রোগের প্রকোপ সামাল দিতে গেলে আগে রোগ চিহ্নিত হওয়া জরুরি। সেই মতো চিকিৎসা শুরু করা এবং জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা থাকলে রোগীকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা করা— এই হল সাধারণ বিধি।
নদিয়া আর মুর্শিদাবাদ জেলায় এর কতটা হয়েছে ডেঙ্গির ক্ষেত্রে?
ডেঙ্গি শনাক্ত করতে প্রাথমিক ভাবে জ্বরের রোগীর রক্তপরীক্ষা করে দেখা হয় ‘এনএস ওয়ান অ্যান্টিজেন পজিটিভ’ কি না। কিন্তু ডেঙ্গি নিশ্চিত করতে ‘ম্যাক এলাইজা’ পরীক্ষা করা জরুরি। তা কতটা হচ্ছে?
নদিয়া জেলায় মাত্র দু’টি সরকারি হাসপাতালে এলাইজা পরীক্ষা হয় — শক্তিনগরে জেলা হাসপাতাল ও কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল। শক্তিনগরের প্যাথলজি বিভাগ সূত্রের খবর, দিনে গড়ে শ’খানেক এলাইজা পরীক্ষা হচ্ছে। গড়ে ৭-৮ জনের ডেঙ্গি ধরা পড়ছে। কল্যাণীর হাসপাতালে এ পর্যন্ত প্রায় চোদ্দোশো রোগীর এলাইজা পরীক্ষা হয়েছে, প্রায় সাড়ে তিনশো জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালেও অবস্থাটা প্রায় একই।
ডেঙ্গি ধরা পড়লে ওষুধের সঙ্গে রক্তের প্লেটলেট দেওয়ার দরকার হতে পারে। দুই জেলার মধ্যে এক মাত্র জেএনএম হাসপাতালেই রক্তের উপাদান পৃথক করার যন্ত্র আছে। ফলে, রোগীর চাপ এসে পড়ছে। গত এক মাসে ওই হাসপাতালে ১৪২ ইউনিট প্লেটলেট পৃথগীকরণ করা হয়েছে। কিন্তু তা ইতিমধ্যে শেষ। শুক্রবার শেষ ২২ ইউনিট প্লেটলেট দিয়ে দেওয়া হয়।
শনিবার কোনও রক্তদান শিবির না থাকায় রক্ত মেলেনি, প্লেটলেট পৃথক করাও যায় নি। যাঁরা প্লেটলেট নিতে আসছেন, তাঁদের বলা হচ্ছে ‘ডোনার’ এনে রক্ত দিতে, তা থেকেই প্লেটলেট পৃথক করে দেওয়া হবে। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের সুপার শচীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, “আমাদের কাছে প্লেটলেট নেই। তা প্রয়োজন হওয়ার আগেই রোগীকে জেএনএম বা কলকাতার হাসপাতালে রেফার করে দিচ্ছি।” একই কারণে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল থেকেও ৮-১০ জনকে কলকাতায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
একই অব্যবস্থা ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ নিয়েও। মশাবাহিত ডেঙ্গি যেহেতু এক জনের থেকে অন্য জনের রক্তে ছড়াতে পারে, তাই রোগীদের পৃথক রাখাই নিয়ম। কিন্তু তা প্রায় কোথাও হচ্ছে না। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গির জন্য আলাদা কোনও ওয়ার্ড নেই। মহিলা ও পুরুষ মেডিসিন বিভাগের পাশে দু’টি আলাদা ঘরে ডেঙ্গি রোগীদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু বেড মাত্র ২০টি করে। ফলে, অন্যদের সঙ্গেই রাখতে হচ্ছে ডেঙ্গি রোগীদের। পুরনো আইসোলেশন ওয়ার্ড সংস্কারের কাজ চলাতেই এই ব্যবস্থা বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
জেএনএম হাসপাতালেও কোনও স্থায়ী ‘আইসোলেশন ওয়ার্ড’ নেই। নেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালেও। তবে সেখানে তিনতলায় মহিলা ও পুরুষদের জন্য দু’টি আলাদা ঘরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৫টি করে মোট ৫০টি বেড রয়েছে। তা অবশ্য প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই অপ্রতুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy