টেন্ডারের দখলদারি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে।
বৃহস্পতিবার, দুই গোষ্ঠীর বিবাদে বোমা থেকে গুলি, ইট কিংবা খেটো বাঁশের লাঠি— ঘণ্টা দুয়েকের ‘যুদ্ধে’ সব কিছর ব্যবহার এবং বারো জন আহত হলেও এ ব্যাপের মুখে কুলুপ এঁটেছেন স্থানীয় বিডিও নীলাঞ্জন মণ্ডল। পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগও এ দিন পর্যন্ত দায়ের করেননি তিনি।
ব্লকের প্রশাসনিক কর্তার এমন আচরণে স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের একাংশও ক্ষুব্ধ। তৃণমূলের ক্ষোভ পুলিশের বিরুদ্ধেও। অভিযোগ, দিনভর দৌরাত্মের পরেও যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁরা ওই সময় ওখানে ছিলেনই না। যুব তৃণমূলের কান্দির ব্লক সভাপতি রাসমত শেখ স্পষ্টই বলছেন, ‘‘চারটি নিরীহ মানুষকে গ্রেফতার করে পুলিশ তার কর্তব্য সারল। যারা সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করল তারা ঘুরছে বুক ফুলিয়েই।’’
ব্লকের সাতটি স্কুলের অতিরিক্ত শ্রেণি কক্ষ তৈরি করা নিয়ে এক কোটি ৪০ লক্ষ টাকার টেন্ডারের নথি দেখানো নিয়ে ব্লক প্রশাসনের পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলে রাসমত বলছেন, ‘‘ব্লক প্রসাসনের একাংশ এর সঙ্গে জড়িত কি না তা নিয়েই সন্দেহ দেখা দিয়েছে।’’
দলীয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, ব্লক তৃণমূলের সঙ্গে ব্লক যুব তৃণমূলের বিবাদ দীর্ঘ দিনের। তৃণমূলের একাংশের দাবি ওই ঘটনা মূলত প্রদেশ তৃণমূলের দু’নেতার দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ। ১৯ জানুয়ারির ব্রিগেড সমাবেশকে কেন্দ্র করে ব্লকের তৃণমূল ও ব্লক যুব তৃণমূলের মধ্যে চাপা লড়াই ছিল। ব্রিগেডে লোক নিয়ে যাওয়া নিয়ে নিজেদের ‘ক্ষমতা’ প্রদর্শনের ওই রেষারেষির জের থিতিয়ে গেলেও চাপা আগুন যে জ্বলছিল ওই দিনের লড়াই তারই প্রমাণ।
রাসমত শেখ বলেন, “ব্লক সভাপতির অনুগামীরা ব্লকের কাজ করবে, অন্য কোন লোক ওই কাজ করতে পারবে না। তারই জেরে ওই দিন আমাদের লোকজনকে মারধর করা হয়েছে। বিডিও পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ জানাননি।” যদিও কান্দি ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমতির সহকারী সভাপতি পার্থপ্রতিম সরকার বলেন, “রাসমতরা কান্দি পুরসভায় অশান্তি করে, এখানেও অশান্তি করতে চাইছে। ব্লকের একাধিক কাজ রাসমত ও তার লোকজন করেছে। তার প্রমাণ আমার কাছে আছে। ব্লকের উন্নয়নকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে রাসমত।’’
যুব ও মূল তৃমমূলের এই লড়াই অবশ্য মুর্শিদাবাদে নতুন নয়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে শক্তিপুর এলাকা এ নিয়ে উত্তপ্ত ছিল। এমনকি টেন্ডারের আবেদনের কাগজ তুলতে গেলেও চাকু, ভোজালি, কাটারি নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী পরস্পরের দিকে তেড়ে যাওয়ার নজিরও রয়েছে। চলতি মাসের প্রথমেও পঞ্চায়েত তালা ঝোলানো হয়। পরে পুলিশের উপস্থিতিতে সমস্যা মেটে। তবে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ যে মেটেনি তা কবুল করছে দু’পক্ষই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy