E-Paper

কার্তুজ পাচারে আতশকাচের নীচে একাধিক অস্ত্র বিপণি

গত মার্চে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থেকে ১৯০ রাউন্ড কার্তুজ-সহ পাঁচ জনকে ধরেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় একটি দোনলা বন্দুক।

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২২
বিপুল পরিমাণ কার্তুজ সরবরাহ করা হয়েছিল বি বা দী বাগের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণি থেকে।

বিপুল পরিমাণ কার্তুজ সরবরাহ করা হয়েছিল বি বা দী বাগের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণি থেকে। —প্রতীকী চিত্র।

শুধু বি বা দী বাগের পুরনো অস্ত্র বিপণিই নয়, শহরের একাধিক অস্ত্র বিপণি থেকে বেআইনি ভাবে পাচার করা হয়েছিল কার্তুজ। গত সপ্তাহে লালবাজারের কাছে এমনই একটি অস্ত্র বিপণিতে হানা দিয়ে সেখানকার রেজিস্টার-সহ বিভিন্ন নথি বাজেয়াপ্ত করেছেন রাজ্য পুলিশের এসটিএফের গোয়েন্দারা। সিল করে দেওয়া হয়েছে দোকানটি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, লালবাজারের কাছে অবস্থিত ওই বিপণি থেকেও কয়েক বছর ধরে দুষ্কৃতীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে কার্তুজ। সেগুলি মূলত পৌঁছেছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভেড়ি এলাকায় দুষ্কৃতীদের হাতে। এক তদন্তকারী জানান, ইতিমধ্যেই সংশ্লিষ্ট দোকানের কয়েক জন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আরও কয়েক জন গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, গত মার্চে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থেকে ১৯০ রাউন্ড কার্তুজ-সহ পাঁচ জনকে ধরেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয় একটি দোনলা বন্দুক। পরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, এই বিপুল পরিমাণ কার্তুজ সরবরাহ করা হয়েছিল বি বা দী বাগের লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র বিপণি থেকে। বন্দুক ও কার্তুজ বেআইনি ভাবে বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই বিপণির দুই কর্মী জয়ন্ত দত্ত ও শান্তনু সরকারকে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত আট জনকে ধরা হয়েছে।

তদন্তকারীরা জানান, বি বা দী বাগের প্রাচীন অস্ত্র বিপণির রেজিস্টার-সহ যাবতীয় নথিপত্র আগেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। পাশাপাশি, ওই দোকানে কত বন্দুক ও কার্তুজ রয়েছে, সেই গণনা করে তার একটি তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যদিও সেই হিসাব এখনও চূড়ান্ত হয়নি। এরই মধ্যে লালবাজারের কাছে ওই অস্ত্র বিপণিতে কত কার্তুজ রয়েছে এবং কত বিক্রি হয়েছে, সেই হিসাব মেলানোর কাজ শুরু হয়েছে। পরবর্তী ধাপে এর সঙ্গে দোকানের রেজিস্টার মিলিয়ে দেখা হবে। যাতে বোঝা যায়, সংশ্লিষ্ট দোকানটি থেকে কত পরিমাণ কার্তুজ বেআইনি ভাবে সরানো হয়েছে।

প্রাথমিক ভাবে গোয়েন্দাদের সন্দেহ, দু’টি দোকানের হিসাবে বড় গরমিল থাকতে পারে। এরই সঙ্গে, এই দু’টি অস্ত্র বিপণি ছাড়া শহরের বাকি অস্ত্র বিপণিগুলির কার্তুজ কী ভাবে বিক্রি করা হয়েছে, ওই দোকানগুলিতে তার হিসাব ঠিক মতো রাখা হয়েছে কিনা— সে সবও দেখবেন তদন্তকারীরা।

এ দিকে, অস্ত্র-সহ সম্প্রতি বসিরহাট পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়া কারবারি মনিরুল ইসলাম গাজিকে শীঘ্রই হেফাজতে নিতে পারেন এসটিএফের গোয়েন্দারা। মার্চ মাসের মাঝামাঝি বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা সোলাদানার নলকোড়া থেকে মনিরুলকে গ্রেফতার করে জেলা পুলিশ। তার কাছ থেকে উদ্ধার হয় তিনটি দোনলা বন্দুক, একটি পাইপগান এবং ২১ রাউন্ড কার্তুজ। গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এসটিএফের হাতে গ্রেফতার হওয়া এক অভিযুক্তের কাছ থেকে ওই আগ্নেয়াস্ত্র ও কার্তুজ পেয়েছিল মনিরুল। ওই অভিযুক্ত আবার এই আগ্নেয়াস্ত্র পেয়েছিল কলকাতার একটি প্রাচীন অস্ত্র বিপণি থেকে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Cartridge BBD Bagh

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy