—প্রতীকী চিত্র।
সকালে পরিবারের সঙ্গে বসে চা- মুড়ি খেয়েছেন। কিছু ক্ষণ পরই ঘরে ঢুকে দরজা দিয়ে দেন। তার পর গলায় একটি ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে পড়েন সিলিং ফ্যানে। তরতাজা ওই যুবকের এ ভাবে মৃত্যুর ঘটনায় শোকস্তব্ধ মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদের বাজারপাড়া এলাকা। মৃতের ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছে একটি চিরকুট। তাতে লেখা, ‘আমি হতাশ’। পরিবারের দাবি, শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে আইনি জটিলতা চলছে রাজ্যে, সে সব নিয়ে ভীষণ চিন্তা করতেন শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন দেখা ওই যুবক। ওই হতাশা থেকেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম অনুরাগ সরকার। ২৪ বছরের ওই যুবক বিএডের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া ছিলেন। পরিবারের দাবি, বিএড কোর্সে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই হতাশায় ভুগছিলেন অনুরাগ। দীর্ঘ আইনি জটিলতায় শিক্ষকের নিয়োগ হচ্ছে না দেখে বন্ধুদের কাছেও প্রায়শই হতাশার কথা বলতেন তিনি। অনুরাগের আত্মীয় সুস্মিতা সরকারের কথায়, ‘‘বিএডে ভর্তি হওয়ার পর থেকে প্রায়ই বলত, ‘‘ভুল করলাম। চাকরিটা কি হবে? না, ফালতু পয়সা নষ্ট হল। অন্য কিছু করলে ভাল হত।’’ অনুরাগের পরিবার সূত্রে খবর, সকালে জলখাবার খেয়ে নিজের ঘরে ঢুকে যান যুবক। দীর্ঘ ক্ষণ ঘর থেকে না বেরোনোয় সন্দেহ হয় বাড়ির অন্যদের। প্রথমে ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি কেউ। ভিতর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। শেষে দরজা ভেঙে ঘরের ভিতরে ঢুকতেই তাঁরা যুবককে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। তড়িঘড়ি তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় দৌলতাবাদ থানার পুলিশ। আত্মঘাতী যুবকের ঘরে তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার হয় একটি চিরকুট উদ্ধার হয়। হাতের লেখা আত্মঘাতী যুবকের কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এই মৃত্যুর ঘটনা প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তরুণ এবং যুবকদের মধ্যে অতিরিক্ত প্রত্যাশা থেকে হতাশার জন্ম নিচ্ছে। মাত্রাতিরিক্ত প্রত্যাশার সঙ্গে সাফল্য মেলাতে না পেরেই চরম সিদ্ধান্তের পথ বেছে নিচ্ছে যুবক- যুবতীরা। অতি দ্রুত এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy