একই দিনে মহরমের মিছিল আর দুর্গাপুজোর বিসর্জন নিয়ে টানাপড়েনের মাঝে অন্য রকম বার্তা দিল বীরভূমের সদর শহর সিউড়ি।
সিউড়ি সদরের ১৬টির মধ্যে ১৫টি মহরম কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, মহরমের দিন (১ অক্টোবর) অস্ত্র ছাড়া মিছিল করা হবে। এমন উদ্যোগ সফল করতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম এবং মহরম কমিটির কর্মকর্তারা।
মহরমের জন্য একাদশীতে দুর্গা বিসর্জন কেন বন্ধ থাকবে, তা নিয়ে বিতর্কের জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। সিউড়ি সেখানে অন্য রকম ভাবছে কোন যুক্তিতে?
প্রশাসনের কর্তারা জানাচ্ছেন, গত বছর তাজিয়া, বাজনা, লাঠি বা তরোয়াল খেলা ছাড়া মহরমের মিছিল করে সিউড়ির ‘কাটাবুনি যুবকল্যাণ মহরম কমিটি’। এ বার সেটাই বড় প্রেক্ষাপটে করতে চাইছে সংখ্যাগরিষ্ঠ মহরম কমিটিগুলো। যে কমিটি এ ব্যাপারে এখনও সিদ্ধান্ত জানায়নি, তারাও পরে সহমত হবে বলে আশাবাদী অন্যেরা।
ফি বছর দুর্গাপুজো, মহরমের আগে সমন্বয় কমিটি গড়ে সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্য বজায় রাখতে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। সম্প্রতি তেমনই এক সভায় শহরের ১৬টি মহরম কমিটির কাছে কাটাবুনির আদলে অস্ত্র ছাড়া মিছিল করার প্রস্তাব রাখা হয়। বৈঠকে ছিলেন ৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর কাজী ফরজুদ্দিন, তৃণমূলের জেলা সংখ্যালঘু সেলের সভাপতি নুরুল ইসলাম, প্রাক্তন কাউন্সিলর মাসুদার রহমান, ২৫টি মসজিদের ইমাম এবং বিদ্বজ্জনেরা। নুরুল ইসলাম বলেন, ‘‘সম্প্রীতি বিঘ্নিত হয় আমরা এমন সম্ভাবনা তৈরির বিরুদ্ধে। তাই একটি কমিটি বাদে সহমতের ভিত্তিতে মহরমে অস্ত্রহীন মিছিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
সিউড়ি পুলিশ লাইন মসজিদের ইমাম মুফতি নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘শোক পালনের জন্যই মহরম। অস্ত্র নিয়ে মিছিল শোকপালনের পদ্ধতি নয়। তাই অস্ত্র ছাড়া মিছিল হবে।’’ সোনাতোড়পাড়া মসজিদের ইমাম নুর আলম, কাটাবুনি মসজিদের ইমাম নুর মহম্মদেরা এমন প্রস্তাবকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। সিউড়িতে এই ধারার যারা পথ-প্রদর্শক, সেই ‘কাটাবুনি মহরম কমিটি’র সম্পাদক হিরা খান অস্ত্র ছাড়া মিছিলের সিদ্ধান্তে খুশি। ‘লালকুঠিপাড়া মহরম কমিটি’র পক্ষে কাজি সেলিম, ‘সোনাতোড়পাড়া মহরম কমিটি’র রাজিবুল ইসলামদের বক্তব্য, ‘‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি যাতে তৈরি না হয়, আমরা সেটাই চাইছি।’’
জেলা প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, ‘‘এমন ভাবনা অবশ্যই স্বাগত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy