অকেজ আর্সেনিকমুক্ত কল। —নিজস্ব চিত্র
পানীয় জলের জন্য আর্সেনিক-মুক্ত গভীর নলকূপ রয়েছে। অথচ, সেই কল থেকে মেলে না পানীয় জল। এই ছবি খোদ রানাঘাট-২ ব্লক অফিসের। তীব্র দাবদাহে অফিসে আসা মানুষজনকে গলা ভেজাতে পানীয় জলের জন্য অফিসের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ছুটে বেড়াতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। বছরের পর বছর অফিস চত্বরে আর্সেনিক-মুক্ত গভীর নলকূপ অকেজ থাকলেও কেন তা সংস্কার হচ্ছে না, বর্তমান সময়ে এই প্রশ্ন অনেকেই তুলেছেন।
সোমবার দুপুর প্রায় সাড়ে ১২টা নাগাদ রানাঘাট-২ বিডিও অফিসে শংসাপত্রের জন্য এসেছিলেন পানিখালির বাসিন্দা সঞ্জীব দাস। খালি জলের বোতল নিয়ে তাঁকে বিডিও অফিসের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘোরাঘুরি করতে দেখা গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ২০ টাকা দিয়ে এক বোতল পানীয় জল কিনে পান করেন তিনি। সঞ্জীব বলেন, ‘‘বাড়ি থেকে জল নিয়ে বেরিয়েছিলাম। অফিসে আসার আগেই তা শেষ হয়ে যায়। খালি বোতল ব্যাগে রেখেছি। যাতে অফিসের কল থেকে জল নিতে পারি। অথচ, এখানকার আর্সেনিক-মুক্ত পানীয় জলের কল থেকে জল ওঠে না। বিকল্প কোনও জলের কলও নেই। উপায় না পেয়ে জল কিনতে হল।’’
আবার, এ দিনই জাতি শংসাপত্রের আবেদন জমা দিতে আসা ধানতলার এক স্কুল পড়ুয়া বলে, ‘‘সব অফিসেই এখন ঠান্ডা জলের মেশিন বসানো রয়েছে। অথচ, এই অফিসে কেউ এলে গলা শুকিয়ে গেলেও পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই।’’
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, ব্লক অফিসের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতরে কেন থাকবে না পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা? প্রতি দিন অফিসে আসা সাধারণ মানুষকে কেন পানীয় জলের জন্য আশপাশের চায়ের দোকানের উপরে নির্ভরশীল হতে হবে?
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, অফিসে ঢোকার মুখে সরকারি আর্সেনিক-মুক্ত পানীয় জলের কল বিকল হয়ে থাকলেও এই গরমে তা কেন সংস্কার করা হয়নি?
অফিসের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘জলের কল অনেক বছর আগেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। তার পর তা মেরামত হয়নি। তা ছাড়া, বর্তমানে অফিসের বিভিন্ন ঘরে কেনা পানীয় জলের জার রাখা রয়েছে। কর্মী থেকে আধিকারিকেরা ওই জলই পান করছেন।’’ জানা গেল, বছরে সেই কেনা পানীয় জলের জন্য খরচ হচ্ছে এক লক্ষ টাকারও বেশি।
কেন পানীয় জলের এমন অব্যবস্থা? রানাঘাট-২ বিডিও খোকন বর্মন বলেন, ‘‘আর্সেনিক-মুক্ত অকেজো জলের কলটি মেরামত সম্ভব নয়। নতুন করে একটি আর্সেনিক-মুক্ত নলকূপ বসানো হয়েছে। সেটি চালু হলেই জলের সমস্যা মিটবে।’’
তাঁর আরও দাবি, ‘‘পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে কেউ আমার কাছে অভিযোগ জানাননি।’’
যদিও স্থানীয় বাসিন্দারা অনেকেই জানাচ্ছেন, খোদ সরকারি দফতরে যেখানে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে, সে কথা আধিকারিকদের অভিযোগ জানালে তবেই তাঁরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কেন?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy