Advertisement
E-Paper

‘কেন্দ্রের উপর আস্থা আছে’, সিজিএসটি হানা নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের জাকির, কী হল সাড়ে ১০ ঘণ্টায়?

ব্যবসায়ী, বিধায়ক জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দিতে বিপুল পরিমাণ নগদ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের অভিযান নিয়ে তিনি জানান, তদন্তে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩১
Jakir Hossain

জাকির হোসেন। —ফাইল চিত্র।

দু’বছর আগে তাঁর অফিস, কারখানা এবং বাড়িতে হানা দিয়েছিল আয়কর দফতর। উদ্ধার করে প্রায় ৯ কোটি টাকা। সে সময় বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করেন মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক জাকির হোসেন। মঙ্গলবার প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টা ধরে বিড়ি ব্যবসায়ী জাকিরের অফিস এবং কারখানায় হানা দেন সিজিএসটি আধিকারিকেরা। অভিযোগ পণ্য ও পরিষেবা কর ফাঁকি। মঙ্গলবার রাত ২টোর কিছু পরে বেশ কিছু নথি নিয়ে বিধায়কের অফিস ছাড়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল। মুর্শিদাবাদ তৃণমূল জেলা নেতৃত্ব বলছেন, কেন্দ্রের শাসকদলের ষড়যন্ত্রে এই অভিযান হয়েছে। কিন্তু জাকিরের গলায় অন্য সুর।

সিজিএসটি-র হানা নিয়ে বুধবার সকালে জাকির জানান, তিনি তদন্তে সহযোগিতা করেছেন। কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়েছেন। আচমকা হানায় ব্যবসায়িক ভাবে তাঁর ক্ষতি হয়েছে জানিয়েও বিধায়ক বলেন, ‘‘কেন্দ্রের প্রতি আস্থা আছে।’’

মঙ্গলবার বিকেল ৪টে নাগাদ জাকিরের ঔরঙ্গাবাদের প্রোডাকশন হাউসের অফিসে হানা দেন জিএসটি বিভাগের আট জন আধিকারিক। অফিস চত্বর ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানেরা। ঘণ্টাখানেক তল্লাশি চালানোর পরে সেখান থেকে বিধায়কের আরও দু’টি অফিসে অভিযান চালায় তদন্তকারী দল। নথিপত্র খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় একাধিক অফিসকর্মীদের। অফিসের প্রধান হিসাবরক্ষককে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বিধায়কের অন্য একটি ব্যবসায়িক অফিসে গিয়ে জাকিরের সঙ্গেও কথা বলেন তদন্তকারীরা। রাতে মিনিট পনেরোর জন্য এক বার বাড়ি ফিরেছিলেন বিধায়ক। কিছু ক্ষণ বাদেই আবার একটি অফিসে যান তিনি। তখন সঙ্গে বেশ কিছু নথিপত্র নিয়ে যান। ব্যবসায়ী ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে কর ফাঁকি দিতে বিপুল পরিমাণ নগদ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। সে জন্য তাঁর ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট ইত্যাদিও দেখেন কেন্দ্রীয় আধিকারিকেরা। এই অভিযান নিয়ে জাকির বলেন, ‘‘আধিকারিকেরা তাঁদের কাজ করেছেন। আমি সহযোগিতা করেছি। আট ঘণ্টা ধরে আমি এক জায়গায় উপস্থিত থেকেছি।’’

তৃণমূল বিধায়কের দাবি, তিনি আইন মেনে ব্যবসা করেন। জাকির বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট পরিমাণ জিএসটি এবং আয়কর দিই। প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন আমার কারখানায়। তাঁদের রুটিরুজির ব্যাপার আছে। তাই সব কিছু আইনের গণ্ডিতে না মেপে কর্মসংস্থানের কথাটাও ভাবতে হবে। শ্রমিকরা কাজ চলে যাওয়ার আতঙ্কে রয়েছেন। সেই ভয় দূর করার দায়িত্ব তদন্তকারীদের।’’ এই তদন্ত কি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করছেন তিনি? জঙ্গিপুরের তৃণমূল বিধায়ক বলেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রের উপরে আমার যথেষ্ট আস্থা আছে। তারা যত খুশি তদন্তকারী দল পাঠক। তবে হঠাৎ করে না-পাঠিয়ে চিঠি দিয়ে আগাম জানালে ভাল হয়। কারণ, এই রকমের অভিযানে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘প্রত্যেক আধিকারিক আমাকে সহযোগিতা করেছেন। আশা করব, তাঁরা সঠিক রিপোর্ট দিয়ে তাঁদের কর্তব্য পালন করবেন।’’ বিধায়ক জানান, তাঁকে ডাকা হয়নি। তবে যে দিন ডাকা হবে, সে দিনই তদন্তকারীদের কাছে যাবেন।

অন্য দিকে, জাকিরের বাড়ি, কারখানা এবং অফিসে কেন্দ্রীয় আধিকারিকদের হানা নিয়ে জেলা তৃণমূলের অন্যতম নেতা কানাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘তৃণমূল করেন বলেই ওঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করে তৃণমূলের ভাবমূর্তি নষ্ট করার চক্রান্ত করছে বিজেপি। মানুষ এর সঠিক জবাব দেবে।’’

Jakir Hossain TMC BJP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy