Advertisement
E-Paper

পর্যটনের ভিড় দেখছে শহর

এ যদি শীতে মায়াপুর-নবদ্বীপের চেহারা হয়, তা হলে পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের ছবি একটু দেখা যাক। বহরমপুর কিংবা লালবাগে এখন থেকেই ঠাঁই নেই রব। অবস্থা এমনই, পর্যটকদের আবদারে হানিমুন স্যুইট ছেড়ে দিতে হচ্ছে হোটেল মালিককে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২০
মামা! হেরিটেজ উৎসবে কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় বিদেশি পর্যটকের দল। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

মামা! হেরিটেজ উৎসবে কাশিমবাজার ছোট রাজবাড়ির সংগ্রহশালায় বিদেশি পর্যটকের দল। ছবি: গৌতম প্রামাণিক

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ। ভোরের কুয়াশায় হারিয়ে যাচ্ছে গঙ্গা-জলঙ্গির পাড়। গাছ থেকে সদ্য নামিয়ে আনা খেজুর রস। দু’পাক ঘুরে দুপুরের রোদে পিঠ দিয়ে খবরের কাগজ পেতে মন্দির চত্বরে কয়েকশো মানুষের সঙ্গে পঙ্‌ক্তি ভোজ। সন্ধ্যার পরে সুবিশাল নাটমন্দিরে সন্ধ্যারতি। সঙ্গে পদাবলি কীর্তনের অপূর্ব আবেশ।

এ যদি শীতে মায়াপুর-নবদ্বীপের চেহারা হয়, তা হলে পড়শি জেলা মুর্শিদাবাদের ছবি একটু দেখা যাক। বহরমপুর কিংবা লালবাগে এখন থেকেই ঠাঁই নেই রব। অবস্থা এমনই, পর্যটকদের আবদারে হানিমুন স্যুইট ছেড়ে দিতে হচ্ছে হোটেল মালিককে।

নবদ্বীপ-মায়াপুরে ছোটবড় নানা হোটেল, অতিথি শালা ভর্তি। আসন মিলছে না দুরপাল্লার ট্রেনে। বড় দিন, ইংরেজি নববর্ষ তো ঢের দূরে। তার আগে যে কোনও শনি ও রবিবারে মায়াপুর ইস্কনের কার পার্কিংয়ে ট্যুরিস্ট বাসের সংখ্যা এখন থেকে ভিড়ের বহর জানান দিচ্ছে। মায়াপুর, নবদ্বীপ, বেথুয়াডহরির সংরক্ষিত বনাঞ্চল, কৃষ্ণনগর রাজবাড়ি বা ক্যাথিড্রাল চার্চের প্রশস্ত প্রাঙ্গণে পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ছে এখন থেকেই।

আর তারই জেরে ইস্কনের সমস্ত ঘর ডিসেম্বরের গোড়া থেকে জানুয়ারি মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রায় ভর্তি। বছর শেষে বাড়তে থাকা ভিড় কার্যত বেসামাল করে দিচ্ছে প্রশাসন থেকে মঠ-মন্দির কর্তৃপক্ষ সকলকে। আর ঠিক এই কারণেই চওড়া হাসি পর্যটন ব্যবসায়ীদের মুখে। ফেডারেশন অফ বেঙ্গল হোটেলিয়ার্সের রাজ্য সম্পাদক প্রসেনজিৎ সরকার জানিয়েছেন, নবদ্বীপ, মায়াপুরে পর্যটকদের আসার প্রবণতা বহু গুণ বেড়েছে। তাঁর দাবি, আগের তুলনায় হোটেলের সংখ্যা, পরিষেবা উন্নত হয়েছে। সেই কারণেই শীতের শুরু থেকেই ভিড় বাড়ছে।

বহরমপুর ও লালবাগের বিভিন্ন হোটেলে ঘর কে কত আগে বুক করতে পারেন, চলছে সেই প্রতিযোগিতাও। আগামী ২৩-২৫ ডিসেম্বর তিন দিন ছুটি। আবার ৩০ ডিসেম্বর থেকে ১ জানুয়ারি টানা ফের তিন দিন ছুটি। ফলে এ বারের বছরের শেষটা যেন পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনা। আর এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইছেন না কেউই। বহরমপুরের রানিবাগান মোড় লাগোয়া নামী এক হোটেলের মালিক দিলীপ সাহা জানান, তাঁদের ৪০টি ঘর রয়েছে। কিন্তু বড় দিনের ছুটি ও বর্ষশেষের ছুটিতে আগাম বুকিং হয়ে যাওয়ায় বেশির ভাগ ঘরই ‘বুকড’। হানিমুন স্যুইট পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য ছেড়ে দিতে হচ্ছে। লালবাগের এক হোটেল মালিক আশিস রক্ষিত বলেন, ‘‘গত বছর নোট বাতিলে পর্যটকের দেখা মেলেনি। এ বার উল্টো চিত্র। এই মরসুমের অপেক্ষায় ছিলাম।’’

বহরমপুরের এক হোটেল মালিক দেবাশিস ঘোষ জানান, তাঁদের ৩৪টি রুম ‘বুকড’। কেউ ফোন করে ঘর চাইলে তাঁরা অন্য হোটেলের নম্বর দিয়ে দিচ্ছেন। এ দিকে ২৫ ডিসেম্বরের ছুটিতে মুর্শিদাবাদ বেড়াতে আসার হিড়িক মালুম হচ্ছে ট্রেনের টিকিট বুকিং দেখে। ২২-৩১ ডিসেম্বর পূর্ব রেলের কলকাতা থেকে লালগোলা হাজারদুয়ারি এক্সপ্রেস ট্রেনের ‘এসি-নন এসি’ কামরায় অপেক্ষারত যাত্রীর তালিকা দীর্ঘ। শিয়ালদহ স্টেশন থেকে লালগোলাগামী ভাগীরথী এক্সপ্রেস ট্রেনের হালও তথৈবচ।

Tourism Tourists Winter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy