Advertisement
E-Paper

দুলাল খুনে দলেরই মুখ

নিজের তল্লাটে নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েমের চেষ্টাই কি কাল হয়ে দাঁড়াল তৃণমূল নেতা দুলাল বিশ্বাসের? নাকি, মাথাচাড়া দেওয়ার জন্য বিজেপি এই ঘটনা ঘটিয়েছে?এই প্রশ্নই ঘুরছে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:২৪
ধৃত: আদালতের পথে দুলাল বিশ্বাস খুনে ধৃতেরা। ফাইল চিত্র।

ধৃত: আদালতের পথে দুলাল বিশ্বাস খুনে ধৃতেরা। ফাইল চিত্র।

নিজের তল্লাটে নিরঙ্কুশ আধিপত্য কায়েমের চেষ্টাই কি কাল হয়ে দাঁড়াল তৃণমূল নেতা দুলাল বিশ্বাসের? নাকি, মাথাচাড়া দেওয়ার জন্য বিজেপি এই ঘটনা ঘটিয়েছে?

এই প্রশ্নই ঘুরছে তদন্তকারী পুলিশ অফিসার থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে।

সোমবার বগুলায় এসে দলের দুই শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দোপাধ্যায় ও পার্থ চট্টোপাধ্যায় সরাসরি বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছিলেন। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ অস্ত্র নিয়ে মিছিল করার পরিণতিতেই এই ঘটনা বলেও দাবি করা হয়।

কিন্তু এখনও পর্যন্ত পুলিশ যাদের ধরেছে, তারা কেউই বিজেপির লোক বলে পরিচিত নয়। ধৃত শঙ্কর বিশ্বাস তৃণমূল নেতা তথা দুলালের অন্যতম প্রতিপক্ষ বিমল বিশ্বাসের ভাইপো। মঙ্গলবার বিমলের স্ত্রী চঞ্চলা বিশ্বাস বলেন, “গত পঞ্চায়েত ভোটের পরেই আমরা কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছি।’’ আর এক ধৃত, বিমল-ঘনিষ্ঠ কমল মজুমদারের স্ত্রী মিনতিও একই কথা জানান। জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বিশ্বাস অবশ্য দাবি করেন, “বললেই তো আর কেউ তৃণমূল হয়ে যায় না। ওরা বিজেপিই করে।”

বিজেপির দিলীপ ঘোষের পাল্টা দাবি, ‘‘নিহতের বাড়ির লোকেরা বলছেন, তৃণমূলের লোক জড়িত আর তৃণমূল এতে বিজেপির ছায়া দেখছে। বিজেপি হিংসার রাজনীতি করে না।’’ স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদেরও একটা বড় অংশ বলছেন, এলাকায় বিজেপির প্রায় কোনও অস্তিত্ব নেই। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি অসীম সাহার কটাক্ষ, “বিজেপি জুজু সামনে এনে তৃণমূল ওদেরই ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে দেখাচ্ছে। এটা কি গট-আপ নাকি রাজনীতির নামে ছেলেমানুষী?”

তা হলে, কেন খুন হলেন দুলাল?

তৃণমূলের একটা অংশের দাবি, একচ্ছত্র রাজত্ব কায়েম করে বাকি সকলকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার চেষ্টাই সম্ভবত এই পরিণতির জন্য দায়ী। এই খুনে অন্যতম অভিযুক্ত বিমল বিশ্বাস কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসার আগে চার বার বগুলা ১ পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। তাঁর স্ত্রীও ছিলেন এক বার। দুলাল তখন সিপিএমে। ২০০৪ সালে দুলালের ভাই স্বপন খুন হলে বিমল এবং সে সময়কার আর এক কংগ্রেস নেতা শশাঙ্ক বিশ্বাসের নাম জড়ায়। তাঁরা জেলে যান। পাল্টা খুনে জেলে যান দুলালও।

তৃণমূলের একাংশের দাবি, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে তৎকালীন জেলা সভাপতি গৌরীশঙ্কর দত্তের প্রশ্রয়ে দুলালের উত্থান। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের পরে বিমলও তৃণমূলে যোগ দেন। কিন্তু দুলালের দাপটের সামনে দাঁড়াতে পারছিলেন না। মাস সাত আগে নিজের এলাকা কৈখালি বাজারে মার খান তিনি। প্রায় একই অবস্থা প্রাক্তন বিধায়ক তথা তৃণমূলে এসে জেলা পরিষদ কর্মাধ্যক্ষ শশাঙ্ক বিশ্বাসেরও। রানাঘাট (উত্তর-পূর্ব)-র বিধায়ক সমীর পোদ্দার এবং কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসও বৈরী হয়ে গিয়েছিলেন। যদিও খুনে এঁদের কারও কোনও ভূমিকা আছে, এমনটা কেউই বলছেন না।

Dulal Biswas TMC Leader Murder Group Clash TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy