাল হারিয়ে ফেলেছিল বলে অভিযোগ। ২০১৫-র ২৪ জুলাই আরজিকরের তিন ডাক্তারকে নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য ভবন। ১৫ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়। সেই রিপোর্ট আর জানা যায়নি। ঘুরে ঘুরে হাল ছেড়ে দিয়েছিলেন রিনা। মুখ্যমন্ত্রী সরব হয়েছেন জেনে শুক্রবার তিনি সরাসরি হাজির হন স্বাস্থ্য ভবনে।
স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তার অফিসে জমা দেওয়া চিঠিতে রিনা লিখেছেন, ‘নতুন করে যতই আইন হোক না কেন, স্বাস্থ্যকর্তারা যদি সেই আইন কার্যকর করতে সহযোগিতা না-করেন তা হলে মানুষ সুবিচার পাবে না।’
রিনার দাবি, ‘‘সর্বাণী আমাকে হেলথ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বিভাগে খোঁজ নিতে পাঠান। সেখানে অফিসার বলেন, চিঠি দিয়ে তাড়া দেওয়া সত্ত্বেও আরজিকর রিপোর্ট দিচ্ছে না। আমাকে নবান্নে যেতে বলা হয়।’’ কিন্তু তদন্ত কমিটির প্রধান, আরজিকর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যালের দাবি, ‘‘তদন্ত রিপোর্ট অনেক দিন পাঠিয়ে দিয়েছি। তারিখটা মনে পড়ছে না।’’ তা হলে? স্বাস্থ্য-অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথীর আশ্বাস, ‘‘আরজিকর থেকে বিশদ তথ্য চাওয়া হয়েছে। কেন এমন হল সেই ব্যাখ্যাও দিতে হবে।’’ কিন্তু বিচার পেতে আর কত দিন, জবাব এখনও পাননি পুত্রহারা মা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy