প্রতীকী ছবি।
বছর বাইশের তরতাজা ছেলেটা আচমকাই উধাও হয়ে গিয়েছিল। নানা জায়গায় খোঁজ করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, পেশায় তো গাড়ির চালক। হয়তো গাড়ি নিয়েই দূরে কোথাও বেরিয়েছে। কিন্তু মোবাইলে ফোন করেও সাড়া মেলেনি।
সোমবার সকালে সেই সরিফুল খানের (২২) দেহ মিলল নিজের ঘরেই। হরিহরপাড়ার হরিশপুর গ্রামের ওই ঘটনার পরে সরিফুলকে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর মা ও বাবার বিরুদ্ধেই। সরিফুলের স্ত্রী জান্নাতুন বিবি হরিহরপাড়া থানায় সরিফুলের মা, বাবা ও এক আত্মীয়ের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে সরিফুলের মা-বাবা পলাতক।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, ওই যুবককে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। দেহ এ দিন ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলে কী ভাবে খুন হয়েছে তা আরও স্পষ্ট হবে। পড়শিরা জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা তাঁদের গ্রামে এর আগে কখনও ঘটেনি। তাঁদের এক জনের কথায়, ‘‘সরিফুলের সঙ্গে তার মায়ের সম্পর্ক ভাল ছিল না। প্রায়ই অশান্তি হত। কিন্তু তার জন্য কেউ নিজের ছেলেকে খুন করে দিতে পারে তা ভাবতেই পারছি না।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সরিফুল অন্যের গাড়ি চালাতেন। বছরখানেক আগে তিনি বিয়ে করেছেন। তাঁর স্ত্রী জান্নাতুন বর্তমানে অন্তঃসত্ত্বা। সেই কারণেই তিনি তাঁর বাবার বাড়ি নবগ্রামে আছেন। স্বামী খুন হয়েছেন শুনে এ দিন তিনি হরিহরপাড়ায় আসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এঅকই বাড়িতে সরিফুল তাঁর স্ত্রী, মা ও বাবাকে নিয়ে থাকতেন। তাঁর মা অন্য একটি সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। তা মানতে পারেননি সরিফুল। সেই কারণেই পরিবারে প্রায়ই অশান্তি হত। সম্প্রতি সরিফুলের মায়ের সেই বন্ধুর সঙ্গে সরিফুলের হাতাহাতিও হয়। সেই ‘অপরাধে’ সরিফুলকে বাড়িও ছাড়তে হয়। কিছু দিন তিনি পাশেই কাকার বাড়িতে ছিলেন। পরে তিনি ফের বাড়ি ফিরে আসেন। বাড়ির একটা অংশে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আলাদা ভাবেই থাকছিলেন।
দিন কয়েক আগে সরিফুলের স্ত্রী বাবার বাড়ি চলে যান। তার পর থেকে তিনি ঘরে একাই থাকতেন। সোমবার সকালে সরিফুলের ঘর থেকে পচা গন্ধ পান পড়শিরা। তাঁরাই খবর দেন পুলিশকে। পুলিশ এসে ঘর থেকে সরিফুলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে এটা আত্মহত্যা নয় বলেই মনে হচ্ছে। সরিফুলের স্ত্রী জান্নাতুনের অভিযোগ, সরিফুলকে তাঁর মা-বাবা ও সেই বন্ধু মিলে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দিয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ঘটনার পরেও যেন ঘোর কাটছে না। তাঁরা বলছেন, ‘‘এ দিন সকাল থেকেই সরিফুলের ঘর থেকে দুর্গন্ধ আসছিল। তখনই সন্দেহ হওয়ায় পুলিশকে খবর দিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy