পাকড়াও অভিযুক্ত। রানাঘাটে শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
ভূমি দফতরের রাজস্ব আধিকারিকের কথা মতো সাধারণ মানুষের থেকে টাকা তোলার ঘটনায় এক জনতে হাতেনাতে ধরলেন রানাঘাটের পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে অভিযুক্ত ব্যক্তি রাজস্ব আধিকারিকের সামনেই টাকা তোলার বিষয়টি জানায়। রানাঘাটের মহকুমাশাসক হারিস রশিদ বলেন, "বিষয়টি বিভাগীয় তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
প্রতিবেশীদের সঙ্গে জমি নিয়ে মামলা হোক কিংবা নথিপত্র গরমিল থাকায় জমির নামপত্তন না হওয়া— দিনের পর দিন রানাঘাট ১ ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে ঘোরাঘুরি করছেন অনেকে। এঁদের কাজ হাসিল করার জন্য মোটা টাকা নেওয়ার দালাল চক্র কাজ করছে, দীর্ঘদিন ধরে এমন অভিযোগ ছিলই। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দফতর বিষয়টি জেনেও ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।
রানাঘাট শহরের বাসিন্দাদের একাংশকেও জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ওই দফতরের উপর নির্ভর করতে হয়। ভুক্তভোগী আবেদনকারীদের কাছে টাকা চাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন পুরপ্রধান। শুক্রবার সকালে সুদর্শন ঘোষ নামে এক জনকে টাকা-সহ হাতেনাতে ধরা হয়।
শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাকলি মজুমদারের সঙ্গে এক প্রতিবেশীর জমি সংক্রান্ত বিষয়ে মামলা চলছে। তার জন্য ভূমি সংস্কার দফতরকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠায় আদালত। দফতরের হয়ে রাজস্ব আধিকারিক মিলন মণ্ডল ওই মহিলার বাড়িতে সরেজমিন পরিদর্শনে যান।
কাকলির অভিযোগ, "রাজস্ব অধিকারিকের সঙ্গে সুদর্শন ঘোষ নামে এক ব্যক্তি ওই দিন আমাদের বাড়িতে গিয়েছিল। পরে আমি অফিসে এলে রাজস্ব আধিকারিক আমায় সুদর্শনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন। আমি সুদর্শনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে ও আমার কাছে দু’হাজার টাকা চায়। তার বিনিময়ে ওরা আমার পক্ষে আদালতের রিপোর্ট পাঠাবে বলে।”
এ দিন তিনি সেই টাকা সুদর্শনকে দেওয়ার সময়ে ভূমি সংস্কার অফিসের বাইরে হাতেনাতে ধরে ফেলেন পুরপ্রধান। জানা গিয়েছে, সুদর্শন দফতরের কোনও কর্মী নয়। সে রাজস্ব আধিকারিকের হয়ে কাজ করত বলে অভিযোগ। পুরপ্রধান কোশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "ভূমি সংস্কার দফতরের টাকা না দিলে কোনও কাজ হয় না, এমন অভিযোগ আসছিল। বিষয়টি আমি মহকুমাশাসককেও জানিয়েছিলাম। তারপর এ দিন ফন্দি করে হাতেনাতে এক দালালকে ধরে ফেলি। এদের জন্য সরকারের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে।"
অভিযুক্ত সুদর্শন ঘোষের দাবি, “রাজস্ব আধিকারিক মিলন মণ্ডলের কথা মতো আমি এই কাজ করেছি। যা টাকা পাই সবটাই ওই আধিকারিকের হাতে তুলে দিই।” তবে রাজস্ব আধিকারিক মিলন মণ্ডলের পাল্টা দাবি, “আমি কখনও কাউকে টাকা তুলতে বলিনি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy