আবার ভিন্রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার অভিযোগ। আবার বাংলাদেশি সন্দেহে ওড়িশার জেলে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদের ১৭ জন শ্রমিককে।
শ্রমিকদের পরিবারের দাবি, বৈধ পরিচয়পত্র থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশি বলে লালগোলা এবং রঘুনাথগঞ্জের ১৭ জন শ্রমিককে রবিবার থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাতভর তাঁদের থানায় আটকে রেখে অত্যাচার করা হয়। এ নিয়ে জেলা পুলিশ-প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক ঐক্য মঞ্চ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আসিফ ফারুক বলেন, ‘‘প্রথমে শ্রমিকদের ওড়িশার কেন্দ্রপড়া থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে আলাদা আলাদা করে কেন্দ্রপড়া টাউন, কেন্দ্রপড়া সদর, রাজনগর এবং আরও একটি থানায় রাখা হয়েছিল। তার মধ্যে কেন্দ্রপড়া থানায় রাখা হয়েছিল ১২ জনকে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সকলের মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয় বলে খবর পেয়েছি। ঠিকাদার শ্রমিকদের সঙ্গে দেখা করতে গেলে তাঁকেও আটক করে হেনস্থা করেছে পুলিশ।’’
সম্প্রতি শমসেরগঞ্জের কয়েক জন শ্রমিক একই পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। ভগবানগোলার ১১ জন শ্রমিকও প্রতিবেশী রাজ্যে হেনস্থার শিকার হন বলে অভিযোগ। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁদের আটকে রাখা হয়েছিল। রাজ্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপে গত বুধবার বিকেলে তাঁরা সকলে ছাড়া পান। ওড়িশায় আটকে থাকা এক শ্রমিক সইফুদ্দিন মোমিনের ভাই নাসিম আনসারি বলেন, ‘‘কাজের জন্য আমাদের এলাকার অনেকেই কটক যান, কেউ কেউ ভুবনেশ্বর যান। গত ২০-৩০ বছর ধরে অনেকে কাজ করছেন ওখানে। আগে কোনও দিন এই ঘটনা ঘটেনি। মহিশাস্থলি গ্রামের ১০ জন ও সুতি থানার বাহাগুলপুর গ্রামের দু’জনকে আটকে রাখা হয়। খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়নি। তথ্য যাচাইয়ের জন্য ওদের কুঁড়েঘরে রেখে দেওয়া হয়েছিল বলে জেনেছি। সবাইকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটকে রাখা হয়।’’
শ্রমিকদের দাবি, তাঁদের কাছে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড-সহ সমস্ত নথিপত্র রয়েছে। সে সব খুঁটিয়ে দেখেও হয়রানি করছে পুলিশ। অনুপ্রবেশকারী বলে মিথ্যা সন্দেহে বন্দি করে রাখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
জেলা পুলিশ সূত্রে খবর, তাদের হস্তক্ষেপে ওই শ্রমিকেরা মুক্ত হয়েছেন। ফরাক্কার মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শেখ শামসুদ্দিন বলেন, ‘‘ওড়িশায় যাঁদের অবৈধ ভাবে আটকে রাখা হয়েছিল, ওই রাজ্যের পুলিশের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সকলকে মুক্ত করা হয়েছে। তাঁদের অভিযোগ খতিয়ে দেখছি আমরা।’’