E-Paper

২০০২-এ গরহাজির বেশি মতুয়া বলয়েই

যাঁদের ‘ম্যাপিং’ হল না, তাঁদের এ বার নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী নথি দেখাতে হবে।

সুস্মিত হালদার

শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৪:২৪
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনে (এসআইআর) এখনও পর্যন্ত যে তথ্য উঠে আসছে তাতে মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারের মতোই ‘ম্যাপিং’ (২০০২ সালের তালিকায় নিজের বা পূর্বপুরুষের নাম অমিল) না হওয়া ভোটারের ক্ষেত্রেও অনেকটাই এগিয়ে বিজেপির গড় দক্ষিণ নদিয়া।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরের সংখ্যালঘু প্রভাবিত এলাকা থেকে দক্ষিণের মতুয়া ও নমঃশূদ্র প্রভাবিত এলাকায় ২০০২ সালের তালিকায় ভোটারের নিজের বা তাঁর বাবা-মা কিংবা ঠাকুরদা-ঠাকুমার নাম ছিল না, এমন সংখ্যা অনেকটাই বেশি। অর্থাৎ এ ক্ষেত্রেও মতুয়া ও নমঃশূদ্রদের উপরেই বেশি কোপ পড়তে চলেছে বলে রাজনৈতিক মহলের এক অংশের আশঙ্কা। চূড়ান্ত তালিকাতেও যদি এই অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন না হয়, তা হলে দক্ষিণে বিজেপির ভোটব্যাঙ্কেই ধাক্কা লাগার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।

নদিয়া জেলার প্রায় ৪৪ লক্ষ ১৮ হাজার ভোটারের মধ্যে শুক্রবার বিকাল পর্যন্ত মৃত, অনুপস্থিত, স্থানান্তরিত বা অন্যান্য কারণে বাদ যাওয়া ভোটারের সংখ্যা প্রায় ১ লক্ষ ১৫ হাজার। এখনও পর্যন্ত প্রায় সাত লক্ষ আবেদনকারীর তথ্য ইলেক্টোরাল রোল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমে (ইআরএমএস) তোলা বাকি আছে। ফলে আগামী দিনে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে। এই বিশাল সংখ্যক নাম ভোটার তালিকা থেকে আগেই বাদ চলে যাবে। যার বেশির ভাগটাই মতুয়া, নমঃশূদ্র ও উদ্বাস্তু হিন্দু প্রভাবিত এলাকার। এর উপরে আছে বিশাল সংখ্যক ‘ম্যাপিং’ না হওয়া ভোটার, এখনও পর্যন্ত যাঁদের সংখ্যা প্রায় ২ লক্ষ ১২ হাজার।

যাঁদের ‘ম্যাপিং’ হল না, তাঁদের এ বার নির্বাচন কমিশনের চাহিদা অনুযায়ী নথি দেখাতে হবে। যাঁরা সেটা পারবেন না, তাঁদের নাম চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় থাকবে না। বিধানসভা-ভিত্তিক সংখ্যা সামনে আসার পর দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৭০ শতাংশ সংখ্যালঘু-প্রধান চাপড়ায় মাত্র সাড়ে তিন হাজারের কাছাকাছি নাম ‘ম্যাপিং’ হয়নি, আবার দক্ষিণে যেখানে প্রায় ৯০ শতাংশ হিন্দু, বিশেষত মতুয়াদের বাস, সেই রানাঘাট উত্তর-পূর্বে সংখ্যাটা প্রায় ২৬ হাজার। তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের মতে, “এটাই তো হওয়ার কথা। এসআইআর নিয়ে বিজেপির লম্ফঝম্পে সাধারণ মানুষকে ভুগতে হবে।” বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অপর্ণা নন্দী আবার বলেন, “কোনও যোগ্য হিন্দু ভোটারের নাম বাদ যাবে না। স্বরাষ্ট্র দফতর সেটা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছে।”

তবে এত সংখ্যক মানুষের শুনানি করা নিয়েও চিন্তিত জেলা প্রশাসনের কর্তারা। এখনও পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন এই বিষয়ে নতুন কোনও নির্দেশিকা না দেওয়ায় ধরেই নেওয়া হচ্ছে যে একমাত্র ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারেরাই (ইআরও) শুনানি করবেন। প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “হাতে খুব বেশি হলে ৪৫ দিন থাকবে। তার মধ্যে এক-এক জনের পক্ষে ২৫-২৬ হাজার শুনানি করা অসম্ভব!” তাঁর মতে, “এই সমস্ত কেন্দ্রগুলিতে প্রতি দিন অন্তত ১০ জনকে শুনানির দায়িত্ব দিতে হবে, যাঁরা প্রত্যেকে দিনে অন্তত ৬০ জনের শুনানি করবেন। তবেই সময়ে কাজ তোলা সম্ভব হবে। আমরা নির্বাচন কমিশনের দিকে তাকিয়ে আছি।”

নদিয়া জেলাশাসক অনীশ দাশগুপ্ত বলেন, “এ ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যা নির্দেশ দেবে, সেই মতো পদক্ষেপ করা হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

BJP Matua Community

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy