উদ্বিগ্ন: তখনও নিখোঁজ তিন। ডোমকলের গরিবপুরে। শুক্রবার। ছবি: সঞ্জীব প্রামাণিক
ফের নৌকাডুবিতে যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। বছর দুয়েক আগে পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়ার মাঝে কালনাঘাটে ভাগীরথীতে ভুটভুটি ডুবির পর রাজ্য সরকার জল-পথে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলেছিল। নজরদারির ফাঁক-ফোকর দিয়ে ডোমকলের মধ্য গরিবপুরে ভৈরব নদীতে অনুমোদনহীন এবং অবৈধ ফেরিঘাট চালু ছিল। সে ঘাটে বৃহস্পতিবার দূর্ঘটনায় ৩ জন যাত্রী নিখোঁজ। বাসিন্দাদের দাবি, যদি অবৈধ ফেরিঘাট হয়, তা হলে প্রশাসন তা বন্ধ করেনি কেন? শুধু অনুমোদনহীন ফেরিঘাট নয়, অনুমোদন আছে এমন ঘাটেও প্রশাসনের নির্দেশ মানা হচ্ছে না। প্রশাসন এখনই ওই সব ফেরিঘাটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে আর ও সমস্যা হতে পারে।
রাজ্যের পরিবহণ দফতরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলছেন, “বর্ষার সময় নদিয়া-মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব বর্ধমানের কিছু এলাকায় অবৈধ ফেরিঘাট হয়ে যায়। তা বন্ধ করার জন্য আমরা পুলিশকে বলেছি।” মন্ত্রী জানান, এ ধরণের ফেরিঘাট বন্ধে শুধু পুলিশ প্রশাসনই নয়, স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মকর্তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক পি উলাগানাথন বলছেন, “ঘাট থেকে ৫০০ মিটার দূরেই সেতু রয়েছে। কিন্তু সেই সেতু ব্যবহার না করে ফেরিঘাট ব্যবহার করছিল। ওই ঘাট অবৈধ ভাবে চলছিল। যারা সেটি চালাচ্ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁর দাবি, প্রতিটি ফেরিঘাটে প্রশাসন নজরদারি চালায়। তা সত্ত্বেও অনেক সময় কিছু ফেরিঘাট নিয়ম মানছে না। জেলাশাসকের দাবি শুক্রবারও পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকরা গিয়ে নানা ফেরিঘাট পরিদর্শন করেন।
বছর দু’য়েক আগে রাজ্যের পরিবহণ দফতর ‘মডেল স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর’ (এসওপি) নামে একটি নিয়মবালি ও নির্দেশিকা জেলায় জেলায় পাঠিয়েছে। তাতে ফেরি ঘাটে নির্দেশিকা ও ভাড়ার তালিকার বোর্ড লাগানো, সিসিটিভি, পানীয় জল-আলোর ব্যবস্থা, নৌকার বহন ক্ষমতা অনুযায়ী যাত্রীকে টিকিট দেওয়া, নৌকায় লাইফ জ্যাকেট, মাঝির পরিচয়পত্র, তাঁদের পোশাক দেওয়া-সহ একাধিক নির্দেশ দেওয়া হয়। আর এ জন্য মুর্শিদাবাদ জেলায় ৫১টি ফেরিঘাটকে ১০ লক্ষ করে টাকা দেয় রাজ্যের পরিবহণ দফতর। প্রশাসনের কর্তারা জানান, দফতরের নির্দেশ মত জেলার ৫১টি ফেরিঘাটে ১০টি করে লাইফ জ্যাকেট, লাইফ বয়া, সিসিটিভি, মাইকিং, পানীয় জল, রাতে চলাচলের জন্য আলোসহ নানা ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪২ টি ফেরিঘাটে ‘এসওপির’ কাজ শেষ হয়েছে, ৭টিতে কাজ চলছে, দু’টি প্রস্তাব পরিবর্তন করে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। ফেরি ঘাটে নজরদারি চালানোর জন্য ৬৮ জন জল সাথী নিয়োগ করা হয়েছে। তবে ফেরিঘাটগুলিতে ‘এসওপি’ মানা হয় না বলেও অভিযোগ উঠছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy