ফাইল চিত্র।
সুযোগ পেয়েই শনিবার মুর্শিদাবাদের নদী ভাঙন নিয়ে বাজেট অধিবেশনে সরব হলেন লোকসভায় কংগ্রেস পরিষদীয় দলের নেতা অধীর চৌধুরী। ভাঙন রোধে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ দাবি করে নদী ভাঙনকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে বিবেচনা আর্থিক সাহায্য বরাদ্দ করা হোক মুর্শিদাবাদের জন্য দাবি জানান অধীরের। একই ভাবে এবারের বাজেট প্রস্তাবে দেশে যে ৭টি মেগা টেক্সটাইল পার্ক তৈরির কথা বলা হয়েছে তার একটি মুর্শিদাবাদ জেলায় তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন অধীর। কারণ দেশের মধ্যে পাট উৎপাদনে মুর্শিদাবাদ অন্যতম বৃহত্তম জেলা। টেক্সটাইল পার্ক তৈরি হলে জেলার পাটচাষি লাভবান হবে।
শনিবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন জবাবি ভাষণ দেওয়ার আগে অধীরবাবু মুর্শিদাবাদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মুর্শিদাবাদ জেলায় নদী ভাঙন এক ভয়াবহ সমস্যা। বিশেষ করে গঙ্গা ও পদ্মার ভাঙন। অন্তত ১১টি ব্লক রয়েছে নদী পাড়ে যেখানে ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তাদের পুনর্বাসন একটা বড় সমস্যা এজেলায়। ১৯৩১ থেকে ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৬,৭৬৯ হেক্টর জমি ও কয়েকটি গ্রাম তলিয়ে গেছে নদী গর্ভে। ২০০৪ সাল পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৩৫৬ কিলোমিটার জমি।
লক্ষাধিক মানুষ ঘর ছাড়া হয়েছে এই ভাঙনে। গত বছর ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জের অন্তত ১০টি গ্রামের হাজার খানেক পরিবার গৃহহীন হয়েছেন।
এখনও তারা তাঁবুর নীচে দিন কাটাচ্ছেন। লোকসভায় বাজেট অধিবেশনে জেলার এই ভাঙন পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে অধীর বলেন, “ বছরের পর বছর ভাঙনের ফলে জেলার ভৌগোলিক মানচিত্রের পরিবর্তন ঘটছে। রাজ্য সরকার বলছেন কেন্দ্রীয় সরকার ভাঙন রোধে অর্থ দিচ্ছে না। তাই কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে অধীরের আর্জি, কেন্দ্রীয় আর্থিক সাহায্য ছাড়া ভাঙন সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। তাই ভাঙন সমস্যাকে জাতীয় সমস্যা হিসেবে দেখা হোক।”
এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ৭টি মেগা টেক্সটাইল পার্ক করার প্রস্তাব দিয়েছেন।কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে অধীর বলেন , “দেশের মধ্যে সর্ব বৃহৎ পাট উৎপাদনের জেলা মুর্শিদাবাদ। সিনথেটিক ফাইবার নিয়ে চিন্তিত সারা দেশ। তাই পাটকে দেশের মধ্যে সোনার ফাইবার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বাজেটে প্রস্তাব করা হয়েছে দেশে ৭টি টেক্সটাইল পার্ক করার কথা। এর একটি মুর্শিদাবাদ জেলায় করা হোক,যাতে বঞ্চিত পাট চাষিরা উপকৃত হয়।”
রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাট চাষ হয় মুর্শিদাবাদ জেলায়। ভাল অর্থকরী ফসল পাট যার সঙ্গে জড়িয়ে জেলার লক্ষাধিক চাষি। প্রায় ১.০৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয় জেলায়। পাটের গড় উৎপাদন প্রায় ১৩.৩১ লক্ষ বেল।
টেক্সটাইল পার্ক গড়ে তোলা হলে জেলায় পাট চাষে আগ্রহ বাড়বে চাষিদের মধ্যে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy