Advertisement
০৪ জুন ২০২৪

খুনের তদন্তে মারের নালিশ

বর্ষশেষের সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। রাতে আর ফেরেননি। পরের দিন বাড়ির কাছে কলাবাগান থেকে মেলে কোতোয়ালির জালালখালির রানা চতুর্বেদীর (১৮) দেহ।

জখম: হাসপাতালে জীবন খাঁ। নিজস্ব চিত্র

জখম: হাসপাতালে জীবন খাঁ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০১৭ ০১:৩৭
Share: Save:

বর্ষশেষের সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। রাতে আর ফেরেননি। পরের দিন বাড়ির কাছে কলাবাগান থেকে মেলে কোতোয়ালির জালালখালির রানা চতুর্বেদীর (১৮) দেহ। এ বিষয়ে কারও নাম ছাড়াই খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই ঘটনার আজও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। ধরা পড়েনি অভিযুক্তেরাও।

উল্টে নিহতের আত্মীয়স্বজন ও এলাকার লোকজনকে থানায় ডেকে এনে মারধরের অভিযোগ উঠছে পুলিশের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রবিবার নিহতের মামা জীবন খাঁকে থানায় ডেকে মারধর করে পুলিশ। সোমবার কৃষ্ণনগরে একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করানো হয়। এই বিষয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার গ্রামের লোকজন নদিয়ার এসপি-র কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

কোতোয়ালির পুলিশ এমন অভিযোগ অস্বীকার করলেও পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলছেন, “আমি বাইরে আছি। কী অভিযোগ হয়েছে জানি না। তবে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।” এসপি-র আশ্বাস, ওই যুবকের খুনের ঘটনায় জড়িতদের সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।

জীবনের অভিযোগ, রবিবার ১০-১২ জনকে কোতোয়ালি থানায় ডেকে পাঠানো হয়। সে দিনও সবাইকে ছেড়ে দেওয়া হলেও জীবনকে থানায় রেখে দেওয়া হয়। রাতে লাঠি দিয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ। মৃতের দাদা ভাস্করবাবু বলছেন, “এর আগে এক দিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডেকে পুলিশ আমাকেও চড়-থাপ্পড় মেরেছে। উল্টে আমাদেরই মারধর করছে। এটা কেমন নিয়ম?’’

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জালালখালিতে রানাদের বাড়ির পাশের তাঁর তিন মামার বাড়ি। গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পেশায় ইলেকট্রিক মিস্ত্রি রানা মোটরবাইক নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে জালালখালি মোড়ে তাঁর ছোট মামা জীবন খাঁয়ের বন্ধ দোকানের সামনে রানার মোটরবাইক দেখা যায়। কিন্তু রানাকে দেখা যায়নি। রাতভর খোঁজ করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

পরের দিন বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ মিটার দূরে কলাবাগান থেকে রানার দেহ উদ্ধার হয়। তাঁর মাথায় ও ঘাড়ে ভারী কিছু দিয়ে আঘাত করা খুন করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। ডলিদেবী বলছেন, “আমার ছেলেকে কে খুন করেছে জানি না। তাই কারও নাম না করেই অভিযোগ করেছি। সেই ঘটনার কিনারা হল না। এ দিকে প্রায়ই লোককে ডেকে মারধর করা হচ্ছে।”

জেলা পুলিশের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিষয়টি পুলিশ সুপার জানেন। আর তাই কোতোয়ালি থানার উপরে একটা চাপ আছে।’’ এ দিকে, ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে দু’মাস। খুনের কিনারা হয়নি। এমনকী খুনটা কে বা কারা করেছে সেটাও পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, সেই ব্যর্থতা ঢাকতেই পুলিশ এমন অতিসক্রিয় হয়ে পড়েছে। যদিও পুলিশের পাল্টা দাবি, প্রাথমিক তদন্তে তারা বেশ কিছু সূত্র পেয়েছে। খুনের সঙ্গে কারা জড়িত তারও একটা আঁচ পাওয়া গিয়েছে। সেই কারণেই লোকজনকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, মারধর নয়।

লোকসভা নির্বাচন ২০২৪ সরাসরি: কার দখলে ‘দিল্লিবাড়ি’?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Murder Investigation Complain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE