E-Paper

র‌্যাগিং রুখতে চান বেঙ্গসরকার

শনিবার বহরমপুরের অদূরে বহিরগাছিতে একটি বেসরকারি বিদ্যালয় ও জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে র‍্যাগিং রুখতে আইনি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০৭
বহরমপুরের একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার ও হাই কোর্টের বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়। 

বহরমপুরের একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে ক্রিকেটের প্রাক্তন অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার ও হাই কোর্টের বিচারপতি আই পি মুখোপাধ্যায়।  ছবি: গৌতম প্রামাণিক

বহরমপুরে আইনি সচেতনতা শিবিরে এসে স্মৃতির সরণি বেয়ে বাংলার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা তুলে ধরলেন দেশের ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক দিলীপ বেঙ্গসরকার। শনিবার বহরমপুরের অদূরে বহিরগাছিতে একটি বেসরকারি বিদ্যালয় ও জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে র‍্যাগিং রুখতে আইনি সচেতনতা শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ বেঙ্গসরকার বলেন, ‘‘আমি কলকাতাকে উপভোগ করি। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে আমার টেস্ট ম্যাচের প্রথম শতরান করেছিলাম। সেটি ১৯৭৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে। সব সময় ইডেনে আমি ভাল রান করেছি। ১৯৮৭ সালে আমি যখন ভারতীয় ক্রিকেট দলের দলের অধিনায়ক ছিলাম, তখনও কলকাতায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলাম। আমি বাংলার খাবারকে, বাংলার মানুষ, বাংলার সংস্কৃতিকে ভালবাসি। এসব আমার হৃদয়ের কাছের।’’

এদিনের অনুষ্ঠানে দিলীপ বেঙ্গসরকার ছাড়াও রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তথা হাই কোর্টের বিচারপতি আই.পি. মুখোপাধ্যায়, জেলা জজ ভাস্কর ভট্টাচার্য, জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব, জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের সচিব অদিতি ঘোষ উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে ওই বেসরকারি স্কুল ছাড়াও জেলার বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের পড়ুয়ারা ও অভিভাবকেরা উপস্থিত হয়েছিলেন। সেখানে কলকাতা হাইকোর্টের দুই আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় ও জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় র‍্যাগিং রুখতে আইনি দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করেন। প্রশ্নোত্তর পর্বে পড়ুয়াদের উত্তরও দেন তাঁরা।

এ দিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে দিলীপ বেঙ্গসরকার বলেন, ‘‘আমি যখন ভারতীয় ক্রিকেট দলে ঢুকি তখন আমার বয়স ১৯ বছর। দলের সব থেকে ছোট ছিলাম। আমাদের অধিনায়ক ছিলেন বিষেন সিংহ বেদী। প্রসন্ন, চন্দ্রশেখর, সুনীল গাওস্করদের মতো খেলোয়াড়রা সেই দলে ছিলেন। তাঁরা আমাকে ভায়ের মতো দেখতেন। সেটা আমার আত্মবিশ্বাস বাড়াতে সাহায্য করেছিল। যখন আমি ভারতের অধিনায়ক তখন ১৫ বছর বয়সি সচিন তেন্ডুলকরকে পেয়েছিলাম। তাঁকে ছোট ভাইয়ের মতো দেখতাম, আস্থা বাড়াতে উৎসাহ দিতাম। আজ বিশ্ব একটা এমন ক্রিকেটার পেয়েছে। আমি অনুভব করি খেলা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

দিলীপ বেঙ্গসরকার র‌্যাগিং রুখতেও জোর সওয়াল করেন। র‌্যাগিংয়ের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে জোর দেন উপস্থিত সবাই।

তিনি বলেন, ‘‘র‍্যাগিং ভাল নয়। র‍্যাগিং বড় ক্ষতি করে সমাজের। সে জন্য সমাজ, স্কুল কলেজ সকলকে এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’’

তিনি জানান, ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের অধিনায়কত্বে ভারত বিশ্বকাপ ক্রিকেট জিতেছিল। ইংল্যান্ড ভেবেছিল ভারতীয় দল ব্রিটেনে ঘুরতে গিয়েছিল। কিন্তু ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের মধ্যে অটুট বন্ধন ছিল। যার জেরে শেষ পর্যন্ত কাপ জয় করে ফিরেছিল ভারতীয় দল।’’

ভারতীয় দলে বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মারা রয়েছে। অনেকেই নতুন মুখের কথা বলছেন। আপনি কী বলবেন?

এই প্রশ্নের উত্তরে বেঙ্গসরকার বলেন, ‘‘নির্বাচকদের জিজ্ঞেস করুন। আমি এখন নির্বাচক নই।’’

এদিন পুলিশ পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘আমার চাকরি জীবনে গত ১০ বছরে দেখেছি র‍্যাগিং হলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে জানায় না। র‍্যাগিং রুখতে আইন আছে। অনুরোধ করব। র‍্যাগিং হলে জানাও।’’

কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী বিভাস বলেন, ‘‘২০১৬ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৪০ শতাংশ র‍্যাগিং হয়। কিন্তু সেক্ষেত্রে ৮.৬ শতাংশ রিপোর্ট হচ্ছে। তাই র‍্যাগিং হলে অবশ্য নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাও।’’

ভার্চুয়াল জগতেও র‍্যাগিং হয় বলে মন্তব্য করেছেন বিভাস। সমাজ মাধ্যম থেকে শুরু করে ফোনের মাধ্যমেও র‍্যাগিং হচ্ছে। সেটা বন্ধ করতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি আই.পি.মুখোপাধ্যায় র‍্যাগিং রুখতে সকলকে এগিয়ে আসার কথা বলেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Berhampore Dilip Vengsarkar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy