প্রতীকী ছবি।
নদিয়ার দুই কোভিড হাসপাতালে সুষ্ঠু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে মাঠে নামতে হল কর্তাদের। বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দফা নির্দেশিকা জারি করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ)। তার আগে, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর উপস্থিতিতেই দুই হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে জেলাশাসক জানান, ঠিক মতো দায়িত্ব পালন না করলে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের শাস্তির মুখে পড়তে হবে।
গত সেপ্টেম্বরে জেলার দুই কোভিড হাসপাতালে মৃত্যুর হার যথেষ্ট উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ। শুধু এই এক মাসেই ৪০ জনেরও বেশি আক্রান্ত মারা গিয়েছেন। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, দিন দুয়েক আগে স্বাস্থ্যসচিব জেলার সঙ্গে বৈঠকে একাধিক কর্তাকে ভর্ৎসনা করেন। হাসপাতালে কেমন চিকিৎসা হচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা কেন বাড়ছে, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। এর পরেই তৎপর হয়ে ওঠেন জেলার কর্তারা।
বৃহস্পতিবার ভিডিয়ো কনফারেন্সে যুক্ত করা হয়েছিল জেলা ও কল্যাণী জেএমএম হাসপাতালের সব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে। জেলা প্রশাসনের একটি সূত্রের দাবি, জেলাশাসক বিভু গোয়েল সেখানে জানান, প্রয়োজনে চিকিৎসকদের শো-কজ করা হবে। সন্তোষজনক উত্তর না পেলে সাসপেন্ড বা তার চেয়েও কড়া পদক্ষেপ করা হতে পারে। শুক্রবার তিনি বলেন, “চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি মেনে নেওয়া হবে না।” রাতে সিএমওএইচ বলেন, “সুষ্ঠু চিকিৎসা নিশ্চিত করতে যা প্রয়োজন,
সবই করা হচ্ছে।”
বেশ কিছু দিন ধরেই নদিয়ার দুই কোভিড হাসপাতালে পরিষেবা নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রের দাবি, কিছু চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করলেও এক শ্রেণির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে গাফিলতির বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। যেমন, দিনে দু’বার রাউন্ড দেওয়ার কথা থাকলেও এঁরা এক বারের বেশি আসেন না। বেড টিকিটে চিকিৎসা সংক্রান্ত বিষয় বিশদে লেখেন না। রোগীর অবস্থায় হঠাৎ খারাপ হলেও হাসপাতালে আসতে চান না বা দেরি করে আসেন।
সিএমওএইচ অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দিনে দু’বার রাউন্ড দিতেই হবে এবং রাউন্ডে গিয়ে তাঁকে ভিডিয়ো কল করতে হবে। ২৪ ঘণ্টা ল্যাবরেটরি চালু রাখতে হবে, দ্রুত প্রয়োজনীয় পরীক্ষা করে ফেলতে হবে। রিপোর্ট এলে প্রয়োজনে ‘অন কল’ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে ফের হাসপাতালে আসতে হবে। প্রতিটি বেড টিকিটে বিস্তারিত ভাবে সব লিখে তার ছবি তুলে পাঠাতে হবে। ‘কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এ তথ্য তোলার সময়ে উপস্থিত থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে।
নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, কেউ সংক্রমিত হয়েছেন তা নিশ্চিত হওয়ার ছয় ঘণ্টার মধ্যে তাঁর প্রাথমিক অবস্থা বুঝে নিতে হবে। অবস্থা তুলনামূলক ভাল হলে বাড়িতেই চিকিৎসার অনুমতি দেওয়া হতে পারে। সেফ হোমের রোগীদের সিবিসি, ইসিজি, হিমোগ্লোবিন, রক্তচাপ পরীক্ষা দ্রুত সেরে ফেলতে হবে। আগে থেকে কোনও রোগ থাকলে তার চিকিৎসাও চালাতে হবে। ‘অন কল’ মেডিক্যাল অফিসারকে ২৪ ঘণ্টা সজাগ থাকতে বলা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy