Advertisement
E-Paper

শ্বশুরবাড়ি বলে পাশের রাজ্যে অবাধ যাতায়াত

পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ি আটকালেই একগাল হেসে জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে জবাব আসে, ‘‘শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছি। সঙ্গে মিষ্টি আর কিছু জিনিসপত্র রয়েছে।’’

বিমান হাজরা

শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:২৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

লুকিয়ে পাশের দেশে বা পাশের রাজ্যে যাতায়াত মুর্শিদাবাদে নতুন কথা নয়। কিন্তু তা দেখার জন্য আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ এবং রাজ্যের সীমানায় পুলিশ রয়েছে। কিন্তু অনেকেই দিনদুপুরে বুক ফুলিয়ে গাড়ি নিয়ে সড়ক পথে সোজা পাশের রাজ্যে চলে যাচ্ছেন, এমন নজিরও কম নেই। কেন ছাড় পান তাঁরা? পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ি আটকালেই একগাল হেসে জানলা থেকে মুখ বাড়িয়ে জবাব আসে, ‘‘শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছি। সঙ্গে মিষ্টি আর কিছু জিনিসপত্র রয়েছে।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এমন কথা শুনে পুলিশও আর বেশি তল্লাশি না করেই ছেড়ে দেয়। কিন্তু এলাকায় এনআইএ-র তল্লাশি ও ৯ জনকে গ্রেফতারের পরে প্রশ্ন উঠেছে, এ ভাবেও কি দুষ্কৃতীদের একটি যাতায়াতের রাস্তা তৈরি হয়ে যাচ্ছে?

প্রশ্নটা যে অমূলক নয় তার প্রমাণ, বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে ধৃত ৬ জনের মধ্যে ৪ জনেরই বিয়ে হয়েছে ঝাড়খণ্ডে।

শমসেরগঞ্জে ভুরি ভুরি বিয়ের নজির রয়েছে ঝাড়খণ্ডে। এলাকার এক শিক্ষক বলছেন, “অন্তর্দীপা শমসেরগঞ্জে, পাশের গ্রাম কাবিলপুর ঝাড়খণ্ডে। ভবানীপুর ঝাড়খণ্ডে তো পাশের গ্রাম অদ্বৈতনগর শমসেরগঞ্জে। সেই কারণেই ধুলিয়ানের বহু বিয়ে হয় ঝাড়খণ্ডে। তাই ঝাড়খণ্ডের বহু গ্রামের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে শমসেরগঞ্জের। যাতায়াতও চলে। কিন্তু সেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশে দু‌ষ্কৃতীরাও যাতায়াত করছে কি না, তা কে বলবে?’’ তেমনই এক উদাহরণ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় সংস্থার অফিসাররা। তাঁরা জানাচ্ছেন, কাঁকুরিয়ার ধৃত শিক্ষককের বিয়ে হয়েছে ঝাড়খণ্ডে বহু দূরের এক গ্রামে। বছরের বেশির ভাগ সময় শ্বশুরবাড়িতেই সে থাকত। তার খোঁজে শ্বশুরবাড়িতেও হানা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্থা। কিন্তু নাগাল পায়নি। এরপরই শমসেরগঞ্জে নজরদারি শুরু করে তদন্তকারী সংস্থা। এলিজাবাদ গ্রাম থেকে আরও এক জনকে গ্রেফতার করা হয় বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে। মাধ্যমিক পাশ বছর ২৩ বয়সের ওই যুবকের একটি কাপড়ের দোকান রয়েছে স্থানীয় বাজারে। এলাকায় শান্ত, নিরীহ ছেলে হিসেবেই পরিচিত সে। ঝাড়খণ্ডে তার যাতায়াত ছিল সপ্তাহে অন্তত চার দিন। তদন্তকারী সংস্থা বলছে, বুদ্ধগয়া বিস্ফোরণে এলাকার সকলকে একত্রিত করে উদ্বুদ্ধ করেছিল সে। রতনপুর থেকে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। দুজনের সঙ্গেই জামাতুল মুজাহাদিন বাংলাদেশ নামক নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়। দু’জনেরই শ্বশুরবাড়ি ঝাড়খণ্ডেই। ৫০টি বৈদ্যুতিক ডেটোনেটর, ২৫ ইমালসন এক্সপ্লোসিভ, সুপার পাউডার ৯০ ইন জেল, ৩৭টি ৭.৬৫ এমএম সহ বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রের তাজা গুলিমিলেছে। সন্দেহ এ সব সংগ্রহ করা হয় ঝাড়খণ্ড থেকেই শ্বশুরবাড়িতে ঘাঁটি গেড়েই। তাই এ বারও সেই একই পথে কেউ পালিয়েছে কি না, খোঁজ করছে পুলিশ।

Terrorists Jharkhand
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy