Advertisement
E-Paper

পুরভোটে ঘরবন্দি অধীর-মৃগাঙ্ক

ভোটের দিনে গুরু ও শিষ্য দু’জনেই গৃহবন্দি রইলেন। গুরু অর্থাত্‌ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং তাঁর একদা শিষ্য হুমায়ুন কবীর শনিবার পুরভোটের দিনে নির্বাচন চলছে এমন কোনও পুরসভা এলাকায় পা রাখতে পারেননি। দুই দলের আরও দুই নেতানেত্রীও ভোটের দিনে ঘরের বাইরে যাননি। একজন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য ও অন্য জন বিজেপি-র জেলা সভানেত্রী মালা ভট্টাচার্য।

অনল আবেদিন

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩৮

ভোটের দিনে গুরু ও শিষ্য দু’জনেই গৃহবন্দি রইলেন। গুরু অর্থাত্‌ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এবং তাঁর একদা শিষ্য হুমায়ুন কবীর শনিবার পুরভোটের দিনে নির্বাচন চলছে এমন কোনও পুরসভা এলাকায় পা রাখতে পারেননি। দুই দলের আরও দুই নেতানেত্রীও ভোটের দিনে ঘরের বাইরে যাননি। একজন সিপিএমের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য ও অন্য জন বিজেপি-র জেলা সভানেত্রী মালা ভট্টাচার্য। ব্যতিক্রম কেবল একজন। তিনি তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতি মান্নান হোসেন। অন্য দলের নেতানেত্রীরা ‘ঘরবন্দি’ হয়ে থাকলেও সপুত্র মান্নান হোসেনকে ভোটের দিনে বুথে বুথে দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গেল!

প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসাবে ভোটের দিনে মুর্শিদাবাদ জেলার ৬টি পুরসভা এলাকায় ঘোরার জন্য অনুমতি চেয়ে গত শুক্রবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে লিখিত আবেদন করেছিলেন অধীর চৌধুরী। ওই আবেদনপত্র মুর্শিদাবাদ জেলাশাসকের কাছে পাঠিয়ে দিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব। এ কথা জানিয়ে অধীর চৌধুরী বলেন, “পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছে জেলা প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিবের নির্দেশ সত্ত্বেও কোনও পুরসভাতেই যাওয়ার অনুমতি দেয়নি। ফলে ঘরেই থাকতে বাধ্য হয়েছি। অথচ সেই প্রশাসনই অনুমতি দেওয়ায় মান্নান হোসেন ভোটের দিন জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদ পুরসভায় ঘুরে বেড়ালেন।”

পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ মানতে নারাজ মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক, তথা জেলা পুরসভা নির্বাচন আধিকারিক ওয়াই রত্মাকর রাও। তিনি জানান, কমিশনের নির্দেশিকা অনুসারে জেলার ৬টি পুরসভায় ভোটের দিনে গাড়িতে করে ঘোরার জন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলের ৬ জন অনুমতি পাওয়ার যোগ্য। ওই বিধি মেনে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে ৬ জনকে আগাম অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। তারপর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে অধীরবাবুর আবেদন বিবেচনার অনুরোধ করা হয়। কিন্তু কমিশনের নির্বাচনী বিধি মানতে গিয়েই অনুরোধ রক্ষা করা যায়নি। জেলাশাসকের দাবি, “আগাম অনুমতি দেওয়া ৬ জনের মধ্যে এক জনের নাম প্রত্যাহার করা হলে সেই জায়গায় অধীরবাবুকে অনুমতি দেওয়া যাবে বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাব তাঁরা গ্রহণ করেননি।”

কাঁচা হলুদ রঙের পাঞ্জাবি আর সাদা পাজামায় নায়কোচিত ভঙ্গিতে বড় ছেলে রাজীব হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে দিনভর শীততাপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে ঘুরলেন মান্নান। সপার্ষদ মুর্শিদাবাদ ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা দু’টিতে দাপিয়ে বেড়ালেন তিনি। মান্নান হোসেন মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেসকে ‘বোকার দল’ বলে কটাক্ষ করে বলেন, “ভোটের দিনে মুর্শিদাবাদ ও জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা দু’টিতে ঘুরব বলে মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লক এলাকার জন্য সরকারি অনুমতি নিয়েছিলাম। তার ফলে ভোট চলাকালীন বৈধ ভাবে দু’টি পুরসভায় ঘুরতে পেরেছি।” তবে, ভোটের দিনে কোনও পুরসভায় ঘোরার জন্য প্রশাসনিক অনুমতি চেয়ে আবেদন করেননি সিপিএমের মুর্শিদাবাদ জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য এবং বিজেপি-র জেলা সভানেত্রী মালা ভট্টাচার্য। কেন? মৃগাঙ্কবাবু বলেন, “সরকারি দেহরক্ষী থাকায় গাড়ি নিয়ে কোনও পুরসভা এলাকায় ঘোরার অনুমতি মিলবে না। এ কারণে অনুমতির জন্য আবেদন করিনি।” তবে ভোর থেকেই দলের জঙ্গিপুর কার্যালয়ে ঘাঁটিতে ছিলেন। সেখান থেকেই ফোনে জেলার ৬টি পুরসভার ভোট পরিচালনা করেন।

কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে গিয়ে মন্ত্রী হয়েছিলেন দলের প্রাক্তন জেলা কার্যকরী সভাপতি হুমায়ুন কবীর। তারপরে তাঁর মন্ত্রীত্ব গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মুখ খুলে তিনি এখন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত। বহিষ্কৃত হলেও এখনও নিজেকে তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করেন। শক্তিপুর থানার নারকেলবাড়ি গ্রামের বাড়িতে স্বেচ্ছাবন্দি ছিলেন তিনি। হুমায়ুন বলেন “বিনা নিমন্ত্রণে গুরুগৃহেও যেতে নেই। পুরভোটে খাটার জন্য দলের কেউ কিছু বলেনি। তাই খাটিনি।” তবে তাঁর অনুগামীরা খাটছেন বলে তিনি জানান।

Adhir Chowdhury Mriganka Bhattacharya CPM Trinamool BJP Congress Anal Abedin
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy