বাংলাদেশে ব্লগার খুনে অভিযুক্ত সে। কিন্তু শাগরেদকে নিয়ে দিব্যি ঘাঁটি গেড়েছিল হাওড়ার ডবসন রোডের হোটেলে। কলকাতায় জঙ্গি সংগঠন ‘আনসারুল্লা বাংলা টিম’ (এবিটি)-এর সদস্যদের গ্রেফতার করে এমনই তথ্য পেয়েছে লালবাজার। শুক্রবার ব্লগার খুনের ওই অভিযুক্ত-সহ দুই সন্দেহভাজনের ছবিও প্রকাশ করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।
ডিসি (এসটিএফ) মুরলীধর শর্মা এ দিন জানান, বাংলাদেশে ব্লগার খুনে অভিযুক্ত জঙ্গির নাম তামিম ওরফে মুন ওরফে স্বপন বিশ্বাস। সে এবিটি-র অপারেশন টিমের সদস্য। অর্থাৎ সরাসরি নিকেশ করাই তার কাজ। তামিমের সঙ্গে হাওড়ার হোটেলে নয়ন গাজি ওরফে সইফুল গাজি নামে আরও এক জঙ্গি ছিল। এদের খোঁজ দিলে পুরস্কারের কথাও জানিয়েছেন ডিসি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, এরা দু’জনেই বাংলাদেশি নাগরিক। তামিম খুলনা এবং নয়ন সাতক্ষীরার মাদরার বাসিন্দা। তবে হাওড়ার হোটেলে তারা আধার কার্ড জমা দিয়েছিল। তাতে সইফুল গাজি ও স্বপন বিশ্বাসের নাম রয়েছে। সইফুল উত্তর ২৪ পরগনার কৃষ্ণপাড়া এবং স্বপন বাজিতপুরের ঠিকানা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রথম না পঞ্চম, কোন শ্রেণিতে ফিরছে পরীক্ষা
দিন কয়েক আগেই এবিটি-র সদস্য দুই বাংলাদেশি নাগরিক সামশাদ মিয়াঁ ওরফে তনবির, রিয়াজুল ইসলাম ওরফে সুমন এবং বসিরহাটের বাসিন্দা মনোতোষ দে ওরফে জিয়ারুল গাজিকে পাকড়াও করা হয়। লালবাজার জানিয়েছে, এ দিন শিয়ালদহ থেকে শাহাদাত হোসেন নামে আরও এক জনকে পাকড়াও করা হয়েছে। শাহাদাত ও তনবিরকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, ২০১৬-য় তনবিরের সঙ্গে আরও এক জন এ দেশে ঢুকেছিল। সে-ই তামিম ওরফে স্বপন। দু’জনকে শাহাদাত হাসনাবাদে নিজের শ্বশুরবাড়িতে তোলে। পরের দিন দু’জনেই হায়দরাবাদ পাড়ি দেয়। সেখানে গিয়ে অমরপেটে একটি সংস্থায় কাজ নেয় দু’জনে। সেপ্টেম্বর মাসে নেতৃত্বের নির্দেশে তনবির ও তামিম আলাদা হয়ে যায়। এর পরেই খবর মেলে, অক্টোবরে তামিমকে হাও়ড়ার ডবসন রোডে দেখা গিয়েছে।
হাওড়ার হোটেলের কর্মীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, তামিমের সঙ্গে আরও এক জন ছিল। ১ অক্টোবর তারা হোটেলে এসে তিন দিন থাকে। সিসিটিভি ফুটেজ ঘেঁটে দু’জনের ছবিও জোগাড় করা হয়। মেলানো হয় জমা দেওয়া আধার কার্ডের সঙ্গেও।
পুলিশ জানাচ্ছে, তামিম বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ চাঁই। তবে এ দিন পাক়ড়াও হওয়া শাহাদাত সীমান্তে টাকার বিনিময়ে মানুষ পাচারের দালাল হিসেবে কাজ করত। বাংলাদেশি হলেও দু’পারেই তার ঘাঁটি রয়েছে। ব্যাঙ্কশাল আদালতের বিচারক শাহাদাতকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসটিএফ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।