Advertisement
E-Paper

স্কুলের জলে আর্সেনিক, পড়তে এসে বিষ শরীরে

নদিয়া-মুর্শিদাবাদ জুড়ে মাত্রাছাড়া আর্সেনিকের দাপটে বহু স্কুলের পানীয় জল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি থেকে আনা জল ফুরিয়ে গেলে তৃষ্ণায় গলা ফাটলেও ছোট ছেলেমেয়েগুলোর জল খাওয়ার জো নেই। কারণ, জলের সঙ্গেই শরীরে ঢুকবে গরল।

কল্লোল প্রামাণিক ও সুজাউদ্দিন

শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৫৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

পড়াশোনা শেখার জন্য স্কুলে আসছে পড়ুয়ারা, আর শিক্ষার সঙ্গে নিজেদের শরীরে আর্সেনিকের বিষ নিয়ে ফেরত যাচ্ছে!

নদিয়া-মুর্শিদাবাদ জুড়ে মাত্রাছাড়া আর্সেনিকের দাপটে বহু স্কুলের পানীয় জল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাড়ি থেকে আনা জল ফুরিয়ে গেলে তৃষ্ণায় গলা ফাটলেও ছোট ছেলেমেয়েগুলোর জল খাওয়ার জো নেই। কারণ, জলের সঙ্গেই শরীরে ঢুকবে গরল। স্কুলের পানীয় জলে আর্সেনিক প্রতিরোধক যন্ত্র বসানোর ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরে বারংবার অনুরোধ করেও লাভ হয়নি বলে জানিয়েছেন একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষ।

জলে মাত্রাছাড়া আর্সেনিক ধরা পড়ায় প্রায় দশ মাস আগে নদিয়ার হোগলবেড়িয়ার যাত্রাপুর তারক শিক্ষা নিকেতনের একমাত্র নলকূপটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষক মদনমোহন সাহা জানান, পড়ুয়া-শিক্ষক সকলেই বাড়ি থেকে জল নিয়ে আসতে হয়। পরিশুদ্ধ জলের অভাবে মিড-ডে মিলের রান্না করতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক দূর থেকে রান্নার জল আনতে হচ্ছে। প্রশাসনকে জানানোই সার। কোনও সাড়া মেলেনি।

সকালে স্কুলে আইসিডিএস সেন্টার চলে। সেখানে ছোট শিশুরা আসে। তারাও জল পায় না। কেন্দ্রের সহায়িকা সুচিত্রা দাস বলেন, ‘‘প্রতিদিন এখানে প্রায় ৮০ জনের খাবার তৈরি হয়। রান্নার জল, বাসন মাজার জল—সব বয়ে আনতে হয়। খাওয়ার পর হাত ধোওয়ার জন্য বাচ্চাগুলোকে দূরে যেতে হয়।’’ স্কুলের শিক্ষক রাজেশ প্রামানিক জানান, মাস খানেক আগে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর থেকে একটি পানীয় জলের লাইনের সংযোগ দেওয়া হয়েছে স্কুলের বাইরে রাস্তার পাশের কলে। কিন্তু সেখানেও অধিকাংশ সময়ে জল থাকে না। স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির কুদ্দুস সর্দার, দ্বিতীয় শ্রেণির প্রতিভা ঘোষ জানায়, তারা বাড়ি থেকে বোতলে যে জল নিয়ে আসে তা দ্বিতীয় বা তৃতীয় পিরিয়েডেই শেষ হয়ে যায়। খেলার পরে আরও গলা শুকোয়, কিন্তু স্কুলের কল থেকে জল খাওয়া বারণ।

ডোমকলেও আর্সেনিক ভয়াবহ আকার নিয়েছে। বহু স্কুলের নলকূপের জল দূষিত। জলঙ্গি উত্তর চক্রের শীতানগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫৮ জন ছাত্রছাত্রী আর্সেনিক যুক্ত বিষ জল খাচ্ছে নিয়মিত। স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার করিম সাদাত বলেন, ‘‘২০১২ সালে স্কুলের জল পরীক্ষা করে দেখা যায় প্রচুর আর্সেনিক আছে। পঞ্চায়েতের তরফে একটি ৯ পাইপের নলকূপ বসানো হয়। কিন্তু পরে দেখা যায়, তার জলেও আর্সেনিক আসছে।’’ জলঙ্গির হরেকৃষ্ণপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ইজাজ আহম্মেদ বলেন, ‘‘স্কুলের মোট ২৬৩ জন ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের আর্সেনিক মেশা জল খেতে হচ্ছে। মিড-ডে মিলের রান্নাও হচ্ছে ওই বিষ জলেই। পাশের এমএসকে স্কুলেও প্রায় ৩০০ ছাত্র ছাত্রীকেও ওই জল খেতে হচ্ছে।’’

School Water Arsenic আর্সেনিক
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy