Advertisement
E-Paper

ডায়াবেটিস ধরা পড়ার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন নদিয়ার বৃদ্ধের! এলাহি ভূরিভোজ, খেলেন সুগার রোগীরা

পলাশিপাড়ার বাসিন্দা নিতাই প্রামাণিক পেশায় গৃহশিক্ষক। ২৪ বছর বয়সে রক্তে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। নিতাইয়ের দাবি, নিয়মের মধ্যে চললে ডায়াবেটিস নিয়েও স্বাভাবিক ভাবে বাঁচা যায়, সেই বার্তা দিতেই ভূরিভোজের আয়োজন করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:০৫
(বাঁ দিকে) নিতাই প্রামাণিকের আয়োজনে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা।

(বাঁ দিকে) নিতাই প্রামাণিকের আয়োজনে খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থা। —নিজস্ব চিত্র।

৫০ বছর আগে মধুমেহ (ডায়াবেটিস) রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ২৪। দীর্ঘ সময় ধরে ডায়াবেটিস নিয়েই জীবনযাপন করছেন নদিয়ার পলাশিপাড়ার বাসিন্দা নিতাই প্রামাণিক। তিনি এ বার তাঁর ডায়াবেটিস ধরা পড়ার ৫০ বছর পূর্তিতে মহাভোজের আয়োজন করলেন। পাত পেড়ে খেলেন সুগার রোগীরা। মেনুতে ছিল মাছ, মাংস, চাটনি, মিষ্টি! দূরদূরান্ত থেকে আমন্ত্রিতেরা এসে খেয়ে গেলেন নিতাইয়ের বাড়িতে।

পলাশিপাড়ার বাসিন্দা নিতাই পেশায় গৃহশিক্ষক। বিয়ে করেননি। পড়াশোনা এবং ছাত্রছাত্রীদের নিয়েই দিন কাটে তাঁর। ২৪ বছর বয়সে রক্তে ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। সেই থেকে চিকিৎসকদের পরামর্শে নিয়মিত ওষুধ এবং শারীরিক কসরত করে সুস্থ জীবন কাটিয়ে আসছেন তিনি। নিতাইয়ের দাবি, নিয়মের মধ্যে চললে ডায়াবেটিস নিয়েও স্বাভাবিক ভাবে বাঁচা যায়, সেই বার্তা দিতেই ভূরিভোজের আয়োজন করেছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চাশ বছর আগে শারীরিক সমস্যার জন্য চিকিৎসকের কাছে গেলে বেশ কিছু পরীক্ষার সঙ্গে সুগার পরীক্ষাও করতে বলেন। রিপোর্টে দেখা যায়, তাঁর অতিরিক্ত মাত্রায় সুগার রয়েছে। শুরু হয় ওষুধ খাওয়া। চিকিৎসকের পরামর্শে শারীরিক পরিশ্রম, প্রাতর্ভ্রমণের পাশাপাশি শরীরচর্চা শুরু করেন। কিছুদিন পর পুনরায় সুগার পরীক্ষা করলে জানতে পারেন, তাঁর সুগার নিয়ন্ত্রণে। তার কয়েক বছর পর আবার সুগার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তার পর থেকে আর চিকিৎসকের কথা অমান্য করেননি। সেই থেকে টানা ৫০ বছর সুগার নিয়ন্ত্রণে রেখে নজির তৈরি করলেন নিতাই।

আয়োজক নিতাই বলেন, ‘‘২৪ বছর থেকে চিকিৎসকের পরামর্শ মতো পরিশ্রম, শরীরচর্চা, নিয়ম মেনে ওষুধ খাচ্ছি। এখনও আমি সম্পূর্ণ সুস্থ আছি। আমার বয়স ৭৪ বছর। সে হিসেবে আমার শরীরে সুগারের বয়স ৫০ বছর পূর্ণ হল। সুগার নিয়েও যে দীর্ঘ দিন সুস্থতার সঙ্গে বেঁচে থাকা যায়, এই বার্তা সকলের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে এলাকার কিছু মানুষকে আমার বাড়িতে আমন্ত্রণ জানিয়েছি।’’

আমন্ত্রিত ডায়াবেটিস রোগী যুবক নীলোৎপল বসাকের কথায়, ‘‘জেঠুকে (নিতাই প্রামাণিক) দেখে অনেক কিছু শেখার আছে। সুগার মানেই যে সব কিছু শেষ নয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন। অনেকটা শক্তি পেলাম। আশা করি রোগের বিরুদ্ধে লড়াইটা এ বার মনের জোর দিয়ে লড়তে পারব।’’ কী ভাবে শরীরচর্চা করতেন নিতাই? স্থানীয় বাসিন্দা রূপেশ মণ্ডল জানান, রোদ-ঝড়-বৃষ্টি কোনও দিন ওঁকে (নিতাই) সকালে হাঁটা থেকে আটকাতে পারে না। সব খাওয়াদাওয়া করেন কিন্তু নিয়ন্ত্রিত।

তেহট্ট মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক ফণিভূষণ সরকার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘নিয়মিত ওষুধ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করে ডায়াবেটিস নিয়েও দিব্য সুস্থ ভাবে বাঁচা যায়। আমরা এটাই বার বার রোগীদের বোঝানোর চেষ্টা করি।’’

Nadia Diabetis
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy