Advertisement
E-Paper

মুকুল অনুগামীরা আজ নির্বাচন কমিশনে

দলের নামের মালিকানা নিয়ে চলছে অভিনব দ্বৈরথ। টানাটানিটা চলছে প্রকাশ্যেই। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়, দু’জনেই বসে পিছনের আসনে। কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রোমোশন কন্ট্রোলার জেনারেল পেটেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস’ দফতরে-এ গত জুলাই মাসে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৪

দলের নামের মালিকানা নিয়ে চলছে অভিনব দ্বৈরথ। টানাটানিটা চলছে প্রকাশ্যেই। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুকুল রায়, দু’জনেই বসে পিছনের আসনে।

কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল পলিসি অ্যান্ড প্রোমোশন কন্ট্রোলার জেনারেল পেটেন্টস ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেড মার্কস’ দফতরে-এ গত জুলাই মাসে একটি আবেদন জানিয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে ‘অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস’ নাম এবং প্রতীকের ‘পেটেন্ট’ দাবি করেছেন অভিষেক। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এর কিছু পরেই মুকুলবাবুর পরিকল্পিত নতুন দলটির পক্ষ থেকে ওই একই দফতরে একটি চিঠি দেওয়া হয়। জানতে চাওয়া হয়, ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’— প্রস্তাবিত রাজনৈতিক দলের এই নামের বৈধতা নিয়ে কোথাও কোনও সমস্যা আছে কি না। রাজনৈতিক সূত্রের খবর, মন্ত্রক থেকে মুকুল শিবিরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে মমতার তৃণমূল এবং মুকুলের পরিকল্পিত দলের নামের মধ্যে স্বার্থের কোনও সংঘাত (কনফ্লিক্টস অব ইন্টারেস্ট) নেই।

যদিও ইতিমধ্যেই তৃণমূলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস’ নামটি নিয়ে আপত্তি জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মুকুলবাবুর কয়েক জন অনুগামী কাল নির্বাচন কমিশনের কাছে গিয়ে আবেদন জানাবেন, যাতে ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’ নামটি দ্রুত নথিভুক্ত করা হয়। অতীতের উদাহরণ তুলে মুকুল শিবিরের বক্তব্য, নামটি নিয়ে আপত্তি করার কোনও যুক্তিগ্রাহ্য কারণই নেই কমিশনের।

মুকুল-অনুগামীদের যে দলটি কাল নির্বাচন কমিশনের কাছে যাবে, তার নেতৃত্ব দিচ্ছেন সল্টলেকের বাসিন্দা অমিতাভ মজুমদার। পেশায় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। আজই তাঁরা সদলবল কলকাতা থেকে দিল্লি চলে এসেছেন। খাতায়-কলমে মুকুল রায় কোথাও নেই, কিন্তু এখানে তাঁর ১৮১ সাউথ অ্যাভিনিউয়ের বাড়িই হয়ে উঠেছে নতুন জন্ম নিতে চলা দলটির অস্থায়ী অফিস। এসেছেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা প্রদীপ ঘোষ, সাসপেন্ড হওয়া তৃণমূল বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত। আগামিকাল নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্তার সঙ্গে দেখা করার পরে সাংবাদিক বৈঠকও করার কথা তাঁদের।

গোটা পর্বে মুকুল থাকছেন নেপথ্যেই। নতুন দল গড়ার তোড়জোড় শুরু করে দিলেও নিজেকে এখনও তিনি তৃণমূলের ‘পিছনের সারিতে বসা সাংসদ’ হিসেবে চিহ্নিত করতেই স্বচ্ছন্দ বোধ করছেন। প্রস্তাবিত ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’-র প্রসঙ্গে মুখ খুললেও সেটিকে অমিতাভবাবুর দল হিসেবে উল্লেখ করছেন।

প্রশ্ন উঠছে, দলের নামে ‘তৃণমূল কংগ্রেস’ শব্দবন্ধটি রাখা নিয়ে কেন এই টানাটানি? কী বলছে্ন মুকুলবাবু নিজে? কোনও রকম রাজনৈতিক হিসেব-নিকেশে না গিয়ে তিনি সামনে রাখছেন কিছু দৃষ্টান্ত। তাঁর বক্তব্য, ভারতীয় রাজনীতিতে একটি নাম ভেঙে নতুন দল তৈরির অনেক দৃষ্টান্ত রয়েছে। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের পর কংগ্রেস(আই), বাংলা কংগ্রেস, তামিল মানিলা কংগ্রেসের মতো অজস্র দল তৈরি হয়েছে। সিপিআই এবং সিপিএম, জনতা পার্টি, ভারতীয় জনতা পার্টি, সংষুক্ত জনতা দল— উদাহরণের কোনও অভাব নেই।

তাই যদি হয়, তবে গোপন সূত্রে অভিষেকের আবেদনের খবর পেয়েই মুকুলবাবুকে কেন তড়িঘড়ি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হল? কেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের কাছে জানতে চাইতে হল, আপত্তি রয়েছে কি না? রাজনৈতিক সূত্রের মতে, সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। সময় কম। তাই কোনও ব্যাপারে কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি হোক, এটা চাইছেন না মুকুলবাবু। তিনি এর আগে ‘নভেম্বর বিপ্লব’-এর প্রসঙ্গ তুলে চলতি মাসেই একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বিপ্লবের রূপরেখা এখনও খোলসা করেননি। নিজে কবে দল ছাড়ছেন, স্পষ্ট করছেন না তা-ও। মুকুল শিবির আশা করছে, আর দু’সপ্তাহের মধ্যে কমিশন নতুন দলটির নথিভুক্তিকরণের নোটিস দিয়ে দেবে। তার পর প্রতীকের জন্য নিজেদের করা নকশা জমা দেওয়া হবে নির্বাচন কমিশনের কাছে।

শুধু কাগজপত্রে নয়, দল গড়ার কাজ চলছে জমিতেও। সোমবার কাটোয়ায় তৃণমূলের কিছু কর্মীকে নিয়ে একটি সভা করেন গোপাল চক্রবর্তী নামে মুকুল-অনুগামী এক নেতা। সেখানে তিনি দাবি করেন, শীঘ্রই ‘ন্যাশনালিস্ট তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি’ নামে নতুন একটি দল গড়বেন মুকুলবাবু। নানা জায়গায় গিয়ে সে কথা তাঁরা ঘোষণাও করবেন। তার আগে এ দিন কাটোয়ায় একটা চার সদস্যের কার্যকরী কমিটি গড়ে দেওয়া হল বলে গোপালবাবু জানান।

সেই কমিটির সম্পাদক হিসেবে কাটোয়ার প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি মণ্ডল আজিজুলের নাম ঘোষণা করেন তিনি। সভায় মণ্ডল আজিজুল নিজেও হাজির ছিলেন।

patent Election Commission All India Trinamool Congress Mukul followers mukul roy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy