প্রতীকী ছবি।
বিয়ের প্রস্তুতি চলছে। পড়শি থেকে আত্মীয়-পরিজনের ভিড়ে বিয়ে বাড়ি তখন সরগরম। আচমকা সেখানে হাজির সুতি ১ -এর বিডিও। সঙ্গে বিশাল পুলিশ বাহিনী দেখে চমকে ওঠেন পাত্রী পক্ষের লোকজন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা দাঁড়িয়ে থেকে নাবালিকার বিয়ে ভেস্তে দিলেন। মঙ্গলবার ওই ঘটনার জেরে সুতি-১ ব্লকের নয়া বাহাদুরপুর গ্রামে হইচই পড়ে যায়। যদিও নাবালিকার বাবা ১৮ বছরের আগে মেয়ের বিয়ে দেবেন না বলে প্রশাসনের কাছে লিখিত জানান।
সুতির সাদিকপুর হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রীর গায়ে হলুদ হয়ে গিয়েছিল সোমবারই। ওই সন্ধ্যেতেই চাইল্ড লাইনের কর্মীরা বিষয়টি জানতে পারেন। তাঁরা ব্লক প্রশাসন জানান। মঙ্গলবার সকালেই নয়াবাহাদুরপুর গ্রামে হাজির হন বিডিও রবীন্দ্রনাথ বারুই। পাত্রপক্ষ তখনও এসে হাজির হননি। কিন্তু আত্মীয়-পরিজনের ভিড়ে বিয়ে বাড়ি তখন সরগরম। রান্নার সুগন্ধে ভরেছে চারিদিকে। চলছে মাংস রান্না। ঠিক তখনই বাড়ির সামনে গাড়ি থেকে পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তাদের নামতে দেখে বিয়ে বাড়ির লোকজন তখন অবাক হয়ে যান। বাড়িতে ঢুকেই নিজের পরিচয় দিয়ে বিডিও পাত্রীর বাবাকে ডেকে পাঠান। নাবালিকার বাবা খাইরুল আলম এসে হাজির হন। তত ক্ষণে কৌতূহলীদের ভিড় জমে যায় বাড়ির সামনে। ভিড়ের সামনে বিডিও-র মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নাবালিকা পাত্রী। পাত্রীর মা গোলেনুর বিবি জানান, তিন মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ের বিয়ে। আগামী নভেম্বরে তার ১৬ বছরে পা দেবে। পাত্র পেশায় রাজমিস্ত্রি। ভাল আয় করে। তাই বিয়ে ঠিক করেছিলাম।
নাবালিকার পড়াশোনার ব্যাপারে যাবতীয় সাহায্য করার কথা জানান বিডিও। কিন্তু বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হননি অভিভাবকেরা। তখন সুতি থানার এক পুলিশ কর্তা জানান, কম বয়সে মেয়ের বিয়ে দিলে জেল হেফাজত হবে। তাতেই কাজ হয়। মেয়ের ১৮ বছরের আগে বিয়ে না দেওয়ার কথা জানিয়ে লিখিত দেন পাত্রীর বাবা। বিডিও বলছেন, “মেয়েদের ১৮ বছরের নিচে বিয়ে যে নিষিদ্ধ এটাই জানা নেই গ্রামবাসীদের। বাল্য বিবাহ নিয়ে এলাকায় সচেতনতার প্রয়োজন রয়েছে।” চাইল্ড লাইনের টিম লিডার এসলাম আনসারি বলছেন,“ অক্টোবর মাসেই ৬টি বিয়ে বন্ধ করা হল এই নিয়ে। গত দশ মাসে ব্লকে বন্ধ বিয়ের সংখ্যা ১৫টি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy