চলছে চিকিৎসা। — নিজস্ব চিত্র
গ্রাম পঞ্চায়েতের এক নির্মাণ সহায়ককে মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যের বিরুদ্ধে। শনিবার বড়ঞা থানার ববরপুর গ্রামের ঘটনা। বড়ঞা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রহৃত ওই নির্মাণ সহায়ক বাসুদেব চৌধুরী ওই পঞ্চায়েতেরই তৃণমূল সদস্য বাহার শেখের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। বড়ঞার বিডিও রুডেন শেরিং লামা বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই তৃণমূল সদস্য।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বড়ঞা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের ববরপুর গ্রামে একটি মাটির রাস্তা সংস্কারের কাজ চলছিল। এ দিন সকালে সরেজমিনে সেই কাজ দেখতে গিয়েছিলেন নির্মাণ সহায়ক বাসুদেব চৌধুরী। অভিযোগ, বাসুদেববাবুর কাজ দেখতে যাওয়াতেই বেজায় চটে যান বাহার। বাসুদেববাবুর অভিযোগ, এ দিন ওই এলাকায় মাত্র ৪৫ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন। কিন্তু সুপারভাইজার তাঁকে জানান ১২০ জন কাজ করছেন। কিন্তু অনেকেই খেতে গিয়েছেন বলে তাঁদের দেখা যাচ্ছে না। এরপর দীর্ঘক্ষণ নির্মাণ সহায়ক অপেক্ষা করেও ৪৫ জনের বেশি শ্রমিকের দেখা পাননি।
এরপরেই বাসুদেববাবু জানিয়ে দেন যে, তিনি ৪৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন বলেই রিপোর্ট পাঠাবেন। অভিযোগ, সেই সময় তৃণমূলের ওই পঞ্চায়েত সদস্য বাহার শেখ ১২০ জন শ্রমিক কাজ করছেন বলেই রিপোর্ট পাঠাতে হবে বলে বাসুদেববাবুকে হুমকি দেন। বাসুদেববাবু রাজি না হওয়াই বাহার তাঁকে গালিগালাজ করেন। তারপর আচমকা শ্রমিকদের কাছ থেকে একটি কোদাল নিয়ে বাসুদেববাবুকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ।
বাসুদেববাবুকে প্রথমে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে বাসুদেববাবু বলেন, “কাজ করছেন ৪৫ জন। আর আমাকে লিখতে হবে ১২০। এটা কী করে সম্ভব! সেটা না করায় আমাকে ওই পঞ্চায়েত সদস্য কোদাল দিয়ে মারধর করেছেন। গোটা ঘটনাটি জানিয়ে আমি বিডিও-র কাছে অভিযোগও জানিয়েছি।” ঘটনা শুনেই বিডিও ওই এলাকায় যান। বড়ঞা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান কংগ্রেসের সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, “আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
অভিযোগ অস্বীকার করে পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের বাহার শেখের পাল্টা দাবি, “এলাকায় প্রায় সাড়ে চার লক্ষ টাকার কাজ হচ্ছে। নির্মাণ সহায়ক আমাকে ওই কাজের জন্য দু’লক্ষ টাকা চাইছেন। আমি দেব না বলতেই আমার সঙ্গে বচসা বাধে। আমি বাসুদেববাবুকে ধাক্কা দিয়েছি মাত্র।” এমন অভিযোগ অস্বীকার করে বাসুদেববাবু বলেন, “একশো দিনের কাজ হয় জব কার্ডের মাধ্যমে। যাঁরা কাজ করেন তাঁদের টাকা দেওয়া হয় ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। বাহার মিথ্যে কথা বলছেন।’’
ঘটনার পরে তৃণমূলের বড়ঞা উত্তর ব্লকের সভাপতি গোলাম মুর্শিদ বলেন, “তৃণমূল এ ধরনের কাজ সমর্থন করে না। সরকারি কর্মীকে মারধর করা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিষয়টি জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বকে জানাব।” জেলা তৃণমূলের সভাপতি মান্নান হোসেন বলেন, ‘‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে দলীয় ভাবে ওই সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy