Advertisement
E-Paper

শেষ রাতে বহু প্রশ্ন নিয়েই জালে সৌভিক 

সৌভিক নিয়ে প্রশ্নের অন্ত ছিল না। প্রাথমিক ভাবে তাকেই সব রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু বলে চিনিয়ে দিয়েছিল জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ।

বিমান হাজরা, সামসুদ্দিন বিশ্বাস

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৯ ০০:৩১
সিউড়ার এই বাড়িতে ভাড়া ছিলেন সৌভিক বণিক। নিজস্ব চিত্র

সিউড়ার এই বাড়িতে ভাড়া ছিলেন সৌভিক বণিক। নিজস্ব চিত্র

দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে গ্রেফতার করা হল সৌভিক বণিককে। মঙ্গলবার রাতে সাগরদিঘি থানায় একটি প্রতারণার অভিযোগ দেখিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। আজ, বুধবার তাকে আদালতে তোলা হবে।

সৌভিক নিয়ে প্রশ্নের অন্ত ছিল না। প্রাথমিক ভাবে তাকেই সব রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু বলে চিনিয়ে দিয়েছিল জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ। বন্ধুপ্রকাশ পালের সপরিবার খুনের পরে তাঁর আত্মীয়-স্বজনেরাও অভিযোগের আঙুল তুলেছিলেন সৌভিকের দিকেই। রামপুরহাট থেকে সিউড়ি— দেড় দিনের নিরন্তর অভিযানের পরে সৌভিককে আটক করা হয়েছিল ঘটনার দু’দিন পরে।

বন্ধুপ্রকাশের মামা দুলাল ঘোষ দাবি করেছিলেন, ‘অর্থই অনর্থের মূল’ এবং এর পিছনে রয়েছে রামপুরহাটের ওই যুবকের নিশ্চিত হাত।

প্রশ্ন যেখানে

• শুধু টাকা কিংবা রিসিট না পেয়েই কি একই পরিবারের তিন জনকে খুন, নাকি এর নেপথ্যে অন্য কারণও রয়েছে?
• তিন জনকে কি এক জনই খুন করেছে নাকি ধৃতের সঙ্গে আরও কেউ ছিল?
• ঘটনার পরে পরেই কেন এলাকায় পুলিশ কুকুর নিয়ে যাওয়া হয়নি?
• তিন জনকে খুন করা হলেও এলাকার কেউ কোনও চিৎকার শুনতে পেল না কেন?

বন্ধুপ্রকাশ বরাবরই পড়াশোনায় ভাল ছিলেন। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পরে চাকরি পেয়েছিলেন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকের। তা নিয়ে যে হা-হুতাশ ছিল না এমন নয়। সাহাপুর গ্রামে তাঁর স্বজন-পরিজনের পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও সে কথা মেনে নিয়েছেন। তাই চাকরি পাওয়ার কিছু দিনের মধ্যেই বিভিন্ন সংস্থার হয়ে সাবান থেকে পোশাক— বিকিকিনির ব্যবসায় অংশীদার হয়ে ছিলেন বন্ধুপ্রকাশ।

এ ব্যাপারে গ্রামের বন্ধুদের সাহায্যও চেয়েছেন বার বার। কখনও পেয়েছেন, কখনও আশ্বাস পেয়েও শূন্য হাতেই ফিরতে হয়েছে। এই সময়েই বন্ধুপ্রকাশের সঙ্গে আলাপ হয় সৌভিক বণিকের। সাহাপুরে তাঁর এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু বলছেন, ‘‘রামপুরহাটের ওই যুবকই বন্ধুপ্রকাশের মধ্যে উচ্চাকাঙ্খার বীজ বুনে দিয়েছিল। শুরু হয়েছিল বিমা সংস্থা থেকে লগ্নি সংস্থার এজেন্ট হিসেবে কাজকর্ম। আর, তা করতে গিয়েই দেনার সুতোয় ক্রমেই জড়িয়ে পড়ছিলেন তিনি। স্ত্রী বিউটিও এ ব্যাপারে তাঁকে সাবধান করা সত্ত্বেও সেই জাল কেটে যে বেরিয়ে আসতে পারছিলেন না তা বন্ধুদের কাছে বার বার আক্ষেপও করেছিলেন ওই শিক্ষক। বিভিন্ন আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে নতুন কোনও ব্যবসায় জড়িয়েছেন এবং প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই সহয়োগী হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন রামপুরহাটের ওই যুবককে।

তদন্তে নেমে পুলিশ তাই সেই সব আমানতকারীকেও জেরা করেছে যাঁরা বন্ধুপ্রকাশের লগ্নি সংস্থায় টাকা জমা দিয়েছিলেন। এক জাল কাটাতে গিয়ে অন্য জালে জড়িয়ে পড়া বন্ধুপ্রকাশ যে ক্রমেই নির্বান্ধব হয়ে পড়ছিলেন তা জানাচ্ছেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা।

Jiaganj Jiaganj Murder Crime
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy