Advertisement
E-Paper

এক দেশ, এক সূচক মানতে নারাজ নবান্ন

এ বার অন্য রাজ্যের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করার পথে যেতে চলেছে অর্থ দফতর।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৭
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

দেশ এক। কিন্তু প্রতিটি রাজ্যের চরিত্র আলাদা। কর আদায় করার ক্ষমতা থেকে শুরু করে আর্থিক কাঠামোর ভিত্তিগুলিও আলাদা। কিন্তু রাজ্যগুলির ঋণ বা রাজস্ব ঘাটতি কমাতে সারা দেশে যে ভাবে একই আর্থিক সূচক নির্দিষ্ট করা হচ্ছে, নবান্ন তার বিরোধিতা শুরু করেছে। আর্থিক সংস্কার সংক্রান্ত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এক একটি রাজ্যের জন্য এক এক রকম আর্থিক সূচক নির্দিষ্ট করার দাবি পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের কাছে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার অন্য রাজ্যের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করার পথে যেতে চলেছে অর্থ দফতর।

নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, ‘‘সমস্ত রাজ্যের জন্য এক আর্থিক সূচকের ‘জুতো’ পরানোর ব্যবস্থা মানা যায় না। কারণ, গুজরাত-মহারাষ্ট্র রাজস্ব ঘাটতি কমাতে যে লক্ষ্যমাত্রা নিতে পারে, তা বাংলার জন্য কার্যকর নয়। আবার বাংলা যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারে, তা মিজোরাম-নাগাল্যান্ড পারে না।’’ ওই কর্তার দাবি, ‘‘রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বুঝে অর্থ কমিশন বা কেন্দ্রীয় সরকার সংস্কারের সূচক ঠিক করে দিক। সবার জন্য এক লক্ষ্যমাত্রা কার্যকর করা অবাস্তব প্রস্তাব।’’

কেন রাজ্যের এমন অবস্থান?

অর্থ কর্তারা জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে ২০১০ সালে ফিসকাল রেসপন্সিবিলিটি অ্যান্ড বাজেট ম্যানেজমেন্ট (এফআরবিএম) আইন চালু হয়েছিল। সেই আইনে ঋণভার এবং ঘাটতি কমাতে সরকার কী কী পদক্ষেপ করবে, তা বলা হয়েছিল। ২০১৪-১৫ পর্যন্ত নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ফি বছর বাজেট তৈরি করতে হয়েছিল রাজ্যকে। বাজেট নিয়ন্ত্রণ আইনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও চতুর্দশ অর্থ কমিশন ২০১৫-১৬ থেকে ২০১৯-২০ পর্যন্ত সেই ধারা বজায় রেখেই ঘাটতি নিয়ন্ত্রণের পথে হাঁটতে বলেছিল রাজ্যগুলিকে। সব রাজ্যের জন্য একই আর্থিক সূচকের লক্ষ্যমাত্রা দিয়েছিল অর্থ কমিশন। এ বার পঞ্চদশ অর্থ কমিশন পরের পাঁচ বছর রাজ্যগুলির জন্য নয়া আর্থিক সূচকের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিতে পারে। তার আগেই রাজ্য বলেছে, সবার জন্য এক সূচক যথাযথ নয়।

অর্থ কর্তাদের যুক্তি, পশ্চিমবঙ্গ ঋণগ্রস্ত রাজ্য। আগের সরকার কোনও আর্থিক শৃঙ্খলার ধার ধারেনি। ফলে বকেয়া ঋণ মেটাতেই কোষাগার শূন্য হয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের যুক্তি, ২০১০-১১ সালে ঋণের সুদ মেটাতে হত ১৩ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ সালে সুদ বাবদ খরচ হয়েছে ২৭ হাজার ২৯৬ কোটি। এ বছর সুদ-আসল শোধ করতে হবে ৫০ হাজার কোটি। রাজ্যের ঋণের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় পৌনে চার লক্ষ কোটি টাকা। এমন পরিস্থিতিতে রাজস্ব ঘাটতি শূন্যতে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। এর পর ষষ্ঠ বেতন কমিশনের চাপ এলে কোনও ধরনের আর্থিক শৃঙ্খলা রক্ষাই কঠিন হয়ে দাঁড়াবে বলে মনে করছেন অর্থ কর্তারা।

তা-ই অর্থ কমিশন এবং কেন্দ্রের কাছে নবান্নের আর্জি, রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি বিচার করেই রাজকোষ ঘাটতি, রাজস্ব ঘাটতি বা ঋণ নেওয়ার ক্ষমতার সূচকগুলি ঠিক করা হোক।

Nabanna Fiscal deficit নবান্ন রাজস্ব
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy