Advertisement
E-Paper

নিকাশির বালাই নেই, জলের তলায় জনপদ

বেরিয়ে যাওয়ার পথ না পেয়ে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা এলাকা থেক ধেয়ে আসা জলে ভাসছে মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্ত এলাকার বসতি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:০৬

বেরিয়ে যাওয়ার পথ না পেয়ে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা এলাকা থেক ধেয়ে আসা জলে ভাসছে মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমান্ত এলাকার বসতি। এ ছাড়াও ওই জলের তলায় তলিয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদ পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সীমানা ঘেঁষা জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশ ও পাশের কাপাসডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার হাজার বিঘা জমির আমন ধান। নদীর জলে নয়, ওই তল্লাটের এই রকম দশা হয়েছে কয়েক দিনের বৃষ্টির জল জমে। প্রায় প্রতি বর্ষায় বৃষ্টির জল জমে ওই তল্লাটের লোকজনের ভোগান্তি ও ফসলের ক্ষতি হলেও এ বারে মতো এতো খারাপ অবস্থা এর আগে কখনও হয়নি বলে স্থানীয়দের দাবি। ওই দু’টি পুরসভার একাংশের জমা জল পঞ্চায়েত এলাকার খেতিজমির উপর দিয়ে গিয়ে পডত লালবাগ-লালগোলা রাজ্য সড়ক পার হয়ে গোবরানালায়। তার ফলে ওই প্রবাহ পথের মাঝখানে বেশ কয়েক বিঘা জমির ফসল প্রতি বারই নষ্ট হত। ওই ক্ষতি আটকাতে ধানচাষের বদলে মাছচাষের জন্য ওই প্রবাহ পথের মাঝখানে বেশ কয়েক বিঘা জমি জুড়ি এ বছর খনন করা হয়েছে বিশাল পুকুর। সেই নয়া পুকুরের পাড়ে বাধা পেয়ে জল নিকাশির দশা এ বার আগের থেকে যথেষ্ট বেহাল। তার ফলেই এ বার জলমগ্ন লাগোয়া দু’টি পুরসভার ২টি ওয়ার্ডের আংশিক ও পঞ্চায়েতের সীমান্ত এলাকা।

ই সমস্যার কথা জানেন কাপাসডাঙা পঞ্চায়েত প্রধান তৃণমূলের অপর্ণা মণ্ডল থেকে শুরু করে জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ ও মুর্শিদাবাদের দুই পুরপ্রধান— যথাক্রমে তৃণমূলের শঙ্কর মণ্ডল ও কংগ্রেসের বিপ্লব চক্রবর্তী এবং জেলাপরিষদের সভাধিপতি কংগ্রসের শিলাদিত্য হালদার পর্যন্ত সবাই। ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার এলাকার জমাজল আগে বাগডহরা দিয়ে বেরিয়ে যেত। বর্তমানে দিক পরিবর্তন করে সেই জল ফেলা হচ্ছে ১ নম্বর ওয়ার্ডে। পঞ্চায়েত এলাকার খেতিজমি ভাসিয়ে সেই জল চলে যায় গোবরানালায়। কিন্তু এ বছর সেই খেতিজমির বিশাল অংশ জুড়ে খনন করা হয়েছে পরান দাসের পুকুর। ফলে সেই পুকুর পাড়ে ধাক্কা খে্য়ে আর বের হতে না পেরে জলে ডুবেছে বাড়িঘর ও খেতিজমি। আমারই ২৫ বিঘা ধান ৩-৪ দিন ধরে জলের তলায়। এখন সেই ধান পচতে বসেছে।’’ কাপাসডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অপর্ণা মণ্ডলেরও অভিযোগ, জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভার বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদের পুরপ্রধান বিপ্লব চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জ পুরসভা এলাকার জলেই ডুবেছে ওই এলাকা। সে কথা শঙ্কর মণ্ডলকে জানিয়েওছি।’’

জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের রপ্রধান শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘নতুন করে কোনও এলাকা দিয়ে শহরের জমা জল বের করা হয় না। বরাবরের মতোই পুরনো ব্যবস্থায় জল নিকাশি করা হয়। ব্যক্তি মালিকানার জমিতে পুকুর খনন করায় সমস্যা এ বার তীব্র হয়েছে। ওই সমস্যা সমাধানের জন্য পঞ্চায়েত এলাকা দিয়ে নিকাশি নালা তৈরি করতে হবে। তার জন্য জেলাপরিষদকে ওই কাজের দায়িত্ব নিতে হবে।’’ দুই পুরপ্রধানকে সঙ্গে নিয়ে মাস দুয়েক আগে ওই এলাকা সরজমিনে ঘুরে দেখেন জেলাপরিষদের সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার। শিলাদিত্য বলেন, ‘‘ওই নিকাশি সমস্যার সমাধানের জন্য দুই পুরসভা, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত ও জেলাপরিষদকে মিলিত ভাবে উদ্যাোগ নিতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন মহকুমাশাসকের নেতৃত্বে যৌথ বৈঠক। সরজমিনে এলাকা ঘুরে দেখার সময় সেই কথা হয়েছিল। মহকুমাশাসকের উপস্থিতিতে ওই বৈঠক ডাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল শঙ্করবাবুকে। কিন্তু আজও তিনি ওই বৈঠকের ব্যবস্থা করতে পারেননি। ফলে সমস্যারও কোনও সুরাহা হয়নি।’’ ফলে জলে ভাসছে দুটি পুরসভা ও একটি পঞ্চায়েতের সীমান্ত এলাকা।

Amon paddy cultivation rain Water log
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy