জটলা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র
কয়েক দিন আগে শমসেরগঞ্জে সচেতনতার নজির দেখিয়েছিলেন একদল বাসিন্দা। কলকাতা থেকে সাইকেলে ফেরা ওই যুবকেরা গ্রামবাসীদের অনুরোধ মেনে সরকারি হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরই গ্রামে পা দিয়েছিলেন। অথচ, ঠিক তার উল্টো নজির হরিহরপাড়ায়।
ভিন রাজ্য থেকে সদ্য বাড়ি ফিরেছিলেন রামপাড়া-বেদেপাড়ার ১১ জন শ্রমিক। মাস চারেক আগে তাঁরা উত্তরপ্রদেশে গিয়েছিলেন রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করতে। মঙ্গলবার রাতে তাঁরা গ্রামে ফেরেন। করোনার সংক্রমণ রোজই বেড়ে চলায় ভিন রাজ্য থেকে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকার পরামর্শ দিচ্ছে প্রশাসন। অথচ অভিযোগ, বুধবার সকাল থেকেই ওই যুবকেরা গ্রামে ঘোরাঘুরি শুরু করে দেন। এ নিয়ে কয়েক জন গ্রামবাসী প্রতিবাদ করলে ওই যুবকেরা তাঁদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।
রামপাড়ার এক গ্রামবাসী এদিন বলেন, ‘‘বাইরের রাজ্য থেকে ওরা সদ্য এসেছে। প্রশাসনের পরামর্শমতো ওদের ১৪ দিন ঘরে থাকার কথা বলতে গিয়েছিলাম। কিন্তু কে, কার কথা শোনে। বুঝিয়েসুজিয়েও কাজ না হওয়ায় গ্রামবাসীদের একাংশ ওদের বাড়ির সামনে কিছুক্ষণ বিক্ষোভও দেখান।’’ যদিও ঘরফেরত শ্রমিকদের সেই এক রা— ‘‘আমরা তো দিব্যি সুস্থ আছি। এতদিন পর গ্রামে ফিরলাম। ওদের কথা শুনে খামোখা ঘরে বসে কাটাতে হবে নাকি!’’ কামাল মাল নামে এক শ্রমিকের যুক্তি, ‘‘প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম। এমনিতে বাড়ি থেকে মোটে বেরোচ্ছি না।’’ স্থানীয় বাসিন্দা মতিকুল ইসলাম এদিন বলেন, ‘‘গ্রামে ফেরার পর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার কথা ওদের। কিন্তু তা না করেই ওরা পাড়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল। যার জন্যই গ্রামবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। এ নিয়ে আজ অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ওদের বাড়িতে গিয়ে।’’ পরে গ্রামবাসীরা খবর দেন স্বাস্থ্য দফতরে। তারপর স্বাস্থ্যকর্মীরা গ্রামে গিয়ে ওই যুবকদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।’’ হরিহরপাড়ার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক আজিজুল লস্কর বলেন, ‘‘ওই গ্রামে আশাকর্মীরা গিয়েছিলেন। ওই যুবকদের ১৪ দিন ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করা হবে।’’ তবে গ্রামবাসীদের রোষের মুখে পড়ে ওই যুবকেরা আপাতত বাড়ির বাইরে বেরোবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছেন। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের ধারণা, নজরদারি শিথিল হলেই তাঁরা আবার বেরোবেন। হরিহরপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বনমালী সরকার বলেন, ‘‘যতই ঘরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হোক, ওরা ফের বাইরে ঘুরে বেড়াবে। সেই কারণে ওদের অন্যত্র রাখার বন্দোবস্ত করার কথা ভাবা হচ্ছে।’ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের এলাকার কোনও স্কুলে রাখার পরিকল্পনা চলছে বলে খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy