Advertisement
E-Paper

ভিন্‌ধর্মে সম্পর্ক মানতে চায়নি পরিবার, অবসাদে আত্মঘাতী প্রেমিক, খবর পেয়ে আত্মহত‍্যা প্রেমিকার

লালবাগ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আকলকার রাকেশ মহাদেব বলেন, ‘‘ভিন্ন ধর্মের দু’টি ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, পরিবার বিষয়টি মেনে নেবে না। ’’

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৫ ০২:০০
(বাঁ দিকে)  শাহবাজ হোসেন এবং দ্রোণী দাস (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) শাহবাজ হোসেন এবং দ্রোণী দাস (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

ভিন্‌ধর্মে প্রেম মানতে চায়নি পরিবার। সম্পর্ককে পূর্ণতা দিতে স্বাবলম্বী হতে চেয়েছিলেন যুবক। তবে চাকরির পরীক্ষা ভাল না হওয়ায় অবসাদগ্রস্ত প্রেমিক বেছে নিলেন আত্মহত্যার পথ। সেই খবর পেয়ে আত্মঘাতী হলেন প্রেমিকাও। বুধবার মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের ঘটনা।

কিরীটেশ্বরী পঞ্চায়েতের বাসিন্দা ছিলেন শাহবাজ হোসেন (২৪) ও দ্রোণী দাস (২২)। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সীমানাপাড়া এলাকার শাহবাজ ছিলেন জিয়াগঞ্জ শ্রীপৎ সিংহ কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। একই কলেজে পড়তেন কোঠার গ্রামের দ্রোণী। পাশাপাশি গ্রামের দু’জনের বন্ধুত্ব গড়িয়েছিল প্রেমের সম্পর্কে। তিন বছরের সম্পর্কের কথা হঠাৎ জানাজানি হয়ে যায় দুই পরিবারে। ভিন্‌ধর্মের সম্পর্ক মেনে নেয়নি কারও বাড়িতেই। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের মেলামেশা। দু’জনে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন স্বাবলম্বী হয়ে প্রেমের সম্পর্ককে পরিণয়ে রূপ দেওয়ার।

রবিবার সাব-ইনস্পেক্টর পদে লিখিত পরীক্ষা দিয়েছিলেন শাহবাজ। তবে পরীক্ষা ভাল হয়নি। এতেই ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। অবসাদগ্রস্ত যুবক সোমবার আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শাহবাজের বাবা জাকির বাইরে গিয়েছিলেন। মা গিয়েছিলেন বহরমপুরে দিদির বাড়িতে। সেই সময়েই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন যুবক। বাড়ি ফিরে ছেলেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পেয়েছিলেন বাবা। খবর পেয়ে প্রতিবেশীরা যুবকের দেহ উদ্ধার করে নবগ্রাম ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানেই শাহবাজকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।

প্রেমিকের আত্মহত্যার খবর পেয়ে সেখানে যেতে চেয়েছিলেন দ্রোণী। অভিযোগ, তাতে বাধা দিয়েছিল যুবতীর পরিবার। যাতে শাহবাজের বাড়ি না যেতে পারেন, তার জন্য তাঁকে বাড়িতে আটকে রাখাও হয়েছিল বলে অভিযোগ। দ্রোণীকে নজরে রাখার জন্য তাঁর বাবা-মা বাড়িতে নিয়ে এসেছিলেন যুবতীর দিদিকে। মঙ্গলবার বাড়ির সকলকে লুকিয়ে দোতলার ঘরে উঠেছিলেন দ্রোণী। সেখানেই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পরে পরিবারের লোকেরা তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করেন। কন্যাহারা বাবা খোকন কান্নায় ভেঙে পড়ে আক্ষেপ করেন, ‘‘মেয়েটা আমাদের কথা এক বারও ভাবল না।’’

ময়নাতদন্তের পরে সোমবার রাতে গ্রামেই সমাধিস্থ করা হয়েছিল শাহবাজকে। বুধবার আজিমগঞ্জ শ্মশান ঘাটে সৎকার হয় দ্রোণীর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

লালবাগ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আকলকার রাকেশ মহাদেব বলেন, “ভিন্ন ধর্মের দু’টি ছেলেমেয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, পরিবার বিষয়টি মেনে নেবে না। প্রথমে ছেলেটি আত্মঘাতী হয় বলে জানা গেছে। পরবর্তী সময়ে মেয়েটির আত্মহত্যার খবর পাওয়া যায়। দু’টি ঘটনাতেই অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।”

Suicide police investigation
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy