Advertisement
০২ মে ২০২৪

একই গাছে পাশাপাশি মিলল যুগলের ঝুলন্ত দেহ

যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মৃতেরা হলেন অর্ঘ্য সাহা (২২) এবং প্রীতি চক্রবর্তী (২১)। সোমবার সকালে নদিয়ার ধানতলা থানার পানিখালি মাজদিয়া গ্রামে অর্ঘ্যের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি গাছে পাশাপাশি ওই দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রীতির বাড়ি চাকদহের কে বি এম সলুয়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনেই কলেজ পড়ুয়া।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০২:২০
Share: Save:

যুগলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মৃতেরা হলেন অর্ঘ্য সাহা (২২) এবং প্রীতি চক্রবর্তী (২১)। সোমবার সকালে নদিয়ার ধানতলা থানার পানিখালি মাজদিয়া গ্রামে অর্ঘ্যের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি গাছে পাশাপাশি ওই দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। প্রীতির বাড়ি চাকদহের কে বি এম সলুয়া এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনেই কলেজ পড়ুয়া। অর্ঘ্য বগুলা শ্রীকৃষ্ণ কলেজের বিএ (সাধারণ) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র এবং প্রীতি চাকদহ কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। পুলিশ দু’জনের দেহ উদ্ধার করে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে ময়না তদন্তের জন্যে পাঠিয়েছে।
প্রীতির পরিজনেরা জানাচ্ছেন, উভয়ের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক এবং পরস্পরের বিয়েতে অর্ঘ্যের বাড়ির লোকেদের আপত্তি ছিল বলে তাঁদের অভিযোগ। সেই কারণেই প্রাপ্তবয়ষ্ক দুই যুবক-যুবতী আত্মঘাতী হয়েছে বলে তাঁদের মত। অভিযোগ মানতে চাননি অর্ঘ্যের পরিজনেরা। তাঁদের বক্তব্য, ওদের বিয়ের বিষয়ে কখনও কেউ কিছু বলেনি। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। এখনও অবধি কোনও সুইসাইডাল নোট উদ্ধার হয়নি। কোনও পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেনি।
রানাঘাট ২ ব্লকের যুগোলকিশোর গ্রাম পঞ্চায়েতের পানিখালি মাজদিয়া গ্রামে বাড়ি অর্ঘ্যদের। এক ভাই, দুই বোন। বোনেদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পানিখালি বাজারে তাঁর বাবার চা এবং পানীয় জলের দোকান রয়েছে। চাকদহ শহরের সলুয়া এলাকায় বাড়ি প্রীতিদের। সে বাবা মায়ের একমাত্র মেয়ে। অর্ঘ্যদের বাড়ির পাশে শিবপুর এলাকায় প্রীতিদের মামার বাড়ি। সেই সুবাদে ওই এলাকায় প্রীতির যাওয়া আসা ছিল। সেই সূত্রেরই উভয়ের আলাপ। পরে তা ভালবাসার পরিণত হয়। বছর দু’য়েক থেকে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে বলে দু’টি পরিবারই স্বীকার করেছে।

প্রীতির মামা সুকুমার শীল বলেন, ‘‘ভাগ্নির সঙ্গে অর্ঘ্যের ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। সেই টানে এখানে আসত। রবিবার সন্ধ্যায় সে পানিখালি এসেছিল। আমাদের বাড়িতে যায়নি।’’ তাঁর দাবি, তিনি আগে অর্ঘ্যের বাবার সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন। ওর বাবা বিয়েতে রাজি হননি। সুকুমারবাবু বলেন, ‘‘আগামী ৩১ জুলাই ভাগ্নির বিয়ে ঠিক হয়েছিল। তার আগে ও এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারিনি।’’ প্রীতির পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার বিকেলে সে মাকে জানায় এক বান্ধবীর বাড়িতে যাচ্ছে। সেখানে আইবুড়ো ভাত খাবে। রাতে আর বাড়ি ফিরবে না। রাতে প্রীতির মোবাইলে আর যোগাযোগ করা যায়নি। সকালে দু’জনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

অর্ঘ্যের বাবা দিলীপ সাহার অবশ্য দাবি, ‘‘বছর দেড়েক আগে একদিন কয়েক জন এসে বলেছিলেন আমার ছেলের জন্য নাকি তাঁদের মেয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়েছে। সে অসুস্থ। আমি তাঁদের বলেছিলাম, আপনারা আগে মেয়েকে সুস্থ করুন। পরে ওদের বিষয়টি নিশ্চয়ই ভেবে দেখব।’’ তারপর আর কেউ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেননি বলে দাবি করেছেন অর্ঘ্যের বাবা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ranaghat suicide Priti Chakrabarty
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE