Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

টানা বৃষ্টি, হয়রানি জমা জলে

টানা বৃষ্টিতে জলবন্দি রানাঘাট শহরের ১, ৪, ১৪ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে গত তিন দিন ধরে জল জমে রয়েছে। কয়েকটি পরিবার জলবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। বুধবারও শহরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। জল নামা দূরের কথা, আরও বেড়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে জলবন্দি পরিবারগুলি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
করিমপুর শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০১৭ ০২:৩৪
Share: Save:

জল থই থই মেঝে। শয্যায় বসা রোগীর সচেতন দৃষ্টি সে দিকেই। সাপ ঢুকে পড়ল নাতো! করিমপুর গ্রামীণ হাসপাতালে।

প্রস্তুতি সারা। অপেক্ষা ছিল শুধু ‘কিক-অফ’-এর। কিন্তু ম্যাচ হবে কোথায়? জল থই থই মাঠে ধুয়ে গেল সাব জুনিয়র লিগ। নবদ্বীপ শহরে।

নদী ছাপিয়ে বন্যা এখনও হয়নি। কিন্তু গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে জেলার বেশ কিছু এলাকায় নাজেহাল হতে হচ্ছে মানুষকে। বুধবার জেলার কয়েকটি এলাকায় মুষলধারে বৃষ্টিতে সিদুঁরে মেঘ দেখছে জলবন্দি জনতা। ভাগীরথী, জলঙ্গি, ভৈরবী-সহ জেলার অন্য নদী-খাল-বিলে জল বাড়ছে। বুধবারও বেশ কিছু এলাকায় তুমুল বৃষ্টির জন্য এ দিনও স্কুল ছুটি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে করিমপুর হাসপাতালে নানা ওয়ার্ডের মেঝেতে জল জমে গিয়েছে। জল জমেছে লেবার রুম এবং নার্সদের ঘরে। কোথাও হাঁটু জল কোথাও গোড়ালি জল ভেঙে যাতায়াত করতে হচ্ছে। গত কয়েক দিনে বৃষ্টির না থামায় হাসপাতালের জল নামেনি। হাসপাতালের মেঝেতে বহু রোগী ছিলেন। তাদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়। শুধু জল ভেঙে যাতায়ায় নয়, জল জমে থাকলে বিপদ পদেপদে। এ কথা বলছেন হাসপাতাল কর্মীরা। জল জমে থাকলে হাসপাতালে সাপ ঢুকে পড়ে। পাশাপাশি হাসপাতালের দেওয়াল ভিজে বিদ্যুতের তারে শর্ট সার্কিটের আশঙ্কাও থাকছে। হাসপাতাল সংলগ্ন রামকৃষ্ণপল্লির সিংহভাগ এলাকায় জল জমে রয়েছে।

টানা বৃষ্টিতে জলবন্দি রানাঘাট শহরের ১, ৪, ১৪ এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে গত তিন দিন ধরে জল জমে রয়েছে। কয়েকটি পরিবার জলবন্দি অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। বুধবারও শহরে মুষলধারে বৃষ্টি হয়। জল নামা দূরের কথা, আরও বেড়ে যায়। আতঙ্কিত হয়ে পড়ে জলবন্দি পরিবারগুলি। উপায়ান্তর না দেখে ১ নম্বর ওয়ার্ডের তিনটি পরিবারকে এক নির্মীয়মাণ আবাসনে স্থানান্তরিত করা হয়ে। ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েকটি মাটির বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গত সাত দিন ধরে বৃষ্টির বিরাম নেই নবদ্বীপে। মঙ্গলবার রাতে বৃষ্টি কিছুটা ধরলেও বুধবার সকাল থেকে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হয়। গঙ্গার জল বিপদসীমার নীচে বইলেও বৃষ্টিতে ভেসে যায় পথ-ঘাট। পোড়ামাতলা, গানতলা, রাধাবাজার, বুড়োশিবতলা, পাঁচমাথার মোড়ে প্রচুর জল জমে যায়। প্রাচীন মায়াপুর, প্রতাপনগর, রানীরচরা-সহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা জলবন্দি হয়ে পড়েন।

তবে বৃষ্টিতে ধুয়ে যেতে বসেছে নবদ্বীপের ফুটবল। বুধবার থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল সাব জুনিয়র ফুটবলের সুপার লিগের খেলা। কিন্তু বুধবারের বৃষ্টিতে মাঠের দু’ধারে জল জমে যাওয়ায় আপাতত খেলা স্থগিত ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে নবদ্বীপ আঞ্চলিক ক্রীড়া সংস্থা। এমন পরিস্থিতিতে ঝুঁকি নিতে চাইছে না জেলা প্রশাসন। ২২ হাজার ত্রিপল মজুত করা হয়। ১০ হাজার ত্রিপল ১৭টি ব্লকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মজুত রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল, শাড়ি, ধুতি ও শিশুদের পোশাক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE