পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের সঙ্গে যে বঞ্চনাই হচ্ছে, সে কথা অনস্বীকার্য। —ফাইল চিত্র।
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ প্রায়ই তোলে রাজ্য সরকার। এ বার রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদকের তালিকা থেকেও কিছু অফিসারের নাম বাদ পড়ায় কেন্দ্র-রাজ্য দ্বৈরথ সামনে চলে এল।
২০১৮-র স্বাধীনতা দিবসে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদকের জন্য দুই আইপিএস অফিসারের নাম প্রস্তাব করেছিল নবান্ন। সব মিলিয়ে ২৯ জন অফিসার ও পুলিশকর্মীকে পদক দিতে সুপারিশ করেছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। কেন্দ্র ২৪ জনকে এই পদক দিয়েছে। বেঙ্গল ক্যাডারের দুই সিনিয়র আইপিএস অফিসারের নাম এই পদকের জন্য বিবেচনা করেনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
নবান্নের দাবি, পুলিশ পদক চালু হওয়ার পর থেকে কোনও বছর বেঙ্গল ক্যাডারের এক জন সিনিয়র আইপিএস অফিসারও তা পাননি, এমন ঘটনা ঘটেনি। কেন্দ্র অবশ্য তিন জন আইপিএস অফিসারকে এ বার পুলিশ পদক দিয়েছে, যাঁরা আদতে ডব্লিউবিপিএস অফিসার। পরে আইপিএসে উন্নীত হয়েছেন।
এই নিয়ে বাংলার আইপিএস অফিসার মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আগামী ২৬ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফার পুলিশ পদক দিতে চেয়ে নাম চেয়ে পাঠিয়েছে। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘যদি প্রজাতন্ত্র দিবসেও কোনও আইপিএস-কে পদক দেওয়া না-হয়, তা হলে বুঝতে হবে কেন্দ্রীয় সরকার বাংলার অফিসারদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক আচরণ করছে। সে-ক্ষেত্রে দিল্লির কাছে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হবে।’’
সরকারি সূত্রের খবর, প্রতি বছর স্বাধীনতা ও প্রজাতন্ত্র দিবসে চার ধরনের পুলিশ পদক দেওয়া হয়। সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতির পদক ও সাধারণ পুলিশ পদক এবং পুলিশের চাকরিতে বিশেষ অবদানের জন্য রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক ও সাধারণ পদক। নবান্নের খবর, এ বার কর্মজীবনে বিশেষ অবদানের জন্য পদক বিভাগে এডিজি (সিআইডি) সঞ্জয় সিংহ এবং ডিজি (দমকল) জগমোহনের নাম প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁদের নাম পদকের জন্য বিবেচিত হননি। রাজ্য পুলিশ সার্ভিসের চাকরি থেকে আইপিএসে উন্নীত সরোজকুমার গজমের, দেবব্রত দাস, ওঙ্গমু গ্যায়তসু পাল ও প্রণবকুমার দাসের নাম প্রস্তাব করা হয়। তাঁদের মধ্যে গজমের পদকের জন্য বিবেচিত হননি। অন্য যে-তেইশ জন পুলিশকর্মী ও অফিসারের নাম পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের থেকেও কয়েক জনকে বাদ দিয়েছে মন্ত্রক।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, পুলিশ পদকের জন্য রাজ্যের পাঠানো নামেই সিলমোহর দেয় কেন্দ্র। এটাই দীর্ঘদিনের রেওয়াজ ছিল। কিন্তু এ বার যে-ভাবে দু’জন সিনিয়র আইপিএসকে ছেঁটে দেওয়া হয়েছে, তা অভিপ্রেত নয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্র জানাচ্ছে, এ বছর থেকে রাজ্যের পাঠানো তালিকা আর হুবহু মেনে নেওয়া হচ্ছে না। কেন্দ্র নিজস্ব সূত্রে যাচাই করছে, পদক পাওয়ার মতো বিশেষ অবদান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কর্মজীবনে সত্যিই আছে কি না। তার ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে মন্ত্রক।
‘‘পশ্চিমবঙ্গ ক্যাডারের আইপিএস অফিসারদের সততা, নিষ্ঠা বিচার করে রিপোর্ট নিয়েছে কেন্দ্র। তার ভিত্তিতেই চূড়ান্ত বাছাই হয়েছে। ভবিষ্যতেও তা-ই হবে,’’ বলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক কর্তা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy