কোভিড হাসপাতালে ডিউটির জন্য চিকিৎসকদের টানা ৯৬ দিনের ডিউটি রস্টার তৈরি করা হয়েছে। তাও আবার মাত্র ১৬ জন চিকিৎককে নিয়ে। জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের এ হেন পদক্ষেপে বিতর্ক তৈরি হয়েছে জেলার চিকিৎসক মহলে। বিশেষ করে যে চিকিৎসকদের এই ডিউটি রস্টারে রাখা হয়েছে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, এ ভাবে দিনের পর দিন কোভিড হাসপাতালে ডিউটি করতে থাকলে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি তৈরি হতে বাধ্য। তাতে আখেরে ক্ষতি হচ্ছেন কোভিড আক্রান্তদেরই। তাদের অভিযোগ, এই ডিউটি রস্টার তৈরির ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ করা হয়েছে। কারণ একটা বিরাট অংশের চিকিৎসদের কোভিড ডিউটি থেকে দুরে রেখে পুরোটাই জুনিয়রদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নদিয়া জেলায় দু’টি কোভিড হাসপাতাল। একটি কৃষ্ণনগরের গ্লোকাল, অন্যটি কল্যাণীর এনএসএস যক্ষ্মা হাসপাতাল। সম্প্রতি কার্নিভাল থেকে কোভিড হাসপাতালটি সরিয়ে এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। দু’টি হাসপাতালেরই চিকিৎসকদের জন্য দিনে চারটি করে শিফট করা হয়েছে। রস্টার অনুযায়ী প্রতিটি শিফটে থাকছেন দু’জন করে চিকিৎসক। অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টার জন্য আট জন করে চিকিৎসক প্রয়োজন হচ্ছে। রস্টার অনুযায়ী এই আট জন টানা ১২ দিন করে ডিউটি করছেন। ১২ দিন পর তাঁরা চলে যাচ্ছেন কোয়রান্টিনে। তাঁদের পরিবর্তে ডিউটি বুঝে নিচ্ছেন আরও আট জন। ১২ দিন পর আবার ফিরে আসবেন কোয়রান্টিনে থাকা আগের আট জন।
এ ভাবে ৪ নম্ভেম্বর থেকে ৯৬ দিনের ডিউটি রস্টার করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। দু’টি হাসপাতালের ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। এ ভাবে মুষ্টিমেয় কয়েক জন জুনিয়র চিকিৎসককে টানা ডিউটি দেওয়ায় তাঁদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। কল্যাণীর কোভিড হাসপাতালে কর্তব্যরত এক চিকিৎসকের কথায়, “শোনা যাচ্ছে এই ৯৬ দিন শেষ হলে আমাদের নাকি আবার ৯৬ দিনের ডিউটি রস্টারের মধ্যে রাখা হবে। এমনটা হলে পাগল হয়ে যেতে হবে।” তাঁর কথায়, “কিছু চিকিৎসককে কোভিড ডিউটি থেকে পুরোপুরি দূরে রেখে আমাদের মত কয়েক জনের উপরে পুরোটা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে।” তিনি বলেন, “এনএসএস কোভিড হাসপাতালের জন্য স্বাস্থ্য ভবন থেকে ২২ জন চিকিৎসক পাঠানো হয়েছে। অথচ তাঁদের অনেককেই এই কোভিড হাসপাতালে ডিউটি দেওয়া হয়নি।”