প্রতীকী ছবি।
সকাল থেকেই তাঁর মরার ইচ্ছে হচ্ছিল। সীমান্তে কর্তব্যরত বিএসএফ জওয়ানদের কাছে গিয়ে বলছিলেন, “আমাকে গুলি করো। আমি মরব।” গাঁয়ে পথচলতি মানুষকে বলছিলেন, “ওরে, তোরা আমার মেরে ফেল!”
যত্ত সব পাগলের প্রলাপ! কে আর তাতে কান দেয়?
মানসিক ভারসাম্যহীন লোকটিকে পাশ কাটিয়ে চলে গিয়েছিল সকলেই। সেই মানুষটাই যে এই ভর শীতের বিকেলে তিন ঘণ্টা ধরে গ্রামবাসীর ঘাম ছুটিয়ে দেবে, কে ভেবেছিল! কেউ যখন তার কথা কান দিল না, তিনি গিয়ে চড়ে বসলেন গাছের মগডালে। ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টায় নামানো গেল তাঁকে। হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন বিএসএফ জওয়ান আর পুলিশকর্মীরা।
হাঁসখালির বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া কুমারী গ্রামের বাসিন্দা তালেবর মণ্ডল। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অনেক দিন আগেই তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। গ্রামের রাস্তায় তাঁকে নিজের মনে ইতিউতি ঘুরতে দেখা যায়। শুক্রবার সকাল থেকে কেন তাঁর মরার ইচ্ছা জাগল, তা জানা নেই কারও। কেউ কান না দেওয়ায় সম্ভবত মরিয়া হয়ে তিনি নিজেই মরার চেষ্টা শুরু করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, গ্রামের এক প্রান্তে বিএসএফ ক্যাম্পের পাশে লম্বা আমড়া গাছ। সেই গাছের মগডালে উঠে একটা সরু ডালের উপরে দাঁড়িয়ে উপরে ডালের সঙ্গে মাফলার বেঁধে গলার সঙ্গে পেঁচিয়ে নেন তালেবর। নীচে উৎকণ্ঠিত জনতা। মরতে হলে তালেবরকে আদৌ ঝুলে পড়তে হবে না। পায়ের নীচের ডালটা ভেঙে পড়তে পারে যে কোন মুহূর্তে। সেটাই যথেষ্ট। কিছু ক্ষণের মধ্যে গাছের নীচে ভিড় জমে যায়। ক্যাম্প থেকে বিএসএফ জওয়ানেরাও চলে আসেন।
নানা ভাবে তালেবরকে গাছ থেকে নামানোর চেষ্টা চলতে থাকে। কিন্তু কোনও ভাবে তাকে নামানো যায় না! গাঁয়ের কেউ-কেউ গাছে ওঠারও চেষ্টা করেন। কিন্তু তালেবরের হাতে ছিল লাঠি। কেউ গাছে ওঠার চেষ্টা করলেই গলায় মাফলার পেঁচানো অবস্থায় সে লাঠি দিয়ে উপর থেকে খোঁচাতে থাকে। ফলে কেউই কোনও ভাবে কাছে ঘেঁষতে পারেনি।
অগত্যা খবর দেওয়া হয় হাঁসখালি থানার পুলিশকে। সকলে মিলে ঘণ্টা তিনেক টানাহেঁচড়ার পরে গ্রামের ভিতর থেকে একটা লম্বা মই জোগাড় করে আনে পুলিশ। তা দিয়ে গাছে উঠেই তালেবরকে নামানো হয়।
গাঁয়ের রবীন বিশ্বাস বলছেন, “প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছিল, এই বুঝি ডাল ভেঙে মানুষটা মাফলারের সঙ্গে ঝুলে পড়ল। শেষ পর্যন্ত তালেবরকে মাটিতে নামাতে পারায় সকলেই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছে।”
শেষ ভাল যার সব ভাল!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy