E-Paper

‘কাজ দিন’, আর্জি মহারাষ্ট্র-ফেরত পরিযায়ীর

বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপরে মারধরের অভিযোগ ওঠার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার আর্জি জানান।

সুদেব দাস

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ০৮:৩৫
নেপাল মিস্ত্রি। বুধবার। রানাঘাটে।

নেপাল মিস্ত্রি। বুধবার। রানাঘাটে। ছবি: সুদেব দাস।

ঠিক ছিল, পুজোর আগে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু মহারাষ্ট্রে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ধরপাকড় ও হেনস্থা শুরু হতেই আতঙ্কিত হয়ে নদিয়ার গ্রামে ফিরে এসেছেন নেপাল মিস্ত্রি।

কিন্তু দিন গুজরান হবে কী করে? মঙ্গলবার ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ শিবিরে গিয়ে হাজির হন রানাঘাট ২ ব্লকের শ্যামনগর পঞ্চায়েতের আরআইসি কলোনির বাসিন্দা নেপাল। তাঁর আর্জি— “স্যর, আমার জন্য কিছু কাজের একটা ব্যবস্থা করে দিন!” ব্লক প্রশাসন থেকে নেপালকে এক সপ্তাহের মতো চাল-ডাল দেওয়া হয়। রানাঘাট ২ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, “আমরা ওঁর কথা লিপিবদ্ধ করেছি। প্রাথমিক ভাবে তাঁকে সাহায্য করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনকেও জানিয়েছি।”

বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশি সন্দেহে বাংলাভাষী শ্রমিকদের উপরে মারধরের অভিযোগ ওঠার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রামে বুধবারেও বলেছেন, ‘‘অন্য রাজ্যে বাঙালি শ্রমিকেরা অত্যাচারিত হচ্ছেন। আমরা তাঁদের ফিরিয়ে এনেছি।’’ নেপাল বলেন, “বাইরে বাঙালি শ্রমিকদের উপরে অত্যাচার চলছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথা শুনে মনে হয়েছে, এখানেই দু’মুঠো খাওয়ার সংস্থান হয়ে যাবে।”

বছর দশেক আগে প্রথম নির্মাণ-শ্রমিক হিসেবে কেরলে যান নেপাল। তার পরে বেঙ্গালুরু হয়ে মহারাষ্ট্রের শোলাপুরে। কিন্তু সেখানকার পরিস্থিতি দেখে বাড়ি ফিরেছেন। এ দিন কীর্তিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ‘আমাদের পাড়া’ শিবিরে গিয়ে আধিকারিকদের কাছে বলেন, “অবস্থা দেখে বাধ্য হয়ে গ্রামে ফিরে এসেছি স্যর। এখন সংসার চলবে কী করে?” দেশভাগের পরে কুপার্স ক্যাম্পে এসে ঠাঁই পায় তাঁর পরিবার। সেখানেই তাঁর জন্ম। এখন বয়স বছর ষাটেক। তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। তাঁর সঙ্গী শুধু স্ত্রী সুচিত্রা। বলেন, ‘‘১৯৮৯ সালে উদ্বাস্তু ত্রাণ ও পুনর্বাসন দফতর বসতজমির পাট্টা দেয়। কাগজ বলতে ওটুকুই সম্বল।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Jobless harassment Migrant Workers West Bengal government

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy