প্রতীকী চিত্র।
করোনা আবহে হাসপাতালে নাগাড়ে ডিউটি করার পরিপ্রেক্ষিতে চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীদের ছুটি সংক্রান্ত নিয়ম কিঞ্চিৎ শিথিল করেছিল স্বাস্থ্যভবন। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত-দশ দিন টানা ডিউটি করার পরিপ্রেক্ষিতে অনেককেই পরের সাত দিন বা তার বেশি সময় ছুটি দেওয়া হয়েছিল। মেডিক্য়াল কলেজের সুপার জানান, সেই সুযোগ নিয়েই স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ বিভিন্ন অজুহাতে সেই ছুটির মেয়াদ দীর্ঘায়িত করছিলেন।
সেই প্রবণতায় রাশ টানতে হাসপাতালের চিকিৎসক-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের নোটিস ধরালেন হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক। নোটিসে তিনি স্পষ্ট উল্লেখ করেছেন— করোনা কালে যে সমস্ত ছুটি মঞ্জুর করা হয়েছিল অবিলম্বে তা বাতিল করা হয়েছে। কোনও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীকে এর পর ছুটি নিতে হলে, তাঁকে মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে উপযুক্ত প্রমাণ দিতে হবে। তবেই সেই ছুটি মঞ্জুর হবে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে গত চার মাসের লকডাউন পর্বে অনেকেই অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে, বয়সজনিত কারণ তুলে ধরে, কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের পরেও কোয়ারিন্টিনে থাকায় এই নির্দেশ জারি করা হয়েছে। চলতি বছরের মার্চ মাসের শেষে কোভিড পরিস্থিতি শুরু হতেই চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ চিকিৎসা করা থেকে নানান অজুহাতে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন। অথচ সেই সময়েই তাঁদেরই সহকর্মীদের অনেকেই নিজেদের জীবন বাজি রেখে বহরমপুর মাতৃসদন কোভিড হাসাপাতালে রোগের সঙ্গে লড়াই করে গিয়েছেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশ অনুযায়ী কো-মর্বিডিটি রয়েছে কিংবা ৫০ বছরের উর্ধ্বে, চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সাত দিন ডিউটির পরে সাত দিন ছুটি বা দু’সপ্তাহ ডিউটির পর হোম আইসোলেশন থাকার নির্দেশ দিয়েছিল। পরে পাল্লা দিয়ে জেলায় করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকে। সেই সঙ্গে বাড়তে থাকে ছুটিতে থাকা চিকিৎসকের সংখ্যাও।
এ বার তাই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রশাসকেরা এই কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। বহরমপুর কোভিড হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে স্বাস্থ্যভবনের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি গোপাল কৃষ্ণ ঢালি এই সমস্য়ার কতা জানতে পারেন। তাঁর পরামর্শ মেনেই এই নোটিস জারি করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। হাসপাতালের সুপার শর্মিলা মল্লিক বলেন, “ছুটি নেওয়া কর্মীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কোভিড হাসপাতালের পরিষেবা দিতে অসুবিধা হচ্ছিল। সেই কারণেই রাজ্য সরকারের পরামর্শে এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিকিৎসকদের।” চিকিৎসক সংগঠনের পক্ষে রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “উন্নত কোভিড চিকিৎসা দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের সদর্থক ভূমিকা বাস্তবে রূপ দিতে সমস্ত চিকিৎসককে এগিয়ে আসতে হবে। সে দিক থেকে এই নির্দেশকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy