Advertisement
০৪ মে ২০২৪

ফের ডেঙ্গিতে আক্রান্ত ছয়

শনিবার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ড থেকে গতকাল ন’জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ছ’জনের রক্তে মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু। সব মিলিয়ে জেলায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ জন। তার মধ্যে ওই ওয়ার্ডেই সংখ্যাটা ৭।’’

আতঙ্ক: জমা জল পানীয় জলের কলের পাশেই। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

আতঙ্ক: জমা জল পানীয় জলের কলের পাশেই। ছবি: দয়াল সেনগুপ্ত

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ৩০ জুলাই ২০১৭ ০২:২৩
Share: Save:

যে ওয়ার্ডে আশঙ্কা করেছিল স্বাস্থ্য দফতর, দুবরাজপুরের সেই ৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকেই মিলল আরও ৬ জনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু।

শনিবার জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি বলেন, ‘‘ওই ওয়ার্ড থেকে গতকাল ন’জনের রক্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। তার মধ্যে ছ’জনের রক্তে মিলেছে ডেঙ্গির জীবাণু। সব মিলিয়ে জেলায় রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১০ জন। তার মধ্যে ওই ওয়ার্ডেই সংখ্যাটা ৭।’’

এ দিন দুবরাজপুরে সাত নম্বর ওয়ার্ড থেকে একযোগে সেই কাজটাই শুরু হয়। মেডিক্যাল ক্যাম্প করে জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া এবং মশা মারতে স্প্রে ও কামানদাগা সবই চলে। সৌজন্যে জেলাস্বাস্থ্য দফতর ও দুবরাজপুর পুরসভা। তড়িঘড়ি এই ওয়ার্ডে বিশেষ শিবির করার কারণ, গত বুধবার থেকে জেলায় যে চারজনের রক্তে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে তাঁদের একজন কবিতা খাতুন। বছর ১৪ এই ছাত্রীর বাড়ি এই ওয়ার্ডেরই। অবস্থা স্থিতিশীল হলেও কবিতা এখনও সিউড়ি জেলা হাসপতালে চিকিৎসাধীন। ঘটনা হল, দুবরাজপুর পুর এলাকার অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ সাত নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ৬ হাজার বাসিন্দা বসবাস করেন। সেখানে এক কিশোরীর শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মেলাকে মোটেই সহজ ভাবে নেয়নি। শুক্রবারই রোগ রুখতে প্রয়োজনীয় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে পুর সভাকক্ষে বৈঠক করেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি। এবং শনিবার থেকে সেটাই কার্যকর করা শুরু হয়।

এ দিন ১০১ জন জ্বর আক্রান্ত রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়। ডেঙ্গির উপসর্গ হতে পারে সন্দেহে মোট কয়েকজনকে সিউড়ি হাসপাতালে ম্যাক অ্যালাইজা টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে এক কিশোর ও কিশোরী ছাড়া দুই মহিলা রয়েছেন। এ ছাড়া কিছু জনের রক্তের কিট টেস্ট ও ১৯ জনের রক্তের স্লাইড সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার থেকেই বাড়ি বাড়ি সমীক্ষা চালিয়ে জ্বরে আক্রান্তদের মেডিক্যাল ক্যাম্পে আসতে বলা হয়।

অন্যদিকে এ দিন সকাল থেকে ওয়ার্ডে মশা নিধনে স্প্রে করা হচ্ছিল। কিন্তু ওয়ার্ডটির মধ্য গোটা তিনেক পুকুর চিন্তা বাড়িয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অপরিচ্ছন্ন নিকাশি নালা। পুকুরগুলির এতই করুণ অবস্থা যা কার্যত ময়লাফেলার ভ্যাটে পরিণত হয়েছে এবং বেহাল নিকাশি ব্যবস্থার জন্য মশাদের বংশ বিস্তারের আদর্শ জায়গা। মশামারার রাসায়নিক ছিটিয়ে যে কাজ হবে না সেটা বুঝতে পারেন এলাকার কাউন্সিলর ও পুরকর্তৃপক্ষ। পরে স্বাস্থ্যদফতর সিউড়ি থেকে মশা মারার কামান নিয়ে এসে ধোঁয়া ছড়ানোর প্রস্তাব দিলে তাতে রাজি হয় পুরসভা। বিকালে এলাকায় ঘুরে মশা মারার কামান দাগা হয়। ছিলেন সিএমওএইচ হিমাদ্রি আড়ি এবং এসিএমও এইচ প্রহ্লাদ অধিকারি, পুরপ্রধান পীযূষ পাণ্ডে প্রমুখ। সিএমওএইচ বলছেন, প্রথম লক্ষ্য যাতে রোগ না ছড়ায় সেটা দেখা। অহেতুক আতঙ্কে না ভুগে কতগুলি সতর্কতা মেনে চললেই ঠেকানো সম্ভব মশাবাহিত এই রোগ।

এলাকাবাসীর দাবি, অব্যবহৃত পুকুরগুলি পরিস্কার করানোর ব্যবস্থা করুক পুরসভা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE