Advertisement
E-Paper

migrant workers: স্বপ্ন ভঙ্গ, আপেল বাগান এখন গোচারণ ভূমি

শুকিয়ে যাওয়া সরকারি কৃষি খামারের সেই বাগানে এখন চড়ছে গরু, ছাগল। একই অবস্থা ধুমার পাহাড় ও কাবিলপুরের বাগানেরও। 

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৩৪
আপেল বাগানের এখন অবস্থা।

আপেল বাগানের এখন অবস্থা।

সাজানো আপেল বাগান শুকিয়ে কাঠ এক বছরেই। কর্মসংস্থানের লক্ষে গড়ে তোলা বাগান এখন গোচারণ ভূমি।

জঙ্গিদের গুলিতে কাশ্মীরে আপেল বাগানে কাজে যাওয়া বাহালনগরের ৫ শ্রমিকের মৃত্যুর পরে জেলা প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল কাশ্মীর যাওয়া আটকাতে সাগরদিঘিতে আপেলের বাগান গড়ে স্থানীয় শ্রমিকদের কাজ দেওয়া।।

বহু ঘটা করে বাহালনগরের শতাধিক শ্রমিককে কাজ দিতে সাগরদিঘির রূক্ষ মাটিতে বানানো হয়েছিল আপেলের বাগান গতবছরের জানুয়ারিতে। ৯০০ গাছ লাগিয়ে আড়াই বছরেই আপেল ফলাবার প্রত্যাশা জাগিয়েছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। আশ্বাস ছিল আর কাশ্মীরে যেতে হবে না বাহালনগরের বাসিন্দাদের। তাঁরা কাজ পাবেন সাগরদিঘির আপেল বাগানেই। এক বছরেই সেই প্রত্যাশার ফানুস ফেটে চৌচির।

শুকিয়ে যাওয়া সরকারি কৃষি খামারের সেই বাগানে এখন চড়ছে গরু, ছাগল। একই অবস্থা ধুমার পাহাড় ও কাবিলপুরের বাগানেরও।

একশ দিনের প্রকল্পে ওই তিন বাগান বানাতে খরচ হয়েছিল প্রায় ১৫ লক্ষ টাকারও বেশি। মোটা টাকা দিয়ে কিনে আনা হয়েছিল আপেলের গাছ। ব্লক অফিসের জন কয় কর্মীকে ভিন রাজ্যে পাঠিয়ে আপেল গাছের পরিচর্যার প্রশিক্ষণও দিইয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল। বাগান দেখভালের জন্য নিয়োগ করা হয় কয়েক জন মজুরও। কিন্তু বছর ঘুরতেই সাধের বাগান শেষ। স্বপ্ন ভঙ্গ বাগালনগরেরও।

গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশকে দেখেই বাঁকুড়ার তিন ব্লকে ২০১৮ সালে পোঁতা হয়েছিল সবুজ আপেলের গাছ। তা দেখেই সাগরদিঘিতে আপেল ফলানোর ভাবনা মাথা চাড়া দিয়েছিল প্রশাসনের। সাগরদিঘিতে আপেল চাষের এই উদ্যোগে প্রশাসনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন বাহালনগরের নুর সালাম। মিরাঠে প্রশিক্ষণও নিয়ে আসেন। অন্তত ২০ বছর ধরে কাশ্মীরে বছরে দশ মাস করে থেকেছেন তিনি বাগান পরিচর্যায়। বছর ঘুরতেই স্বপ্ন ভঙ্গ ঘটেছে নুর সালামেরও। তাই এবার ফের তিনি কাশ্মীরে। বলছেন, “বাগান গড়তে দরদ লাগে। সেই দরদটাই তো ছিল না সাগরদিঘিতে।”

বন দফতরের এক কর্তা বলছেন, “গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের আবহাওয়ার তেমন ফারাক নেই। ওই দুই রাজ্যে সফল হয়েছে সবুজ আপেলের চাষ। তা দেখেই বাঁকুড়ার সিমলাপোল, ওন্দা ও রানীবাঁধ ব্লকে লাগানো হয়েছে সবুজ আপেলের চারা। যথেষ্ট ভাবে বেড়ে উঠেছে সে গাছ। সাগরদিঘিতে লাগানো হয়েছিল আন্না প্রজাতির আপেল গাছ। আড়াই বছরের মধ্যেই ফলন শুরু হয় তাতে। সাগরদিঘিতে যা হয়েছিল তা বাহালনগরের আড়াইশো শ্রমিককে কাজ দিতে পারত না ঠিকই, কিন্তু একটা নতুন পথ খুলে দিত ভবিষ্যতের জন্য।”

দীর্ঘদিন মুর্শিদাবাদের মাটিতে উদ্যান পালন দফতরে উদ্যান বিদ বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেছেন শুভদীপ নাথ। বর্তমানে রয়েছেন হুগলিতে। তিনি বলছেন, “ নানা প্রজাতির আপেলে ১০ ডিগ্রির নীচে ঠান্ডা লাগে বছরে ৬০০ থেকে ৮০০ ঘণ্টা। কিন্তু সাগরদিঘির আন্না প্রজাতিতে বছরে ২০০ ঘণ্টা ঠান্ডা পেলেই ছিল যথেষ্ট। ৪৫ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা সহনশীল ছিল আন্নার গাছ। গাছে জলের পরিমাণও কম লাগে। এই প্রকল্প সফল হলে রাজ্যের সর্বত্র আপেল চাষের যে সম্ভাবনা তৈরি হত।’’

Migrant Workers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy