Advertisement
E-Paper

জোড়া দুর্ঘটনায় দুই পরিবারের মৃত চার

ভেঙে পড়েছেন প্রতাপের বাবা।সাতসকালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে লরির ধাক্কা দুই জেলার চারজনের মৃত্যু হল। মঙ্গলবার এই জোড়া দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ নদিয়ার বেথুয়াডহরি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা। এ দিন সকালে লরির পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেলেন কাকা-ভাইপো। নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হতে গিয়ে শান্তিরঞ্জন চাকলাদার (৩৪) ও তাঁর ভাইপো প্রতাপ চাকলাদার (৭)।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৬ ০৭:২৬
ঘাতক লরি। — নিজস্ব চিত্র

ঘাতক লরি। — নিজস্ব চিত্র

সাতসকালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে লরির ধাক্কা দুই জেলার চারজনের মৃত্যু হল। মঙ্গলবার এই জোড়া দুর্ঘটনায় শোকস্তব্ধ নদিয়ার বেথুয়াডহরি মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা।

এ দিন সকালে লরির পিছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা গেলেন কাকা-ভাইপো। নাকাশিপাড়ার বেথুয়াডহরিতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক পার হতে গিয়ে শান্তিরঞ্জন চাকলাদার (৩৪) ও তাঁর ভাইপো প্রতাপ চাকলাদার (৭)। মৃতেরা নাকাশিপাড়ার চিচুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। সকালে ভাইপোকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে বেথুয়াডহরি বাজারে এসেছিলেন শান্তিরঞ্জনবাবু। বেথুয়াডহরি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে একটি লরি মোটরবাইকটিকে সামনে থেকে ধাক্কা মারলে তাঁরা লরির চাকায় তলায় পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। এ দিনই কৃষ্ণনগর থেকে কোতোয়ালি থানার পুলিশ লরিটিকে আটক করেছে। গ্রেফতার হয়েছে ঘাতক লরিটির চালকও।

শান্তিরঞ্জনবাবু সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে রাজস্থানে কর্মরত ছিলেন। দিন পনেরো আগে তিনি ছুটিতে বাড়ি ফিরেছেন। ভাইপো প্রতাপ স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির ছাত্র ছিল। একই পরিবারের জোড়া মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চিচুড়িয়ার চাকলাদার পরিবারে। মৃত প্রতাপের বাবা প্রদীপবাবু জানান, এ দিন তাঁদের পরিবারে একটি অনুষ্ঠান ছিল। সেই জন্য ছেলেকে নিয়ে তাঁর ভাই কেনাকাটা করতে বাজারে যান। এক নিমেষে সব আনন্দ উঠাও হয়ে গেল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বেথুয়াডহরি বাজার লোকে গিজগিজ করে। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, এত ভিড় এলাকাতেও বাস-লরি গতিতে লাগাম টানে না। দ্রুত গতিতে যানবাহন চলাচল করে। ফলে মাঝেমধ্যেই দূর্ঘটনা ঘটছে। জেলা পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৪ সালে এই বেথুয়াডহরিতে পথ দূর্ঘটনায় চার জনের মৃত্যু হয়। ২০১৫ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় ছ’জনের মৃত্যু হয়। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত গাড়ি চাপা পড়ে দশ জনের মৃত্যু হয়েছে।

অন্যদিকে ফরাক্কায় নিজের পুকুরের মাছ বিক্রি করতে এসে বাড়ি ফেরার পথে এই মারা গেলেন বাবা-ছেলে।

মৃতেরা হলেন আফফার শেখ (৬৫) ও দিলদার শেখ (৪০)। তাঁদের বাড়ি ঝাড়খন্ডের গর্জনপাড়া। এ দিন সকালে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে ফরাক্কার এনটিপিসি মোড়ের ঘটনা। রাস্তার ধারে মোটরবাইক রেখে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁরা। আচমকা মালদহগামী একটি লরি বাবা-ছেলেকে পিষে দেয়। স্থানীয় লোকজন তাঁদের ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা দিলদারকে মৃত বলে জানান। আফফার তখনও বেঁচে ছিলেন। তাঁকে কলকাতার রেফার করা হয়। কিন্তু কলকাতার নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। পুলিশ লরিটিকে আটক করেছে।

ঝাড়খন্ড ও ফরাক্কা সীমান্তের তিলডাঙা লাগোয়া গ্রাম গর্জনপাড়া। ৪৬টি পরিবারের বাস সেখানে। আফফারের পাঁচ ভাই ও এক বোন। আফফার গ্রামের সম্পন্ন চাষি। প্রতিদিনই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে তিনি মোটরবাইকে চেপে ফরাক্কায় আসতেন মাছ বেচতে। এ দিন আরও মাছ বিক্রি করে তাঁদের বাড়ি ফেরা হল না। ফরাক্কার এনটিপিসি মোড়েই থাকেন আজারত আলি। তিনি মৃত দিলদারের তুতো ভাই। আজারত বলেন, “দিলদারের পাঁচ নাবালক সন্তান রয়েছে। গোটা পরিবারটাই পথে বসে গেল।’’ এ দিনই বেলা সাড়ে ৩টে নাগাদ বাবা-ছেলের দেহ পৌঁছয় গর্জনপাড়ার বাড়িতে। জোড়া মৃত্যুতে গোটা গ্রাম ভেঙে পড়েছে।

Accident Killed
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy