সকাল থেকে বিষণ্ণ ছিলেন তিনি। কেন যে বিএসএফ-এ চাকরি করতে এলেন— তা নিয়ে আক্ষেপও করেছিলেন সহকর্মীদের সঙ্গে। কিন্তু কেউ কল্পনাও করতে পারেননি, যে নিজের রাইফেল থেকেই গলায় গুলি করে আত্মঘাতী হবে মানুষটা।
রবিবার দুপুরে পুলিশ হরিয়ানার কোরাল এলাকার বাসিন্দা বিএসএফ জওয়ান প্রদীপ কুমার (২৫)-এর দেহ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের ধারণা পারিবারিক অশান্তির জেরে আত্মঘাতী হন ৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নে কর্তব্যরত ওই জওয়ান। আত্মঘাতী ওই যুবক সীমানগর হেড কোয়ার্টারে কর্তব্যরত ছিলেন। হেড কোয়ার্টারের পাশে বাড়ি ভাড়া করে স্ত্রী ও মাস আটেকের সন্তান নিয়ে তিনি থাকতেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই তার মেজাজ খারাপ ছিল। গ্রামের বাড়িতে জমি জায়গার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে বিবাদ চলছে দাদার সঙ্গে। তাই নিয়েই সে মানসিক ভাবে চাপে ছিল বলেই প্রাথমিক তদন্তের জানতে পারছে চাপড়া থানার পুলিশ। রবিবার আর পাঁচটা দিনের মতই তিনি হেড কোয়ার্টারে ডিউটিতে এসে ছিলেন। বেলা সাড়ে দশটা নাগাদ তিনি সেন্ট্রির ডিউটি বুঝে নেন। সেই সময় তিনি সহকর্মীদের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টাও করেছিলেন বলে বিএসএফের দাবি। কিছু সময় পরই আচমকা গুলির শব্দ শুনে সকলে তাকিয়ে দেখেন যে গলায় রাইফেলের নল ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে দিয়েছেন তিনি। খবর পেয়ে চাপড়া থানার পুলিশ এসে দেহ উদ্ধার করে।
এই ঘটনার পরে বিএসএফেরই কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন যে ছুটি সক্রান্ত কোনও বিষয় নিয়ে হতাশা থেকেই এমন চরম সিন্ধান্ত নিয়ে ফেলেননি তো ওই জওয়ান? সীমানগর হেড কোয়ার্টারের ডিআইজি ডি এল মিনা বলেন, “ছুটি নিয়ে সমস্যা ছিল না। দশ মাসে দু’বার বেশ কয়েক দিনের ছুটি নেনে তিনি। সম্ভবত পারিবারিক কোন কারণে তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন।”
জওয়ানদের আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগেও সীমান্ত এলাকায় একাধিক বার এই ভাবে নিজের সার্ভিস রাইফেল থেকে গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিএসএফ কর্তাদের একটা অংশ মনে করেন, দিনের পর দিন কড়া অনুশাসনের মধ্যে থেকে আত্মীয় পরিজন থেকে দূরে থেকে ডিউটি করার ফলে অনেকের মনেই একটা হতাশা তৈরি হয়। তখন বাইরের অন্য কোনও চাপ এলে তারা সেটা সামাল দিতে পারেন না। সেই চাপ থেকে অনেকেই আত্মহত্মার পথ বেছে নেন।