সোমা দাস।
শিক্ষকতার বদলে অন্য সরকারি চাকরির প্রস্তাব পেয়েও তা গ্রহণ করেননি। ক্যানসার আক্রান্ত এসএসসি আন্দোলনকারী সোমা দাস ভরা আদালতে বলেছিলেন, শিক্ষকতাই করব। সেই সোমাকে অবিলম্বে সহকারী শিক্ষিকার পদে চাকরি দিতে এসএসসি নির্দেশ দিল নবান্ন।
সোমবার রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসএসসি-র নবনিযুক্ত চেয়ারম্যানকে রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি এ ব্যাপারে অবিলম্বে পদক্ষেপ করতে বলে একটি চিঠি দিয়েছেন। তাতে নবান্ন জানিয়েছে, সাত দিনের সোমাকে শিক্ষিকা পদে নিয়োগের কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে। নবম এবং দশম শ্রেণির বাংলা শিক্ষিকা হিসাবে তাঁকে নিয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ওই চিঠিতে।
বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা সোমা রক্তের ক্যানসারে আক্রান্ত। তা সত্ত্বেও তিনি ২০১৯ সাল থেকে এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। গত ১৩ এপ্রিল সোমাকে কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় শিক্ষকতার চাকরির বদলে অন্য সরকারি চাকরি গ্রহণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু সোমা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। পরে বিচারপতি তাঁকে জানান, ভবিষ্যতে যদি সরকারি স্কুলে শিক্ষকতার কোনও শূন্য পদ থাকে তবে সোমাকে তা দেওয়া হবে।
চিঠিতে নবান্ন সে কথা উল্লেখ করে জানিয়েছে, আদালত এ ব্যাপারে বিশেষ অনুরোধ করেছিল নবান্নকে। বিষয়টি মানবিক দিক থেকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছিল নবান্নকে। তার প্রেক্ষিতেই রাজ্যের মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। গত ৫ মে-র বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনা হয়। নবান্ন জানিয়েছে, ১২ মে সোমাকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা করে মন্ত্রিসভা। গত ১৭ তারিখ সেই নির্দেশ হাতে এসেছে নবান্নের। সেই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই এসসসি চেয়ারম্যানকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
তবে প্রশ্ন উঠেছে, সোমা এই চাকরিটিও গ্রহণ করবেন কি? অনেকেই সোমার আগের বক্তব্যের জের টেনে এ ব্যাপারে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। কারণ এর আগে বিচারপতি তাঁকে সরকারি চাকরির প্রস্তাব দেওয়ায় সোমা বলেছিলেন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আমার প্রতি সমব্যথী হয়ে অন্য কোনও দফতরে একটি চাকরি করে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমার লড়াই দুর্নীতির বিরুদ্ধে। চাকরিটা নিলে, হয়তো সবই হত, কিন্তু আমার শিক্ষক হওয়ার যে স্বপ্ন, তা পূরণ হত না। আমি অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে ওঁকে এটাই বোঝাতে চাই, স্যর আমি আপনার পাশে আছি। যদি চাকরি হয়, সবার হবে, একসঙ্গে হবে। আলাদা করে আমি চাকরিটা নিয়ে আমার হকের লড়াই থেকে সরে যেতে চাই না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy