আপাত ভাবে নামের আগে-পরে জুড়ে নেই তৃণমূল পরিচয়। পরিবারের সদস্যদের কেউ সরাসরি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেও যুক্ত নন। চার মাস স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন। তার পরে মিলেছিল স্কুল শিক্ষকের চাকরি। স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রকাশিত ‘দাগি তালিকায়’ রয়েছে তাঁর নাম। রবিবার সেই চাকরিহারা দাবি করলেন, ‘‘নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’
ধানতলা বাজারের কাছেই বাড়ি তাঁর। তিনি মুর্শিদাবাদের বহরমপুরের একটি স্কুলে বাংলার শিক্ষক ছিলেন। স্কুল শিক্ষকের চাকরি পাওয়ার আগে অন্য একটি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী হিসেবে চার মাস চাকরি করেছেন। স্থানীয় সূত্রের দাবি, স্বচ্ছ ভাবে তিনি যে চাকরি পাননি, তা আগেই এলাকায় জানাজানি হয়ে গিয়েছিল। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকতার চাকরি পাওয়ার আগে দু’বার টেট উত্তীর্ণ হয়েছিলেন তিনি। ওই চাকরিহারার প্রতিবেশীদের অনেকেই বলছেন, ‘‘চাষি পরিবার থেকে উঠে আসা ওই যুবক ২০১৬ সাল নাগাদ চাকরি পেতেই তাঁর জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। নতুন বাড়িও তৈরি করেন।’’
কিন্তু, কী ভাবে তিনি চাকরি পেয়েছেন, সেই বিষয়ে কিছু আন্দাজ করতে পারছেন না তাঁর প্রতিবেশীরা। একটি সূত্রের দাবি, কোনও তৃণমূল নেতা নয়, কোনও এক শিক্ষকের সঙ্গে যোগাযোগ করেই স্কুল শিক্ষকের চাকরি হাসিল করেছিলেন তিনি। রবিবার বিকেলে ফোনে অবশ্য ওই চাকরিহারা বলেন, ‘‘কেন এসএসসি প্রকাশিত দাগি তালিকায় আমার নাম উঠল জানি না। যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পেয়েছিলাম। এই চাকরি পাওয়ার আগেও আমি চাকরি করেছি। বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হব।’’ তাঁর কথায়, ‘‘এসএসসি আমার ওএমআর শিট সামনে আনুক। তা হলেই বোঝা যাবে, আমি সাদা খাতা জমা দিইনি। তা ছাড়া যে বছর আমি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকের চাকরি পেয়েছিলাম, ওই বছরই পরে প্রাথমিকের চাকরিতেও উত্তীর্ণ হয়েছিলাম।’’
অযোগ্যদের তালিকা প্রকাশের পরে রানাঘাটের বাসিন্দা তথা আন্দোলনকারী শিক্ষক শুকদেব দাস বলেন, ‘‘এসএসসি নিজেদের ওয়েবসাইটে দাগিদের নাম প্রকাশ করেছে। চাল ও কাঁকর আলাদা হয়েছে। তা হলে নতুন করে আমরা যাঁরা যোগ্য, তাঁদের স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে পরীক্ষায় কেন বসতে হবে?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘অযোগ্য তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা কাদের টাকা দিয়েছিলেন, তাঁদের নাম প্রকাশেরও দাবি জানাচ্ছি।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)