গরমের শুরুতে কয়েক পশলা বৃষ্টি হলেই একটু একটু করে ফিরে আসে ডেঙ্গি। স্কুলে জমে থাকা জল, স্কুলের জলের ট্যাঙ্কের জমা জল থেকে ডেঙ্গি ছড়ায়, এমন অভিযোগও বার বার উঠেছে। এ বার তাই স্কুলের কোনও জায়গা থেকে ডেঙ্গি ছড়ানো রুখতে আগেই পদক্ষেপ করতে চাইছে শিক্ষা দফতর। তাই ডেঙ্গি নিয়ে সচেতন করতে সম্প্রতি স্কুলগুলিকে নির্দেশিকা পাঠিয়েছে তারা।
ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, কোনও পরিস্থিতিতেই স্কুলে জল জমতে দেওয়া যাবে না। নিয়মিত স্কুল চত্বর পরিষ্কার হচ্ছে কিনা, তা নিয়ে নজরদারি চালাতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। এই স্কুল চত্বর পরিষ্কারের বিষয়ে পড়ুয়ারাও যেন ক্লাসের ফাঁকে অংশগ্রহণ করে, তা দেখতে হবে শিক্ষকদের। কিছু দিন পরেই মার্চের শেষে বা এপ্রিলের প্রথমে কালবৈশাখী হওয়ার
সম্ভাবনা আছে। সেই ঝড়-জলে যেন স্কুলের কোথাও জল জমে না থাকে, তা নজরে রাখতে হবে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। অনেক সময় ঝড়-বৃষ্টিতে নিকাশি নালা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। তাই সেই সব নিকাশি নালা ঠিক মতো পরিষ্কার আছে কিনা, তা-ও দেখতে হবে। স্কুল চত্বরে চৌবাচ্চা বা জলের ট্যাঙ্ক থাকলে তা সাফাইকর্মীদের দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করাতে হবে। জলের ট্যাঙ্কের ঢাকনা ঠিক মতো দেওয়া আছে কিনা, তা-ও দেখতে হবে। স্কুলের মাঠে ঝোপজঙ্গল, স্কুলের অপ্রয়োজনীয় ঘরে জমে থাকা আবর্জনা, স্কুল চত্বরে কোনও নির্মাণকাজের পরে জমে থাকা বর্জ্য পদার্থ সাফ করতে হবে। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,
স্কুলের শৌচালয়গুলি পরিষ্কার থাকে কিনা, সে দিকেও নিয়মিত নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে ব্লিচিং ছড়ানো বা স্প্রে করা হচ্ছে কিনা, তা দেখতে হবে।
ওই নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, স্কুলে যথাসম্ভব বেশি সংখ্যক পড়ুয়াদের নিয়ে ডেঙ্গি
সচেতনতার প্রচার করতে হবে। কোনও স্কুলের পড়ুয়ার যদি ডেঙ্গির উপসর্গ (যেমন, বেশি জ্বর, মাথা ব্যথা, গাঁটে ব্যথা, র্যাশ বেরোনো) দেখা যায়, তা হলে তা স্কুলের শিক্ষকদের জানাতে হবে।
শিক্ষকদের একাংশের মতে, এখন থেকে ডেঙ্গি নিয়ে সচেতনতা ভাল পদক্ষেপ। তবে মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদার বলেন, ‘‘স্কুল সাফ রাখার কাজ নিয়মিত করার চেষ্টা করা হয়। তবে বেশির ভাগ স্কুলেই স্থায়ী সাফাইকর্মী নেই। সাফাইকর্মী নিয়োগ করার মতো সামর্থ্যও অনেক স্কুলের নেই। স্কুলে স্কুলে সাফাইকর্মী নিয়োগের বিষয়টি শিক্ষা দফতর দেখলে ভাল হয়।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)