আগেই তার বিরুদ্ধে স্বামীকে আগুনে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছিল। তার পরে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) থেকে চাকরি যায়। এ বার ১১ বছরের ছেলেকে খুনের চেষ্টার অভিযোগে মানসী বিশ্বাস নামে এক প্রাক্তন জওয়ানকে ধরেছে পুলিশ। তার বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের প্রতাপপুরে। বুধবার কৃষ্ণনগর আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে ১৪ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনায় আর এক অভিযুক্ত রঞ্জিত রায়কে এখনও ধরা যায়নি।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে কৃষ্ণনগরের কাছে হরনগর এলাকার বাসিন্দা সুপদ বিশ্বাসের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল প্রতাপপুরের বাসিন্দা মানসীর। বছরখানেক পরে সে বিএসএফ জওয়ানের চাকরি পায়। মাঝেমধ্যে ছুটিতে বাড়ি আসত। এরই মধ্যে তার ছেলে জন্মায়। সে হরনগরে সুপদের কাছেই থাকত। মানসীর কর্মস্থল ছিল মালদহের নারায়ণপুরে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মাস দশেক আগে সুপদ ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নারায়ণপুরে যান। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, রঞ্জিত রায় নামে এক জওয়ানের সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়েছে মানসী। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রবল অশান্তি হয়। কিছু দিন পরে ফের মালদহে মানসীর কর্মক্ষেত্রে যান সুপদ। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে ১৯ মে বিএসএফ ক্যাম্পের ভিতরে আগুনে পুড়ে তাঁর মৃত্যু হয়। ২০ মে সুপদের পরিবারের তরফে পুরাতন মালদহ থানায় মানসী ও রঞ্জিতের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। সে মামলায় গ্রেফতার না হলেও ১৮ জুন বিএসএফ দু’জনকেই বরখাস্ত করে।
সুপদের ছেলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে। পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই মানসী মাঝেমধ্যে ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসে তাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। রঞ্জিতও স্কুলে গিয়েছিল। কিন্তু ছেলেটি তাদের সঙ্গে যেতে রাজি হচ্ছিল না। সোমবার স্কুল ছুটির পরে তাকে নিতে যান সুপদের মা তুলসী বিশ্বাস। তাঁর অভিযোগ, তিনি নাতিকে নিয়ে টোটোয় ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মানসী এসে ছেলেকে জোর করে নিয়ে যেতে চায়। ছেলে যেতে না চাইলে তার গলা টিপে ধরে মানসী তাকে খুনের হুমকি দেয়। অন্য অভিভাবকেরা কোনও মতে মানসীর হাত ছাড়িয়ে দেন।
সোমবারই তুলসী কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় মানসী ও রঞ্জিতের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সুপদের ভাই রাহুল বিশ্বাসের দাবি, “ওরা দাদাকে মেরেছে। এ বার ভাইপোকেও খুন করতে চায়।” পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন ছুটির পরে মানসী ফের স্কুলে গিয়ে ছেলেকে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে ফের গোলমাল বাধে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মানসীকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, রঞ্জিতের
খোঁজ চলছে।