Advertisement
E-Paper

বহরমপুরে কাটল উড়ালপুলের জট

অবশেষে বহরমপুর শহরের চুঁয়াপুর রেলগেটের উপর উড়ালপুল ও ভাগীরথীর উপর আজিমগঞ্জ-নশিপুর রেলসেতুর শাপমোচন হতে চলেছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্প দু’টির কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৬ ০২:৪৭

অবশেষে বহরমপুর শহরের চুঁয়াপুর রেলগেটের উপর উড়ালপুল ও ভাগীরথীর উপর আজিমগঞ্জ-নশিপুর রেলসেতুর শাপমোচন হতে চলেছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্প দু’টির কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। প্রকল্প নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছেন পূর্ব রেলের শিয়ালদহ বিভাগের মুখ্য বাস্তুকার অজয় কুমার। তিনি বলেন, ‘‘মাঝপথে আটকে থাকা প্রকল্প দু’টির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।’’

ওই দু’টি প্রকল্প শেষ হলে যাত্রী পরিষেবার পাশাপাশি মুর্শিদাবাদ ও পড়শি জেলা নদিয়ার আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামোর উন্নতির দ্বার খুলে যাবে। তবে প্রকল্পের জট ছাড়াতে কম কাঠখড় পোড়াতে হয়নি!

বহরমপুর শহরের পূর্ব সীমানা ঘেঁষে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর চলে গিয়েছে রেলের শিয়ালদহ বিভাগের লালগোলা-কৃষ্ণনগর শাখা। বহরমপুর শহরের দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তে চুঁয়াপুর ও সেখান থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে শহরের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে পঞ্চানতলা মিলে রয়েছে দু’টি রেলক্রসিং। তার মধ্যে পঞ্চাননতলা রেলক্রসিং-এর উপর দিয়ে চলে গিয়েছে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক।

লালগোলা-কৃষ্ণনগর শাখা দিয়ে দিনে ৩২টি ট্রেন চলে। ফলে দেড় কিলোমিটার তফাতে দু’টি রেলক্রসিং দিনে ৩২ বার বন্ধ থাকায় জানজটে হাঁসফাঁস দশা মানুষের। ফলে ওই দুই রেলক্রসিং-এর উপরে উড়ালপুলের দাবি উঠছিল কয়েক দশক ধরে।

অবশেষে অধীর চৌধুরী রেল প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন উড়ালপুল তৈরির জন্য টাকা ৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। সরকার অধিগৃহীত সংস্থা ‘রুফ অ্যান্ড ব্রিজ’-কে প্রকল্প নির্মানের বরাত দেওয়া হয়।

অধীর চৌধুরী ২০১৩ সালের ১৫ অগস্ট তিনটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘রাজ্য প্রকল্পের নকশার অনুমোদন আটকে দেওয়ায় কাজ বন্ধ থাকে।’’ তারপর কংগ্রেসের শিক্ষক নেতা গোলাম মুস্তাফা সরকার জনস্বার্থ মামলা করলে হাইকোর্ট কাজ শুরুর নির্দেশ দেয়। নির্দেশের প্রসঙ্গ তুলে দ্রুত কাজ শুরুর জন্য বর্তমান রেলমন্ত্রী সুরেশকুমার প্রভূর কাছে আবেদন করে কংগ্রেস। সেই আবেদনে সাড়াও মেলে।

আর বছর ছয়েক আগে ৯০ কোটি টাকা খরচ করে ভাগীরথীর উপর নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। এ বার় প্রয়োজন লিঙ্করোড। মুর্শিদাবাদ স্টেশন থেকে রেলসেতুর পূর্বপাড় পর্যন্ত এবং রেলসেতুর পশ্চিমপাড় থেকে আজিমগঞ্জ জংশন পর্যন্ত দু’টি লিঙ্করোড় মিলে মোট সাড়ে ৪ কিলোমিটার প্রস্তাবিত রেলপথের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৫০ একর জমি।

পূর্বপাড়ে ৪৩ একর জমি অধিগ্রহণ করে প্রায় ৪ কিলোমিটার লিঙ্করোড নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় বছর চারেক আগে। কিন্তু ৭ একর জমির জট না খোলায় পশ্চিমপাড়ের প্রায় ৪০০ মিটার লিঙ্করোড নির্মাণের কাজ বিশ বাঁও জলে। রেলমন্ত্রী এই প্রকল্পটিও শুরুর ব্যাপারে সবুজ সংকেত দিয়েছেন।

পূর্বরেলের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই জমির সিংহভাগই মিলেছে। গত বাজেটে ওই প্রকল্পের জন্য আরও ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে।’’ রেলসেতু চালু করার দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন ‘সিটি মুর্শিদাবাদ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি’র সম্পাদক স্বপন ভট্টাচার্য। মামলাটি বিচারাধীন। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘কাজ শুরু হলেই মামলা তুলে নেব।’’

স্বপনবাবু জানান, প্রস্তাবিত নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু নদীর দু’পারের রেলের দু’টি বিভাগের সংযুক্তিকরণের পাশাপাশি রেলপথে কলকাতা বা শিয়ালদহ থেকে উত্তরবঙ্গ ও উত্তর-পূর্ব ভারতের দূরত্ব প্রায় ২৫ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। রেলসেতু তৈরি হলে দিল্লিগামী ট্রেন ধরতে মুর্শিদাবাদ ও নদিয়ার যাত্রীদের কলকাতায় ছুটতে হবে না।

২০০৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর রেলসেতুর শিলান্যাস করেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। সে দিন বলা হয়েছিল চার বছরের মধ্যেই চালু হবে ওই সেতু। কিন্তু আজও তা চালু না হওয়ায় ক্ষোভ রয়েছে এলাকার মানুষের মধ্যে।

Berhampore flyover
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy